গেল কয়েকদিনের টানা বর্ষণ আর ভারতের ঢনে ময়মনসিংহের পর নেত্রকোনা প্লাবিত হয়েছে।
কংস পাড়ের নিচু এলাকাগুলোর বাড়ি ঘর সড়ক তলিয়ে গেছে। রেল লাইন ডুবে গেছে।
দুর্গাপুর, পুর্বধলা, কলমাকান্দা সদরের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ হয়ে পড়েছে পানিবন্দী।
রবিবার সকাল থেকে পুর্বধলা উপজেলায় নাটেরকোনা গ্রামে কালিদাস বাঁধের উপর দিয়ে পানি গড়িয়ে জারিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেরিবাঁধ হুমকির মুখে পড়ে।
সেটিকে রক্ষা করতে দুপুর থেকে ২৬ আনসার ব্যাটালিয়নের সদস্যরা স্থানীয়দের সহায়তায় মাটি কেটে ব্যাগে ভরে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করে।
এদিকে যে সব এলাকার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে সে সব বাড়ি ঘর ছেড়ে আসবাবপত্র বাঁধের উপর সড়কে নিয়ে আসে। দিনভর খাওয়া বাদ দিয়ে মানুষ আশ্রয়ের নিশ্চয়তার জন্য লড়াই করে।
কিন্তু সন্ধ্যার দিকে শেষ রক্ষা হয়নি।
বাঁধ ভেঙ্গে বিস্তর ফসলি জমি ডুবিয়ে দেয় কংসর পানি।
নাটেরকোনা গ্রামের যে সকল বাড়ি ঘরে কোমর পানি হয়ে পরেছে সেই পরিবারে আনসারের সদস্যরা ডিম খিচুরি রান্না করে পৌঁছে দিচ্ছে।
তবে স্থানীয় প্রশাসনের কোন লোকজন খোঁজ না নেয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন অনেকেই।
খোদেজা আক্তার জানান, সারাদিন আসবাবপত্র বাঁচাতে চেষ্টা করেছেন। পেটে খাবার পড়েনি। তাই খুদায় মুড়ি খাচ্ছেন।
এমন অবস্থা সকলের।
তারা জানান, কংস নদীটি সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল ঢাক ঢোল পিটিয়ে খনন কাজ উদ্বোধন করেছিল। এই পর্যন্তই শুনেছিলাম। কিন্তু কি করেছে আল্লায় জানে। আজকে নদীগুলোতে পানির ধারণ ক্ষমতা থাকলে এই অবস্থা হতো না।
যেই বেরিবাঁধ করেছে সেটা উঁচু করে করলে বা পানি যাওয়ার সকল গেট গুলো কাজের হলে এইদিন আসতো না।
এদিকে নেত্রকোনার পুর্বধলা ২৬ আনসার ব্যাটালিয়নের পরিচালক মোহাম্মদ আসলাম সিকদার জানান, তারা সকাল থেকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় বাধ রক্ষায় কাজ করছেন।
পাশাপাশি রাম্না করা খাবার দিচ্ছেন। প্রাথমিকভাবে ৫০ টি পরিবারের তালিকা করা হয়েছে।
আগামীকালও খাবারের ব্যবস্থা করা হবে। পাশাপাশি যাতে কোন দুর্ঘটনা না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখা হচ্ছে।
যেখানেই সহযোগিতা লাগছে সেখানেই ঝাপিয়ে পড়ছে সদস্যরা।