মাত্রাতিরিক্ত গুল (নেশা জাতীয় জর্দা) খেয়ে অজ্ঞান নারী। স্বজনরা নিয়ে আসেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। পরে হাসপাতালের বারান্দায় ফেলেই ওই নারীর পাকস্থলি ধৌত করেন চিকিৎসক। এরপর পুরো শরীরের ভেজা কাপড়ে অজ্ঞান অবস্থায় বারন্দায় ফেলে রাখা নারীকে দেখতে ভির জমান অন্যান্য রোগীরা। সেইসাথে দেখতে আসেন আশপাশের মানুষও। বিষয়টিকে অমানবিক চিকিৎসা বলে জানান সাধারণ মানুষও। ঘটনাটি নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।
জানা যায়, গত সোমবার পৌরশহরের উত্তর দৌলতপুরের বাবুল মিয়ার স্ত্রী নাসিমা (৩২) মাত্রাতিরিক্ত গুল খেয়ে অজ্ঞান হয়েছেন নাকি গুল খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন এ বিষয়টি কেউ নিশ্চিত করে বলতে পারেননি।
এমন একটি ঘটনা দেখে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রামেলা আক্তার বলেন, এভাবে জনসন্মুখে বারান্দায় ফেলে একজন নারীকে চিকিৎসা দেওয়া অমানবিক। পুরো শরীর ভেজা একটা নারীকে অসংখ্য মানুষ ভিড় করে দেখছে। এটা মধ্যযুগীয় চিকিৎসা ব্যবস্থাকেও হার মানিয়েছে। একটা পশুকেও আরও অনেক যত্ন করে চিকিৎসা করা হয় আজকাল।
রোগীর স্বজন মোজাহিদ মিয়া বলেন, হাসপাতালের বারান্দায় ফেলে ওয়াশ করার পরও কোন জায়গা দেয়নি। বিষয়টা দেখে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছি। এ কেমন চিকিৎসা ?
জরুরি বিভাগের চিকিৎসক উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার শাহজাহান সিরাজ জানান, হাসপাতালে এ ধরণের চিকিৎসার জন্য আলাদা কোন ওয়াশ রুম নেই। তাই বারান্দায়ই রেখে ওয়াশ করা হয়েছে। শঙ্কা কাটেনি বিধায় ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে। মেডিকেল এসিস্ট্যান্ট বিপ্লব হোসেন জানান, ‘এ ধরণের চিকিৎসার জন্য আলাদা একটি করার জন্য টিএইচও স্যারকে আমরা বলেছি।’
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সুবির সরকার বলেন, এ ধরণের চিকিৎসায় আলাদা রুম অবশ্যই দরকার। বারান্দায় এভাবে চিকিৎসা করা ঠিক নয়। তবে হাসপাতালের এক পাশে আলাদা একটি রুম করে দেওয়ার জন্য উপজেলা পরিষদে আবেদন জানানো হয়েছে।
খবর পেয়ে ছুটে যাওয়া মোহনগঞ্জ থানার এসআই হুমায়ন কবির বলেন, কি উদ্দেশ্যে ওই নারী গুল খেয়েছেন সেটা জানা যায়নি। সাথে থাকা লোকজনকে বলেছি কোনো অভিযোগ থাকলে যেন জানায়।
বিষয়টি শুনে ক্ষুব্ধ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আরিফুজ্জামান বলেন, এতটা অমানবিকতা কাম্য নয়। এতবড় হাসপাতালের কোন একটা কক্ষে এ চিকিৎসা করা সম্ভব ছিল। হাসপাতালের নানা অনিয়ম নিয়ে টিএইচওর উদাসীনতাকে দায়ী করেন তিনি।