নেত্রকোনায় প্রতিবারের ন্যায় এবারো হিমু পাঠক আড্ডার আয়োজনে প্রিয় কবির জন্মদিন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশের অন্যতম কবি হেলাল হাফিজের ৭৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে আড্ডায় আড্ডায় কবিতা পাঠ ও অভিব্যক্তি প্রকাশ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে হিমু পাঠক আড্ডা।
সোমবার (৭অক্টোবর) সন্ধ্যায় নেত্রকোনা শহরের মোক্তারপাড়া শিল্পকলা একাডেমির নজরুল মঞ্চে (টিনশেড ঘর) এই আয়োজন করা হয়।
হিমু পাঠক আড্ডার প্রতিষ্ঠাতা আলপনা বেগমের তত্বাবধানে সহকারী পরিচালক সৈয়দা নাজনীন সুলতানা সুইটির পরিচালনায় হিমু জুয়েল রানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে কবি সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী শিক্ষক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
এ বছর কবির জন্মদিনে কবির দুটো মৌলিক কবিতার বই উপহার দেয়া হয় সরকারি শিশু পরিবার (বালক)কে।
পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে আয়োজনে অংশ নিয়েছেন সাহিত্যপ্রেমি শিশু পরিবারের তত্বাবধায়ক তারেক হোসেন।
উপহারের বই তুলে দেন কবি বন্ধু লেখক গবেষক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা।
এর আগে শুরুতেই ওস্তাদ সুব্রত রায় টিটুর সহযোগিতায় আগুনের পরশমণি গান পরিবেশন করেন উপমা বিশ্বাস রিয়া। পরে কবির জীবনি পাঠ করেন নাজমা আলী।
আড্ডায় আড্ডায় কবিকে নিয়ে কবিতা পাঠ করেন এ প্রজন্মের ভালোবাসার কবি তানভীর জাহান চৌধুরী, কবি এনামুল হক পলাশ, কবি পহেলি দে, রোদসী চক্রবর্তী প্রমুখ।
কবির শৈশব কৈশোর যৌবন কবিতা এবং কবিত্ব নিয়ে আলোচনা করেছেন কবি বন্ধু হিমু পাঠক আড্ডার উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, অধ্যাপক ননী গোপাল সরকার, রাজুর বাজার কলেজিয়েট স্কুলের অধ্যক্ষ গোলাম মোস্তফা, সরকারি শিশু পরিবারের তত্বাবধায়ক মো. তারেক হোসেন, শিল্পকলা একাডেমির প্রদীপ চন্দ্র সরকার প্রমুখ।
কবির ৭৭ তম জন্মদিন উপলক্ষে কবিতা পাঠ ও আলোচনা শেষে হিমু পাঠক আড্ডার সদস্য খন্দ্য্রানা, মির্জা হৃদয় সাগর, আরফান রহমান অন্তর, মেহের নিগার রোদসী, প্রিয়াংকা বিশ্বাস সকল কবি ও আলোচক এবং অতিথিদের নিয়ে কেক কাটেন।
আয়োজকরা বলেন কবি সব সময় মানুষ জমাতে চেয়েছেন। তাই লিখেছেন সবাই জমায় টাকা আমি জমাই মানুষ। আর আমরাও কবিকে ভালোবাসার নিদর্শন হিসেবে তার উপস্থিত না থাকলেও গত কয়েক বছর ধরে এভাবে জন্মদিন উদযাপন করে যাচ্ছি। তিনি খুব বেশি অসুস্থ থাকায় ইচ্ছে থাকা স্বত্ত্বেও নেত্রকোনায় আসতে পারছেন না।
কোন একদিন হয়তো আমরা কবিকে নিজ জেলায় নিয়ে আসবো সরাসরি তরুণদের মুখোমুখি করতে। তিনি তারুণ্যের কবি তাই আমরা তরুণরা তার জন্মদিন পালন করার মধ্য দিয়ে একটা প্রাণ পাই।
কবির নিজ বিদ্যাপীঠ শহরের দত্ত স্কুলে হেলাল হাফিজ চত্বর নামকরণের জন্য কয়েকবার সেখানে জন্মদিন উদযাপন করা হয়েছে। সে সকল জন্মদিনে তৎকালীন প্রধান শিক্ষক, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতিও ঘোষণা করেছেন বিদ্যালয়ের করইতলা হেলাল হাফিজ চত্বর।
কিন্তু আজ অব্দি তারা সেটিকে বাস্তবে রূপ দিতে পারেনি কোন সংকীর্ণতায় তা আমরা বুঝতে পারছিনা বলে আক্ষেপ প্রকাশ করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সাংবাদিক আলপনা বেগম।
ঘটা করে প্রশাসনসহ আয়োজন করে এই ঘোষণা দেয়া হয়। আগামী প্রজন্ম যেন একজন হেলাল হাফিজকে উপলব্ধি করতে পারে। পড়তে পারে সেজন্যই।
অথচ সরকার পরিবর্তনের সাথে সাথে কবির জন্মদিন উদযাপনে স্কুলের অনান্তরিকতাই প্রকাশ পেয়েছে
যা অত্যন্ত দু:খ জনক।
কবি যুদ্ধে যেতে বলে দিয়েছিলেন তার নিষিদ্ধ সম্পাদকীয় কবিতায়। যুবকরা মিছিলে গেলো যুদ্ধও করলো দেশ স্বাধীন হলো।
কিন্তু কবিকে স্বাধীনতার স্বাধ গ্রহণকারী দলেদের কেউ স্বাধীনতা পদক দিয়ে যেতে পারলো না।
এটি বড়ই আফসোসের। এখন দেখছি কবির শৈশবের কৈশোরের বিদ্যাপীঠে কবির নামকরণে একটা গাছতলা থাকবে যাতে নতুন প্রজন্ম নামটা মুখে নিয়ে কবিকে স্মরণ করে দুটো কবিতা পড়ে সেটিও হবার নয়।
কবির বাবাও এই স্কুলের সকলের জনপ্রিয় হিসেবে পাগরি ওয়ালা স্যার নামেই পরিচিত ছিলেন।
এসকল নানা কারণেই ভক্ত অনুরাগী সকলেই হেলাল হাফিজ চত্বরের দাবী তুলেছিল কবির ৭৪ তম জন্মদিন পালনের বছরে।