৮ ডিসেম্বর নেত্রকোনা ট্রাজেডি দিবস। এ দিনে উদীচী ও শতদল গোষ্ঠীর কার্যালয়ের সামনে গত ২০০৫ সনে উগ্রবাদী গোষ্ঠির বোমা হামলায় উদীচী কর্মী হায়দার শেলিসহ মোট আটজন নিহত হন। অর্ধশতাধিক আহত হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর নিহতের স্মরণে ট্রাজেডি দিবসে ৫ থেকে ৩ মিনিট ‘স্তব্ধ নেত্রকোনা’ পালিত হয়েছে।
প্রতিবছরের ন্যায় নেত্রকোনা ট্রাজেডি উদযাপন পর্ষদের আয়োজনে জেলার সকল সাংস্কৃতিক সামজিক সংগঠনের অংশগ্রহণে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িকতা ও মৌলবাদের রিরুদ্ধে ৮ ডিসিম্বর সকাল ১০ টা ৪০ মিনিটে দুই মিনিট অজহর রোডের উদীচী কার্যারয়ের সামেন এ কর্মসূচী পালিত হবে। এর আগে কালোব্যজ ধারণ, ট্রাজেডি স্মৃতিস্তম্ভে পুস্পস্তবক অর্পন করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ২০০৫ সনে ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা মুক্ত দিবস উপলক্ষে সাংস্কৃতিক পরিবেশনার জন্য উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কার্যালয়ে সাংস্কৃতিক কর্মীরা নিজ নিজ কর্মস্থলে যাওয়ার পূর্বে রিহার্সাল করছিলেন। এসময় প্রথমে একটি ডামি বোমা ফেলে যায়। পরে সবাই রিহার্সাল রেখে সেটি দেখতে ভীড় জমালে পরবর্তীতে আত্মঘাতী বোমা চালায়।
ওই হামলায় উদীচীর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খাজা হায়দার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সুদীপ্তা পাল শেলি, ম্টোর মেকানিক যাদব দাস, রানী আক্তার, ভিক্ষুক জয়নাল, আফতাব উদ্দিন, রইছ মিয়া ও আত্মঘাতি কিশোর নিহত হন। আহত হয়েছিলেন অর্ধশতাধিক।
এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান ওরফে বাংলা ভাই, সামরিক শাখার প্রধান আতাউর রহমান সানি, জেএমবি কমান্ডার আসাদুজ্জামান, সালাউদ্দ্নি এবং ইউনূসসহ ৮ জনকে আসামী করে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে।
ইতিমধ্যে ঢাকা দ্রæত বিচার ট্র্যাইব্যুনাল আদালত-২ নেত্রকোনায় বোমা হামলা মামলার ৭ আসামীকে ফাঁসি ও বাংলা ভাইয়ের স্ত্রীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এরপর থেকে দিবসটিতে শহীদদের স্মরণে সন্ত্রাস, সাম্প্রদায়িক মৌলবাদের বিরুদ্ধে শহরবাসী একাট্টা হয়ে স্তব্ধ নেত্রকোনা পালন করে আসছে।
তবে স্থানীয়দের অভিযোগ এ ঘটনায় স্থানীয় ভাবে মদদদাতাদের গেল ১৯ বছরেও শনাক্ত করতে পারেনি। উদীচীর সহ সভাপতি হামলায় আহতদের একজন তুষার কান্তি রায় জানান, তদন্ত রিপোর্টে ত্রæটি ছিলো। পুলিশ রিপোর্টটি সন্তোষজনক হয়নি। সেখানে স্থানীয় দোসর কারা ছিলো সেটি বলা হয় নি। এমনকি তদন্তেও ওঠে আসেনি। এটি নতুন করে তদন্তের মাধ্যমে কারা স্থানীয়ভাবে জড়িত ছিলো, কাদের মদদপুষ্ট হয়ে এ হামলা চালিয়েছিলো আমরা সেটির দাবী জানাই। এই অন্তবর্তী সরকারের কাছে এটি আমাদের দাবী।