প্রতিবছরের ন্যায় নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ এবারে ২৭ তম বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসবের আয়োজন করছে। বরাবরের মতো শহরের মোক্তারপাড়া বকুলতলা চত্বরে পহেলা ফালগুন ১৪৩০ (১৪ ফেব্রæয়ারী) দিনব্যাপী এই সাহিত্য উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এই সাহিত্য উৎসবে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদান রাখায় জাতীয় পর্যায় থেকে একজনকে বাছাই করে দেয়া হয় খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার। এবার এই সাহিত্য পুরস্কার পাচ্ছেন বাংলা কবিতা ও গদ্যে অনন্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ গোলাম ফারুক খান।
সাহিত্য সমাজের উৎসব উদযাপন কমিটি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনটির সম্পাদক সাইফুল্লাহ এমরান। তিনি আরও জানান, লেখকও এই পুরস্কার গ্রহণে সম্মত হয়েছেন। আগামী ১৪ ফেব্রæয়ারী আনুষ্ঠানিকভাবে এই পুরস্কার প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ ১৯৯৭ সাল থেকে শুরু হয়ে বিগত ২৬টি সাহিত্য উৎসবে বাংলা সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য ইতোমধ্যে ২৮ জন কবি সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবিদেরকে এই খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করেছে।
পুরস্কার পেয়েছেন মুক্তচিন্তক লেখক, শিক্ষাবিদ, বুদ্ধিজীবি, প্রাবন্ধিক অধ্যাপক যতীন সরকার, কবি রফিক আজাদ, কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ, কবি হেলাল হাফিজ, কবি মোহাম্মদ রফিক, কবি নির্মলেন্দু গুণ, কথা সাহিত্যিক মুহাম্মদ জাফর ইকবাল, আধ্যাপক কবীর চৌধুরী, কবি মহাদেব সাহা, নাট্যকার সেলিম আল দীন, কথা সাহিত্যিক রাবেয়া খাতুন, লেখক ও শিল্পী বুলবন ওসমান, কবি আবু হাসান শাহরিয়ার, কথা সাহিত্যিক আনিসুল হক, কবি আলতাব হোসেন, কথা সাহিত্যিক নাসরিন জাহান, কথা সাহিত্যিক রাহাত খান, কবি নুরুল হক, কথা সাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কথা সাহিত্যিক জাকির তালুকদার, কবি আসাদ চৌধুরী, কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, কবি খালেদ মতিন, সাবেক শেখ হাসিনা বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি প্রাবন্ধিক অধ্যাপক রফিকউল্লাহ খান, কথা সাহিত্যিক মারুফুল ইসলাম, কথা সাহিত্যিক ধ্রæব এষ, কথা সাহিত্যিক পাপড়ি রহমান ও কবি শামীম রেজা।
আয়োজকরা জানান, এ বছরের সন্মাননাজন গোলাম ফারুক খান কবিতার সাম্প্রতিক দুঃসময়ে খুব দ্যুতিমান নির্জনতম এক কবি। সত্তুরের দশক থেকেই তিনি খুব সন্তর্পণে লিখে যাচ্ছেন।
কবি মুদ্রিত হরফে জ্ঞাপন করেন সাদা-কালোয় মেশানো মানবসত্তা ও শিল্পজগৎ। তাঁর কাছে কবিতা শুধু শব্দচাতুর্য বা ধ্বনিবিলাস নয়, সুদীর্ঘ অনুশীলনজাত জীবনধর্ম। অনুবাদ গদ্যেও তিনি অনন্যতার স্বাক্ষর রেখেছেন।
কবি গোলাম ফারুক খান নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার সিংহেরগাঁয়ে ১৯৫৮ সালের ১ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বিখ্যাত বাউল সাধক জালাল উদ্দিন খা’র দৌহিত্য। কবির পিতা খান মোহাম্মদ আবদুল হাকিম চল্লিশের দশকের প্রধানতম কবি। মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে নেত্রকোনায় এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করেছেন। পরবর্তীতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনের আর্থার ডি লিটল ম্যানেজমেন্ট এডুকেশান সেন্টারে পড়াশোনা করেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন)-এর সদস্য হিসেবে কর্মজীবনের একাংশ কাটিয়েছেন। বর্তমানে বিশ্ব ব্যাংকের শিক্ষা বিভাগে সিনিয়র কনসালট্যান্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।