নেত্রকোনায় বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসব ও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন কবি ও দৈনিক কালের কন্ঠ পত্রিকার সম্পাদক হাসান হাফিজ।
আজ শুক্রবার বিকালে শহরের মোক্তারপাড়া পাবলিক লাইব্রেরি প্রাঙ্গণ বকুল তলায় খালেকদাদ চৌধুরী মুক্তমঞ্চে সাহিত্য সমাজ আয়োজিত বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসবে এ পুরস্কার প্রদান করা হয়। পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে আয়োজন সংগঠনের সভাপতি ম কিবরিয়া চৌধুরী হেলিমের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস।
বিশেষ অতিথি ছিলেন খালেকদাদ চৌধুরীর পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরী, জেলা বিএনপির আহবায়ক বিশিষ্ট চিকিৎসক ডাক্তার আনোয়ারুল হক।
এছাড়াও অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাউল রশীদ উদ্দিন একাডেমির চেয়ারম্যান বিএনপি নেতা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা মেজর সিদ্দিক, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহবায়ক এস এম মনিরুজ্জামান দুদু।
অনুষ্ঠানে সন্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি ম কিবরিয়া চৌধুরী হেলিম ও সদস্য সচিব কবি তানভীর জাহান চৌধুরী। এর আগে অতিথিকে উত্তরীয় পড়িয়ে দেন কবি এনামূল হক পলাশ।
এদিকে বসন্তকালীন সাহিত্য উৎসবে সকাল থেকে বিভিন্ন বয়সের নারী পুরুষরা ভীড় জমায়।
সকালে বসন্ত বন্দনার মধ্য দিয়ে উৎসবের শুরু হয়।
ওই সময় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ডক্টর আব্দুল্লাহ আল মাসুম।
পরে বিকালে পুরস্কিত জন কবি হাসান হাফিজকে সন্মাননা পুরস্কার প্রদান করা হয়।
পুরস্কিতজন তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, জাতীয় বিভিন্ন পুরস্কার নিয়ে বিতর্ক থাকলেও খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার নিয়ে কোথাও কোন বিতর্ক নেই। সকল কিছুর উর্ধে। তাই এই পুরস্কার নিতে আনন্দে এসেছি। তিনি বলেন এখানে নানা গুণীজনের জন্ম।
এই নেত্রকোনাকে সংস্কৃতির রাজধানী ঘোষণা করা দরকার। খালেকদাদ চৌধুরী সংস্কৃতির সাথে সমার্থক একটি নাম।
এখানে লোকসংগীত হয়। লোকসংগীত লোকসাহিত্য হচ্ছে সভ্যতার ঐতিহ্যের আত্মা। এসব নিয়ে নেত্রকোনা আলাদা একটি অনন্য স্থান দখল করে আছে।
তিনি বলেন, এখানকার অনুষ্ঠানটি শিশু একাডেমির পাশেই হচ্ছে।
এই শিশু একাডেমির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। তিনি এসময় আরও বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা করেছেন ,আমি নিজ কানে শুনেছি। শেখা হাসিনার স্বামী ড. ওয়াজেদ মিয়া পত্রিকায় লিখেছিলেন। সুতরাং এখানে স্বাধীনতার ইতিহাস বিকৃত করার কোন সুযোগ নাই। জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলা হয়েছে, জোর করে কিন্তু প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করা যায় না। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, ৬১,৬২,৬৬,৬৯,৭০,৭১,৯০ ও সর্বশেষ ২৪ এর যে বিপ্লব হয়েছে সব কিন্তু এক সূত্রে গাঁথা। সবগুলো অধিকার আদায়ের লড়াই। এসকল লড়াইয়ে সাংবাদিকসহ ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা সন্মান।জুলাই আগষ্টে ফ্যাসিবাদের পতনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ বিনির্মানের যে সুযোগ আমরা পেয়েছি, সেই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্যে ষড়যন্ত্র চলছে। আমরা যেন সচেতন থাকি। মিডিয়া যেন সচেতন থাকি। আমাদের সীমান্তে রক্ত ঝরছে। সীমান্তে কাঁটাতারে কোন ফেলানীর লাশ আমরা দেখতে চাই না। ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা করেছে তার জন্য আমরা সন্মান করি। শ্রদ্ধা করি, আমরা কৃতজ্ঞ। কিন্তু কোনভাবেই আমরা আমাদের মাথা বিক্রি করে দিতে পারিনা। আমাদের সীমান্তে হত্যা বন্ধ করতে হবে। আমাদের বন্ধুত্ব হবে সমতার ভিত্তিতে, ন্যায্যতার ভিত্তিতে। আমরা সেই দিনের স্বপ্ন দেখি।
আলপনা বেগম , নেত্রকোনা ১৪/০২/২৫ ইং।