মো: হুমায়ুন কবির কেন্দুয়া :
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজনের বাধা ও হুমকির কারণে নিজের জমিতে বোরো আবাদ করতে পারছেন না শফিকুল ইসলাম নামে এক কৃষক।
ফলে কৃষক শফিকুলের এক একর ২৩ শতাংশ জমি পতিত রয়েছে এবং জমিতে রোপনের জন্য তৈরি করা বীজতলায় থাকা ধানের সব চারা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় নিরুপায় হয়ে ভুক্তভোগী ওই কৃষক ঘটনার সাথে জড়িত প্রতিপক্ষের ৪ জনের নামউল্লেখ করে কেন্দুয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন।
উপজেলার সান্দিকোনা ইউনিয়নের চরখিদিরপুর গ্রামে সরজমিনর গেলে প্রতিপক্ষের বাধার কারণে কৃষক শফিকুলের ফসলি জমি পতিত থাকার সত্যতা পাওয়া যায়।
অভিযোগের বরাতে জানা গেছে, চরখিদিরপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষক শফিকুল ইসলাম। তারই জ্ঞাতী গোষ্ঠীর লোক প্রতিবেশী আলী উসমান, আবু সায়েম সুজন, শাহজাহান ও আব্দুস সাত্তার। তারা সম্প্রতি শফিকুলের ফসলি জমি জোরে দখল করে নেওয়ার পাঁয়তারা করছিল।
এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে কয়েকবার দরবার সালিশেরও আয়োজন করেন শফিকুল। কিন্তু প্রতিপক্ষের লোকজন সালিশের সিদ্ধান্ত অমান্য করলে শফিকুল তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় লিখিত অভিযোগ করাসহ আদালতে মামলা দায়ের করেন।
এরপর থেকেই শফিকুলের সাথে প্রতিপক্ষের লোকজন চরম শত্রুতা শুরু করে। এরইমধ্যে গত ৬ জানুয়ারি সকালে কৃষক শফিকুল তার বসতবাড়ি সংলগ্ন ফসলি জমিতে চাষাবাদ করতে গেলে প্রতিপক্ষের আলী উসমান, আবু সায়েম সুজন, শাহজাহান ও আব্দুস সাত্তারসহ তাদের লোকজন বাধা দেয় এবং হুমকি দেয় যে, চাষাবাদ করতে হলে তাদেরকে এই জমি থেকে ১৩ শতাংশ লিখে দিতে হবে। আর তা না হলে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা তাদেরকে চাঁদা দিতে হবে। এ সময় তাদের এসব অনৈতিক দাবির প্রতিবাদ করলে তারা কৃষক শফিকুল ইসলামকে মারধর করতে উদ্যত হয়। পরে স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে তাকে রক্ষা করেন।
কৃষক শফিকুল ইসলাম বুধবার বিকেলে বলেন, প্রতিপক্ষের বাধা ও হুমকির কারণে আমার পৈত্রিক জমিতে চাষাবাদ করতে পারছি না। অথচ চাষাবাদের উপযুক্ত সময় চলে যাচ্ছে। ধানের চারা বীজতলায় নষ্ট হচ্ছে। তাদেরকে জমি অথবা টাকা না দিলে তারা আমাকে চাষাবাদ করতে দিবে না বলে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বেড়াচ্ছে। এ ঘটনার পরদিনই আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি। যদি জমিগুলো পতিত থাকে তাহলে আমার অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। তাই আমি যাতে আমার জমি সময় মতো চাষাবাদ করতে পারি- সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
প্রতিপক্ষের আলী উসমান বলেন, শফিকুলদের জমিতে ওয়ারিশান মূলে আমাদের অংশ রয়েছে। সে আমাদের পাওনা অংশ বুঝিয়ে দিচ্ছে না। তাই জমি চাষাবাদে বাধা দিয়েছি। এতো দিন সে আমাদের জমি ভোগ-দখল করেছে। আমাদের জমি তাদের নামে রেকর্ড করিয়ে নিয়েছে। কারণ, তখন আমরা বিষয়টা জানতাম না। পুরনো কাগজপত্র ঘেটে সব জানতে পেরেছি এবং তাদের নামে হওয়া রেকর্ড ভাঙার জন্যও মামলা করব।
এ বিষয়ে কেন্দুয়া থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাটি তদন্ত করে আইন অনুযায়ী দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।