নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক পৌরসভার মেয়র আসাদুল হক ভূঁইয়াকে আটক করেছে গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। একই সাথে কেন্দুয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বিপুলকেও আটক করেছে ডিবি পুলিশ। গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে তাদেরকে নেত্রকোনা জেলার সদর থানাধীন মদন বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে আটক করে। পরে গত বছরের ১৬ অক্টোবর নেত্রকোনা মডেল থানায় দায়ের করা ৫ আগস্টে সংগঠিত একটি বিস্ফোরক মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওই মামলায় ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে আরও ৩৫ থেকে ৪০ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে নেত্রকোনা সদরের কাইলাটী ইউনিয়নের অরঙ্গবাজ (বড় কাইলাটী) গ্রামের মৃত রজমান আলীর ছেলে কাইলাটি ইউনিয়ন বিএনপির সম্পাদক আব্দুল আজিজ (৫৬) বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছিলেন। যদিও এই মামলার এজাহার নামীয় কোন আসামী নন আটকরা।
পুলিশ জানায়, জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (পূর্ব) ওসি সাইদুর রহমানের নির্দেশে উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. ইকবাল হোসেন ও তার সঙ্গে থাকা ডিবি সদস্যরা গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে নজরদারী করে তাদেরকে আটক করে।
গোয়েন্দা পুলিশের পুর্ব (এসআই) উপ পরিদর্শক মো. ইকবাল হোসেন জানান, গত ৫ আগস্টে অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভীতি-সন্ত্রাস সৃষ্টির লক্ষ্যে সিএনজি ও গাড়ী ভাঙচুরসহ অগ্নি সংযোগ করে অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনা ঘটানো এবং যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অপরাধে দায়ের করা মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে দুজনকে আটকের পর আদালতে প্রেরণ করা হয়।
মডেল থানার মামলার এজাহারে জানা যায়, নেত্রকোনা সদর থানাধীন অরঙ্গবাজ সাকিন্থ জিনজিরা ব্রীজের দক্ষিণ পশ্চিম দিকে পাকা রাস্থার উপর (নেত্রকোনা টু কিশোরগঞ্জ রোড) অরঙ্গবাজ কাইলাটি নেত্রকোনা বাংলাদেশ ০৫ কি. মি দক্ষিণ র্পূদিক মৌজা নং২৪৮ (ছোট কাইলাটি) ইউপি নং কাইলাটি এলাকায় ঘটনা সংগঠিত হয়। ১৯৭৪ ধারা ১৫(৩) এর বিশেষ ক্ষমতা আইনে মারাত্মক অস্ত্রে-শস্ত্রে সজ্জিত হইয়া ভীতি ও সন্ত্রাস সৃষ্টি করত: সিএনজি য গাড়ী ভাঙ্চুরসহ অগ্নি সংযোগ করিয়া অন্তর্ঘাত মূলক ঘটনা ঘটানো এবং যান চলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করার অপরাধ মামলায় জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান (ভিপি লিটন) কে এক নং আসামী করে ১১৫ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত ৩৫০ থেকে ৪০ জনকে আসামী করে মামলাটি দায়ের করা হয় গেল বছরের ১৬ অক্টোবর। অদ্যবধি পর্যন্ত মামলার এজাহার নামীয় প্রধান আসামী ধরাছোঁয়ার বাইরে। দুই নং আসামী নেত্রকোনা পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম গ্রেফতার হলেও জামিনে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
গেয়ান্দো পুলিশের এস আই মো. ইকবাল হোসেন আরও জানান, “গোপনীয় তথ্যের ভিত্তিতে কেন্দুয়ার সাবেক পৌর মেয়র উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুল হক ভূঁইয়া এবং একই উপজেলার আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বিপুলকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই। তাদেরকে ৫ আগস্টে সংগঠিত একটি বিস্ফোরক মামলার সন্ধিগ্ধ আসামি হিসেবে বুধবার (২৩ এপ্রিল) আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিএনপির এক নেতা ও দুজন আইনজীবী জানান, ঘটনা কেন্দুয়ার। আসামীরাও কেন্দুয়াবাসী কিন্তু মামলার বাদী নেত্রকোনা সদরের। তার উপর এজাহার নামীয় নয়। যারা মামলা করেছেন বা মামলাটি গ্রহন করেছেন তারাও সতর্ক থাকলে ওই এলাকার কাউকে বাদী করতে পারতেন। মামলাটি কেন্দুয়া থানার হলেও গ্রহণযোগ্যতা থাকতো। এভাবে মামলা বাণিজ্য বন্ধ না হলে আওয়ামীলীগের অন্যায়ের সঠিক বিচার করাও বৃথা যেতে পারে বলে মনে করেন তারা।