হুমায়ুন কবির, কেন্দুয়া:
নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার নবাগত নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও এঁর বরণ উপলক্ষে মতবিনিময় সভার আয়োজন করেন কেন্দুয়ার দুইটি সাংবাদিক সংগঠন।
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধ মো. নুরুল ইসলামসহ অন্যআন্য অতিথি বৃন্দ। অনুষ্ঠানটি সোমবার বিকালে উপজেলা পরিষদের হল রুমে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নুরুল ইসলাম তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে এক পর্যায়ে কেন্দুয়ার বেতাই নদী নিয়ে মন্তব্য করেন।
উক্ত মন্তব্য এখন কেন্দুয়া উপজেলার বিভিন্ন নামের ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করা হয়েছে। যা নিয়ে ফেসবুক দুনিয়ায় চলছে নানান মন্তব্য।
কেন্দুয়া উপজেলা শাখার মানবাধিকার কর্মী শাহ আলী তৌফিক রিপন নামের ফেসবুক আইডির লেখাগুলো হুবু হুবু দেয়া হলো। “বেতাই নদী খাল হলেই কি সমস্যা এটা নিয়ে এতো কথা বলার কি আছে” (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যাক্তি বলেন)
উপজেলা পরিষদ এর মিটিং এ সাংবাদিকদের উদ্দ্যেশ্যে বলা কেন্দুয়া উপজেলার একজন শীর্ষ জনপ্রতিনিধির মন্তব্য ছিলো এটা একটা উপজেলার কোন দায়িত্বশীল পদে থেকে কেউ যদি একটা অবৈধ কাজ কে বৈধতা দেয়ার কথা বলেন তাহলে সেই পদে থাকার যোগ্যতা কি আর তার থাকে। বেতাই নদী কে বেতাই খাল দেখিয়ে প্রযেক্ট বানিয়ে নামকা ওয়াস্তে খনন করে ২.৮ কোটি টাকা আত্মসাতের পরেও তিনি বলছেন…..
বেতাই নদী না হয়ে খাল হয়েছো তো কি হয়েছে ? বিচার কাকে দেবেন আমারতো মনে হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেও তিনি এখনো রিয়েলাইজ করতেই পারেন নি যে তার আসলে দায়িত্বটা কি বা কাজ টা কি ? একটা বিশ্লেষণ করা যাক…..
বেতাই নদী থেকে খাল হলে কি সমস্যা হতে পারে? আচ্ছা আমি যদি সূর্যকে চাঁদ বলি তাতে কি সমস্যা? দুটোই তো আলো দেয় একটা বেশি আর একটা কম তাই বলে কি চাঁদের আলো সূর্যের মতো কখনো হবে ?
তেমনি বেতাই নদী খাল হওয়াতে দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়তো চোখে পরছে কিন্ত যে লক্ষ্যে এই খনন কার্যক্রম তা কি সঠিক লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে স্বক্ষম হয়েছে….
মাটির নীচে পানির লেয়ার যাচ্ছে নেমে আজ সকালেই টিভি তে দেখলাম মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রাকৃতিক পানি সংরক্ষণের উপর জোর দিতে বলেছেন।
এখন বলুন প্রাকৃতিক পানি সংরক্ষণের যদি প্রশ্ন আসে তাহলে খালের চাইতে নিশ্চয়ই নদীতে বেশি পানি সংরক্ষিত হবে যা চাষাবাদের কাজে ব্যাবহার করা যাবে…… তাহলে কি করে নদীর পরিবর্তে খাল খনন কার্যক্রম কে সাপোর্ট করছেন তিনি।
সরকারি দায়িত্বশীল পদে আসীন হলে সেই পদের ওজন অনুযায়ী মন্তব্য করা উচিৎ। সরকারের কোটি টাকা অপব্যয় করে আবার তার পক্ষেই সাফাই গাইলেন এটা ঠিক কি রকম হয়ে গেলো না।
মানবাধিকার কর্মী শাহ আলী তফিক রিপন নামের ফেসবুক আইডির মালিকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের জানান,কথা গুলি কেন্দুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলাম বলেছেন।
এ বিষয়ে জানতে মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নুরুল ইসলাম এঁর সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বেতাই নদীর বিষয় নিয়ে মন্তব্য করছেন বলে শিকার করে বলেন, আমি বেতাই নদীকে খাল বানানো হোক আমি কথা গুলি এমন ভাবে বলিনি। বলিছি আপনারা সাংবাদিক আপনার নিউজ লিখবেন কেন্দুয়ার উন্নয়নের স্বার্থে।
এমন কিছু নিউজ লিখবেনা যাতে করে কেন্দুয়ার উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হয়। তিনি আরো বলেন, বেতাই নদী নদীই থাকবে নদীকে খাল বানানো হোক এমন কথা আমি কোন দিন বলবনা বা বলিনি।
আমি বলেছি, কেন্দুয়ার বেশ কিছু নদী আছে যা এখন খালে পরিনত হয়েছে। এই নদী গুলি বা খাল গুলি খনন করা হলে কেন্দুয়া বাসি উপকৃত হবে।
আপনাদের নিউজের কারনে এখন বিদেশি সংস্থা “জাইকা” কেন্দুয়ায় কোন খাল বা নদী খনন প্রজেক্ট দিচ্ছেনা। তাই কিছু কিছু নিউজ আছে আপনারা কেন্দুয়ার উন্নয়নের স্বার্থে লিখবেন। তিনি আরো বলেন, আমার এই বক্তব্য বুঝতে না পেরে, ঘুড়িয়ে পেছিয়ে আমাকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।
উল্লেখ’ গত বছর কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইল বাড়ি আমতরা ইউনিয়নের বেতাই নদীকে খান দেখিয়ে একটি মহল বেদেশি সংস্থা জাইকা থেকে ২ কোটি ৮ লক্ষ টাকা বরাদ্দ এনে খনন করেন।
পারে বিষয়টি নিয়ে এলাকার বেশ কয়েকটি সংগঠন নদীকে কেন খাল দেখিয়ে খনন করা হয়েছে। তা নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করে। পরে বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যামে নিউজ প্রচার হয়। পরে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসকের নির্দেশ মতে নদী তীরবর্তী এলাকায় কেন্দুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় লোকজন এবং সংবাদকর্মীদের উপস্থিতিতে বেতাই নদী খাল নয় বলে সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে।