চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় পাঠানো ২৮ লাখ টাকার ইলিশ মাছ পাওয়া গেল নেত্রকোনা জেলার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দায়। এ ঘটনায় কলমাকান্দা উপজেলার সিধলী তদন্ত কেন্দ্রের (ফাঁড়ি) পুলিশ গাড়ি চালক হাসান মিয়াকে আটক করে।
বুধবার ভোরে উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নের সিধলী বিষমপুর এলাকা থেকে আটক করলেও বিকালে নেত্রকোনা জেলা পুলিশের অফিসিয়াল ফেইসবুক পেইজে পোস্ট করে এ তথ্য জানানো হয়। আটক হাসান মিয়া কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরের গন্মানপুরুরা গ্রামের আব্দুল মোতালেবের ছেলে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুধবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে প্লাস্টিক টেপ পেপারে মোড়ানো বেশকিছু ককশিট বক্সের সন্ধান পায় ফাঁড়ির পুলিশ। পরে ওই গ্রামের হক মিয়ার বাড়িতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ বাক্সগুলো জব্দ করে। এ সময় বক্সগুলো খুলে প্রতিটি বক্সেই ইলিশ মাছ পাওয়া যায়।
পরে ওই বাড়িতে অবস্থানরত স্থানীয় এক নারীকে জিজ্ঞাসাবাদে একপর্যায়ে মাছগুলো হাসান মিয়ার বলে জানা যায়। পরে মোবাইল প্রযুক্তির মাধ্যমে অভিযান চালিয়ে বিষমপুর গ্রামের তাহের মিয়ার বাড়ির পিছন থেকে হাসানকে আটক করে পুলিশ।
এরপর হাসানের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মোট ৫৬ টি ককশিট বক্সে ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকার ইলিশ রয়েছে বলে হাসান পুলিশকে জানায়।
পুলিশ সূত্রে আরো জানা গেছে, গত সোমবার রাতে চট্টগ্রামের একটি মাছের আড়ত থেকে ইলিশ মাছের একটি চালান নিয়ে যাত্রাবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন গাড়ি চালক হাসান মিয়া। পথে হাসানের সহযোগী শান্ত মিয়া, হক মিয়া, তাহের মিয়ার সাথে মোবাইলে যোগাযোগ করে মাছের চালান চুরির পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী মাছের চালান যাত্রাবাড়ীর পরিবর্তে গাজীপুরে এসে গাড়ি পরিবর্তন করে হাসান মাছগুলো নিয়ে চলে আসেন সীমান্তবর্তী উপজেলা কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে তাহের মিয়ার বাড়িতে। রাতের আঁধারে বাড়ির পাশে মাছের বক্সগুলো নীরবে রেখে দেন। ভোরে খবর পেয়ে পুলিশ মাছের বক্সগুলো জব্দ করে।
জব্দকৃত মাছের বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ২৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা বলে জানায় পুলিশ। সিধলী তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মো এনামুল হক সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষমপুর গ্রামে কিছু সন্দেহজনক ককশিটে বক্সের সন্ধান পাই।
পরে ওই গ্রামে অভিযান চালিয়ে বাক্স গুলো জব্দ করে তার ভিতরে ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে। পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় হাসান মিয়া নামে এক গাড়ি চালক আটক করি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে এক পর্যায়ে জানায় মাছগুলো তিনি চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পৌঁছে দেওয়ার কথা থাকলেও মাছের চালান তিনি কলমাকান্দার বিষমপুর গ্রামে নিয়ে আসেন। আমরা ইতিমধ্যে মাছের যে প্রকৃত মালিকের সাথে কথা বলেছি।
অভিযুক্ত হাসান মিয়া নিয়মিতই মাছের চালান নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় যাতায়াত করতেন। এরই মাঝে তিনি মাছগুলি চুরির পরিকল্পনা করেন।
তিনি আরো জানান, আটককৃত হাসান মিয়া আমাদের হেফাজতে রয়েছে। মাছের মালিকপক্ষ ঢাকার গাজীপুর কালিয়াকৈর থানায় মাছ চুরির বিষয়ে একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন। আসামি এবং আলামত তাদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।