সোমবার, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
13.3 C
Netrakona
সোমবার, জানুয়ারি ২০, ২০২৫
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদজেলা প্রশাসকের কর্মদক্ষতায় পাল্টেছে নেত্রকোনার সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম

জেলা প্রশাসকের কর্মদক্ষতায় পাল্টেছে নেত্রকোনার সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রম

সোহান আহমেদ:
গত এক বছরে অনেকটাই পাল্টেছে নেত্রকোনা জেলার প্রশাসনিক সার্বিক চিত্র। জেলা প্রশাসনের বিশেষ কিছু উদ্যোগ সারা ফেলেছে জেলার সর্বস্তরের মানুষের মাঝে। পারিবারিক সামাজিক নানা অভাব অভিযোগ নিয়ে প্রতিকার মিলছে হতদরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষদের। সমাধান হয়েছে রাষ্ট্রীয় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের। চলতি বছর দ্রুত গতিতে এগিয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন কার্যক্রম।

নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশের সততা দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সকল কার্যক্রমে পরিবর্তন আনা হয়েছে। ফলে এর সুফল অনেকাংশেই পেতে শুরু করেছেন জেলাবাসী।

পহেলা জুন ২০২৩ নেত্রকোনায় যুগদানের এক বছর পূর্ণ হয়েছে। দিনটি স্বরনীয় করতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের হল রুমে একবছর পূর্তিতে শুভেচ্ছা জানিয়েছে কর্মরত সকল কর্মকর্তা কর্মচারীবৃন্দ। জেলা প্রশাসক হিসেবে অঞ্জনা খান মজলিশ এরইমধ্যে আইসিটি বিভাগ থেকে শ্রেষ্ঠ জয়ী এ্যাওয়ার্ড এবং ময়মনসিংহ বিভাগের শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসেবে পেয়েছেন শুদ্ধাচার পুরস্কার।

জানা গেছে, মাত্র এক বছর সময়ে বেশকিছু আলোচিত উল্লেখযোগ্য উদ্যোগ সমূহের মধ্যে রয়েছে নেত্রকোনা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের কর্মী বাছাইয়ে স্বচ্ছতার মাধ্যমে যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ প্রদানসহ বিভিন্ন দপ্তরে নিয়োগ কাজে স্বচ্ছতা আনতে প্রশ্ন তৈরি সহ নকল মুক্ত পরীক্ষায় নিয়েছেন নানামুখী পদক্ষেপ। নেত্রকোনার-কলমাকান্দা ঠাকুরকোনা সড়কে ভূমি অধিগ্রহণে জন্য বরাদ্দ হয় ১শত ২ কোটি টাকা। কিন্তু জেলা প্রশাসকের দিক নির্দেশনায় কয়েক দফা যাচাই-বাছাই করে সঠিকভাবে কাজ করায় বেঁচে যায় ৫৬ কোটি টাকা। যা পরবর্তীতে সরকারি কোষাগারে ফেরত দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশের ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে যা একটি মাইলফলক, ইতিহাস। এরইমধ্যে সড়কটির পঁচানব্বইটা ভাগ কাজও শেষ করা হয়েছে।

নিজ কার্যালয়ে সাপ্তাহিক গণ শুনানি করছেন নিয়মিত। প্রতি বুধবার সাধারণ মানুষের অভাব অভিযোগ শুনে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণে উপকৃত হচ্ছেন জনসাধারণ। যেখানে এ পর্যন্ত প্রায় দুই হাজারেরও বেশি মানুষের আবেদন নিষ্পত্তি করা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ব্যাপক তৎপরতায় জেলার নয়টি উপজেলাই এখন ভূমিহীন মুক্ত। একমাত্র উপজেলা খালিয়াজুরীতে ৪ শতাধিক ভূমিহীনের মাঝে গৃহ হস্তান্ত কাজও এগিয়ে চলছে। আগামী দুই এক মাসের মধ্যেই সেগুলো হস্তান্তর করা হবে। আশ্রায়নের বাহিরেও হতদরিদ্র অন্তত ২০ টি পরিবারকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হয়েছে নতুন ঘর। নানা রোগে আক্রান্ত সহস্রাধিক হতদরিদ্র মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাৎক্ষণিক ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন। স¤প্রতি বারহাট্টায় বখাটের দায়ের কোপে নিহত শিক্ষার্থী মুক্তির পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে বড় বোন নিপা রানী বর্মনকে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে আউটসোর্সিং দপ্তরে চাকুরীর ব্যবস্থা করে দিয়েছেন জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ।

সার্বক্ষণিক তৎপরতায় এ বছর হাওরাঞ্চলে ফসল রক্ষা বাঁধ মেরামতে অনিয়ম, জটিলতা নিরসন করে শতভাগ ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে। সামাজিক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিচালনায় পৌর শহরের মোক্তারপাড়ায় জরাজীর্ণ পাবলিক হলটি পুনঃ সংস্কার করা হয়েছে। পদাধিকার বলে জেলা প্রশাসক সভাপতি হওয়ায় প্রেসক্লাব হল রুমেও লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। ক্রিড়াঙ্গনকে উজ্জীবিত করতে আধুনিক স্টেডিয়াম পরিচালনা পর্ষদে ৩০ লাখ টাকার ফান্ড করণসহ আয় বৃদ্ধিতে নিয়েছেন দোকান ও গুঢাউন ভাড়ার ব্যবস্থা। হাওরাঞ্চল ও সীমান্তে সম্ভাবনাময় পর্যটনকে এগিয়ে নিতে বাস্তবায়ন শেষে উদ্বোধন করা হয়েছে পর্যটন সেবা কেন্দ্র ও নান্দনিক রেস্ট হাউস।

মুক্তি যুদ্ধের চেতনায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকেই নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু কর্ণার। কাযালয়ে প্রবেশ করলেই চোখে পরবে সরকারি কর্মচারীদের উদ্দশ্যে দেয়া বঙ্গবন্ধু নির্দেশনা মূলক বাণী। প্রশাসক চত্বরে “চেতনার বাতিঘর” স্থানটি পুনঃ সংস্কার করার পাশাপাশি পুরাতন কালেক্টরেট প্রাঙ্গনে হয়েছে উইমেন্স সেলস এন্ড ডিসপ্লে সেন্টার, হস্তশিল্প ও মৃত্যু শিল্প বিক্রয় কেন্দ্র, জেলা প্রশাসক মসজিদ সংস্কার, সার্কিট হাউজ দেয়াল ও গেট নির্মাণ, বঙ্গবন্ধু চত্বর পুকুর পাড় সুসজ্জিত করা হয়েছে। এরইমধ্যে জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ আইসিটি বিভাগ থেকে শ্রেষ্ঠ জয়ী এ্যাওয়ার্ড এবং ময়মনসিংহ বিভাগের শ্রেষ্ঠ জেলা প্রশাসক হিসেবে পেয়েছেন শুদ্ধাচার পুরস্কার। এরআগে জেলা প্রশাসক হিসেবে চাঁদপুর থাকাকালীন সময়ে পরিবেশ রক্ষায় মেঘনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে সাহসী পদক্ষেপ গ্রহণ করায় জাতীয় নদীর রক্ষা কমিশন থেকে পেয়েছেন প্রশংসা সনদ। নেত্রকোনায় যুগদানের পর জেলা প্রশাসক হিসেবে সকল উদ্যোগগুলো গ্রহণ ও বাস্তবায়নে অত্যন্ত স্বচ্ছতা কর্মদক্ষতায় সর্বস্তরের মানুষের কাছে এখন প্রশংসিত হচ্ছে জেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments