বাংলাদেশকে বিশে^র সাথে এগিয়ে নিতে পতিত সরকার ডিজিটালাইজেশন করার নামে নানা প্রকল্প নিয়েছিলো। যেগুলোর অধিকাংশই মানুষ বুঝে না। আইসিটি প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে উন্নত দেশ গঠনে দেখানো হয়েছে বড় বড় স্বপ্ন। স্থাপন করা হয়েছে প্রজেক্ট। কিন্তু বাস্তবায়নের বেলায় পাওয়া গেছে গড়মিল। ডিজিটালের নামে হয়েছে হরিলুট। কোটি কোটি অর্থ লুপাটে ক্ষত্রিগস্থ হয়েছে দেশের মানুষেরাই। নেত্রকোনা জেলার বিভিণœ সরকারী দফতরের ওয়েবসাইটগুলো থাকলেও নেই হালানাগাদ তথ্য। সংরক্ষণ করা নেই কোন সাম্প্রতিক তথ্য। আধুনিক বা সময়োপযোগী করা হয় না বেশিরভাগ ওয়েবসাইটের তথ্যই। শুধু তথ্যই হালনাগাদ করা হয়নি। সাইটগুলোর কোন কোনটায় রয়েছে ফ্যাসিবাদ সরকার প্রধানের ছবিও। কিছু কিছু কর্মকর্তা বদলি হলেও রয়ে গেছে তাদেই নাম নাম্বার। ছাত্র জনতার আন্দোলনের ছয় থেকে সাত মাস চললেও করা হয়নি হালনাগাদ। ছাত্র প্রতিনিধি ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা বলছেন এ ধরনের কার্যক্রম কোনোভাবেই কাম্য নয়। তারা বলেন, এতদিনেও কেন ওয়েবসাইট গুলো সংস্কার হয়নি। এর কারণ কি তাহলে মানুষকে সেবা না দিয়ে বর্তমান অন্তবর্তী সরকারকে বিপদে ফেলা ?
জেলার উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে আজ মঙ্গলবার বিকাল ৩ টা ৩৮ মিনিটেও দেখা গেছে আওয়ামীলীগের সরকার প্রধানের ছবি। এছাড়াও নোটিশে রয়েছে ১৩/১/২২ সনের শুদ্ধাচার সংক্রান্ত নোটিশ। এমন সরকারী বিভিন্ন সাইটে প্রবেশ করে কোনটায় দেখায় কোডনট বি ফাউন্ড। একই অবস্থা উপজেলা ভিত্তিক সরকারি অফিসগুলোর সাইটেও।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা আইসিটি প্রোগ্রামার শরিফুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এগুলো নিজ নিজ দপ্তর থেকে আপডেট করবে। আজকের জেলা সমন্বয় সভায় জেলা প্রশাসক বনানী বিশ^াস সকলকে বলে দিয়েছেন দ্রæত আপডেট করতে। আমরা শুধু কারিগড়ি সহযোগিতা দেই। তিনি বলেন অভিযোগ প্রতিকার ব্যবস্থা নিস্পত্তি করা হয়। তাদেরকে জানালে তারা সমস্যা সামধান করেন। এমন নানা বাহানায় মূলত আইসিটির কার্যক্রমকে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলেন তারা কারিগড়ি সমাধান দেন। তাদের জানামতে জেলায় ৭০ টির মতো সরকারী ওয়েব রয়েছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে জানা গেছে, জেলা প্রশাসকের সরকারি ওয়েবসাইটের সাথে বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইট রয়েছে ৭৪ টি। এছাড়াও জেলার দশটি উপজেলা, পাঁচটি পৌরসভার সহ সব মিলিয়ে মোট সরকারি ওয়েবসাইটের সংখ্যা প্রায় ৪৫৬টি।
তবে জেলা প্রশাসক বনানী বিশ^াস সাংবাদিকদের কাছে একটি সাক্ষাৎকারে জানান প্রতি মাসেই সরকারি ওয়েবসাইট গুলোর তথ্য আপডেট ও পরিবর্তনের জন্য সকল কর্মকর্তাকে বলা হয়। সভাতেও বলা হয়েছে। এরপরেও যদি কেউ পরিবর্তন না করে তাহলে তার বিরুদ্ধে চিঠি ইস্যু করা হবে ।
অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থী আজিজুর রহমান সায়েম, জেলা ছাত্রদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সারোয়ার আলম এলিনসহ সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা বলেন, নতুন বাংলাদেশ গঠনে সরকারি সেক্টরের সর্বপ্রথম পরিবর্তন আনা প্রয়োজন ছিল। তবে কি কারনে এখনো পরিবর্তন হয়নি তা উর্ধতনদের খোঁজ নিয়ে দেখা দরকার। অন্তবর্তী সরকারকে অসহযোগিতা করছে কিনা অথবা এগুরোর নামে অর্থ লুপাটের ব্যাপারগুলো কি পরিমাণ দুর্নীতি হয়েছে তা ক্ষতিয়ে দেখে শাস্থির আওতায় আনা হোক। পাশাপাশি অনলাইনে থাকা ওয়েবসাইটগুলোকে দ্রæত হালনাগাদ করে জনসাধারণের জন্য সহজতর করতে হবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ উদ্যোক্তারা বলছেন সবকিছুই ডিজিটালাইজেশন করা হলেও এর থেকে কতটুকু সুবিধা পাচ্ছে মানুষ সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। অথচ তথ্য সংযোজন করা সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে দশ মিনিটের কাজ।