নেত্রকোনার কৃতি সন্তান নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার অন্যতম এই সংগঠক বীর মুক্তিযোদ্ধা আয়েশা খানমকে শনিবার বাদ আসর শহরের কাটলি এলাকায় নিজ গ্রামে স্বামী প্রকৌশলী মরতুজা হাসানের কবরের পাশে শায়িত করা হয়।
কাটলি এলাকায় স্থানীয় অন্বেষা স্কুল মাঠে জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজনৈতিক সামাজিকসহ বিভিন্ন অংগ সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা অংশ নেন। এর আগে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় গার্ড অব অনার প্রদান করেন জেলা প্রশাসন।
এসময় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ সুহেল মাহমুদ. অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফখরুজ্জামান জুয়েল, সদর উপজেলার ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদুর রহামান ও সদর উপজেলার মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম খানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও স্বজনদের মধ্যে ভাগিনা সাবেক যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী ফুটবল তারকা আরিফ খান জয়, আওয়ামীলীগের যুগ্ম সম্পাদক নুর খান মিঠু, ভাই সাবেক পিপি জিএম খান পাঠান বিমল, মুক্তিযোদ্ধা সাবেক কমান্ডার নুরুল আমীন খান, সদরের সাবেক কমান্ডার আইয়ুব আলী, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম এনি, কমিউনিস্ট পার্টির কোহিনুর বেগম, জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এডভোকেট মাহফুজুল হক ও ছাত্র ইউনিয়ন যুব ইউনিয়ন, নারী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সকল সামাজিক রাজনৈতিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় নানা পর্যায়ের ব্যাক্তি ও বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে মরদেহে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানানো হয়।
এর আগে বিকালে সাড়ে ৩টার দিকে নেত্রকোনা শহরের কাটলিস্থ নিজ বাসায় এসে পৌছায় আয়শা খানমের মরদেহ। তখন স্বজন ও এলাকাবাসীর মাঝে বেদনাসিক্ত পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এছাড়াও আয়শা খানমের মরদেহ সকাল ৯টায় শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য রাজধানীর সেগুন বাগিচাস্থ বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে নেওয়া হয়।
১৯৪৭ সালের ১৮ অক্টোবর নেত্রকোনা সদর উপজেলার গাবড়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন আয়শা খানম।
হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলন থেকেই ছাত্র রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন তিনি।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী আয়েশা খানম বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ছিলেন। তিনি ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেন। পরবর্তীতে অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নিজেকে যুক্ত রাখেন জীবনের শেষ পর্যন্ত।