রিফাত আহমেদ রাসেল
নেত্রকোনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে বিনা ছাড়পত্রে ভেটেনারি ওষুধ প্যাকেজিং ও সংরক্ষণের দায়ে রেডিয়েট এগ্রি কেয়ার সাইন্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড ও পঞ্চাশ হাজার টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে একমাসের জেল দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারী) বিকালে সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে, প্রাণিসম্পদ, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযান পরিচালিত হয়েছে শহরের পৌর এলাকার শিবগঞ্জ রোডের আজিজ তালুকদারের বাড়িতে। সেখানে রেডিয়েট এগ্রি কেয়ার সাইন্স নামের একটি সংরক্ষণাগারে অবৈধ হাঁস-মুরগি ও গরু ছাগলের ওষুধ তৈরীর কারখানায় কয়েক ঘণ্টা অভিযান শেষে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মেহেদী হাসান ভোক্তা অধিকার আইনে এই সাজা প্রাদান করেন। এছাড়াও ঔষধসহ মামলামাল জব্দ করে যৌথ বাহিনী।
সাজাপ্রাপ্ত মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জামালপুর জেলার ঘুরাদাপ ইউনিয়নের চিতলিয়া গ্রামের বাসিন্ধা। তিনি নেত্রকোনায় এসে গেল দুবছর যাবৎ এই অবৈধ কারখানায় ঔষধ তৈরীর ব্যবসা করছেন।
অভিযানিক দল সূত্রে জানা গেছে, অভিযান পরিচালনা কালে কন্টেইনার হাইড্রোজেন পার অক্সাইড, ক্যামিকেল, সিপ্রম্যাক্স ১০ গ্রাম পাউডার (১৫০) প্যাকেট, অক্সিমিক্স ১০ গ্রাম (৪০০) প্যাকেট জব্দ করা হয়েছে।
অভিযানে অন্যানের মাঝে উপস্থিত ছিলেন নেত্রকোনার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মেহেদী হাসান, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোঃ আরিফুল ইসলাম, নেত্রকোনা সেনা ক্যাম্প এর ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন মোঃ আসিফ প্রামাণিক নুহাস, সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আরিফা পারভিন রিপা সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা।
এদিকে সাজাপ্রাপ্ত রেডিয়েট এগ্রি কেয়ার সাইন্স প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ভ্রাম্যমান আদালতকে জানান গত দু’বছর ধরে তিনি নেত্রকোনায় ভেটেনারি ওষুধের ব্যবসা পরিচালনা করছেন।
এর আগে তিনি দীর্ঘ ১৮ বছর একটি বেসরকারি ওষুধ প্রস্তুতকারী কোম্পানি কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকেই ওষুধ প্রস্তুত এবং প্যাকেজিং সম্পর্কে ধারণা নিয়ে নিজের একটি সংরক্ষণাগার প্রতিষ্ঠান চালু করেন। সংরক্ষণের আড়ালে হাঁস-মুরগি সহ গরু ছাগলের বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ প্রস্তুত করতেন বলে দায়ী স্বীকার করেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এসএম মেহেদী হাসান জানান, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রেডিয়েট এগ্রি কেয়ার সাইন্স প্রতিষ্ঠানে অভিযান পরিচালনা করে কোন প্রকার ছাড়পত্র ছাড়াই হাঁস মুরগি ও গরু ছাগলের মেডিসিন ও অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে।
স্বত্বাধিকারীকে ২০০৯ সালের ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে ৪৩ ধারায় ছয় মাসের জেল ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে অন্যথায় আরো এক বছরের জেল। প্রতিষ্ঠানটি ওষুধ সংরক্ষণ করে বিক্রয় করতে পারবেন এমন লাইসেন্স রয়েছে বিধায় প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করা হয়নি। তবে অবৈধভাবে তৈরিকৃত সকল ঔষধ জব্দ করা হয়েছে।
নেত্রকোনা সেনা ক্যাম্প ৮ ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের ক্যাপ্টেন মোঃ আসিফ প্রামাণিক নুহাস জানান, আমরা গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যৌথবাহিনী নেতৃত্বে শহরের ইসলামপুরে একটি কারখানায় অবৈধভাবে ওষুধ তৈরির সত্যতা পেয়েছি।
ইতিমধ্যে অবৈধভাবে ওষুধ তৈরি সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে। জেলায় অবৈধ কার্যক্রম ও আইন বহির্ভূত সকল কার্যক্রম প্রতিরোধে সেনাবাহিনী প্রস্তুত রয়েছে।
এছাড়াও সকল অবৈধ কারখানা শনাক্তে সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরাও তৎপর রয়েছে।