সোহান আহমেদ:
সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্প নিয়ে অননিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশ ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে ছড়িয়ে অপপ্রচারের ঘটনায় বিব্রত হয়েছে নেত্রকোনা প্রশাসন। যদিও সরোজমিন তদন্ত করে অনিয়মের তেমন কোন সত্যতা পায়নি জনপ্রতিনিধি সাংবাদিকসহ জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সম্প্রতি একাত্তর ও চ্যানেল ২৪ টিভিসহ বেশ কয়েকটি পত্রিকায় পূর্বধলায় শ্মশান ঘাটের জায়গা দখল ও নির্মাণ কাজে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সংবাদ প্রকাশিত হয়। আর এমন সংবাদ প্রকাশে অনেকটাই বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েছেন স্থানীয় প্রশাসনসহ জনপ্রতিনিধিরা।
এমন অবস্থায় সংবাদের সত্যতা যাচাই করতে গিয়ে সরেজমিন পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। রবিবার দিনব্যাপী পূর্বধলায় অভিযোগ ওঠা প্রকল্প গুলো পরিদর্শন করেছেন নেত্রকোনা অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জিয়া আহমেদ সুমন ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মনির হোসেন। এ সময় নবনির্মিত পাকা ঘরে বসবাসরত পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেন উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা।
এ সময় হতদরিদ্র পরিবারগুলোর সদস্যরা জানান, দীর্ঘদিন অন্যের বাড়িতে বসবাস করলেও বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার পাকা ঘর পেয়ে শান্তিতে বসবাস করছেন তারা। প্রতিটি গুচ্ছগ্রামে রয়েছে বিদ্যুৎ ও পানির সুব্যবস্থা। ঘরগুলো নির্মাণেও উন্নত মানের মালামাল ব্যবহৃত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন জনপ্রতিনিধি প্রশাসন ও স্থানীয় উপকারভোগীরা।
এ সময় নারায়ণঢহর আশ্রয়ন প্রকল্পের ভূমিটি খাস খতিয়ানে কান্দা হিসেবে উল্লেখ থাকলেও স্থানীয় কয়েকজন কুচক্রী ভূমিদস্যুদের প্ররোচনায় প্রকল্পের জায়গাটিতে শ্মশান ঘাট ছিলো বলে প্রচারণা চালায়। এরই প্রেক্ষিতে সংবাদ প্রচার করেন সাংবাদিকরা। কিন্তু সরেজমিন ঘুরে ও প্রয়োজনীয় কাগজ পর্যালোচনা করে শ্মশানঘাটের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি।
এ সময় স্থানীয় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘদিন আগে নদী তীরবর্তী স্থানে সৎকারের কাজ করতেন তারা। এছাড়া স্থায়ী কোনো শ্মশান ঘাট ছিল না বলেও জানান উপস্থিত একাধিক সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষেরা।
এ সময় জেলা প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা ছাড়াও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন সহ স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে কুলসুম জানান, দীর্ঘদিন ধরে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে সরকারি আশ্রায়ন প্রকল্পে ভূমিহীনের জন্য পাকা ঘর নির্মাণ কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়েছে। এরইমধ্যে বসবাস শুরু করেছেন উপকার ভোগীরা। কিন্তু স্থানীয় কয়েকজনের ভিত্তিহীন অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও ফেইসবুকে অপপ্রচার চালিয়ে যাওয়ায় অনেকটাই বিব্রত হয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। যদিও সরেজমিনে সংবাদে প্রচার হওয়া শ্মসান ঘাটের জায়গা দখল ও নবনির্মিত ঘরে ধসের মতো কোন ঘটনার অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই এমন ভিত্তিহীন সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। এ সময় জেলায় কর্মরত প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ সহ স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন