নেত্রকোনার দুর্গাপুরে ইউপি সদস্য নির্বাচনে প্রার্থীর সমর্থক হওয়ার জেরে ২০১২ সনে কৃষক রফিক হত্যা মামলার রায়ে আটজনের যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়েছে দায়রা জজ আদালত। রবিবার দুপুরে জনাকীর্ণ আদালতে দায়রা জজের বিচারক মো. হাফিজুর রহমান এ রায় দেন। তাদের প্রত্যেককে যাবজ্জীবন তৎসহ ২০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড অনাদায়ে ৬ মাসের জেল প্রদান করা হয়। দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, ইসমাইল (৩৩), কাজল মিয়া (৩০), মজিবুর রহমান (২৭), আশ্রব আলী (২৭), ছামেদুল (৩২), শাহজাহান (২৮), নজরুল (২৮) এবং নুরুল আমিন (৪৫)।
দীর্ঘ এক যুগ ধরে চলমান তদন্তে মোট ১১ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহনান্তে অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় একই মামলায় বস্তায় ভরে রাখায় (২০১ ধারায়) দন্ডপ্রাপ্ত আসামীদেরকে ৫ বৎসর করে সশ্রম কারাদন্ড তৎসহ ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে এক মাসের করে জেল প্রদান করা হয়।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১২ সনে স্থানীয় ইউপি নির্বাচনে মেম্বার প্রার্থী মো. হাবিবুরের সমর্থক হওয়াকে কেন্দ্র করে পরাজিত তোতা মেম্বারের সমর্থকদের সাথে দুর্গাপুরের নন্দেরছটি গ্রামের মো. আ. মোতালেবের ছেলে মো. আ. রফিক ওরফে রহিতের (২৮) তর্ক বিতর্ক হয়। এর জেরেই ওই সনের ২৪ জানুয়ারী বোরো জমিতে সেচ দিতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে না আসলে পরদিন ভোরে চিনাকুড়ি বিলে তোতা মেম্বারের রোপিত জমিতে পাটের বস্তায় রহিতের লাশ পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় রহিতের বাবা মো. আ. মোতালেব বাদী হয়ে ১৪ জনকে আসামী করে দুর্গাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। দীর্ঘদিন তদন্ত শেষে ২০১৭ সনের ১৭ জানুয়ারী পুলিশ মামলার মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে।
এর মাঝে আসামীরা জামিন নিয়ে যান। পরবর্তীতে বার বছর (একযুগ) দীর্ঘ স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আজ রবিবার হাজিরা দিতে আসলে তাদের উপস্থিতিতে তাদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত ভাবে প্রামাণিত হলে এই রায় প্রদান করেন বিচারক। মমালা রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আবুল হাসেম। আসামীদের পক্ষে ছিলেন জাহিদুল হাসান সৈকত।