প্রতিবছর বন্যা থেকে হাওরের ফসল রক্ষায় এবার সময়মতো কাজ শুরু করলেও তা যেন সময়ে শেষ করা যায় সেই লক্ষ্যে মনিটরিং অগ্রগতি সভা করেছে জেলা প্রশাসক (ডিসি) অঞ্জনা খান মজলিশ। রবিবার বিকালে নেত্রকোনা জেলা কাবিটা স্কীম বাস্তবায়ন কমিটি ও জেলা মনিটরিং কমিটির সাথে এ নিয়ে এক বৈঠক করেছেন তিনি।
নিজ কার্যালয়ের হলরুমে নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন হাওরের ফসলরক্ষা ডুবন্ত বাঁধের নির্মাণ ও মেরামত কাজের অগ্রগতি নিয়ে এই সভা করেন।
এতে জেলা কাবিটা স্কীম বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সভাপতি জেলা প্রশাসেকর সভপতিত্বে বিভিন্ন দপ্তরের সদস্য ও সংশ্লিষ্ট সাত উপজেলার নির্বাহীগণ, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বাস্তবায়ন ও মনিটরিং কমিটির সদস্য সচিব পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সারোয়ার জাহান বাঁধের অগ্রগতিসহ মূল প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। এসময় চলমান মোট ২০২ টি পিআইসির কার্যক্রমের সমস্যা এবং অগ্রগতি উপস্থাপন করেন সংশ্লিষ্ট ইউএনও ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা।
তারা জেলার খালিয়াজুরী ১১১ টি, মদনে ২৪ টি, মোহনগঞ্জে ২৫ টি, কলমাকান্দায় ২৬ টি, বারহাট্টায় ১০ টি পূর্বধলায় ৪ টি ও আটপাড়ায় ২ টি পিআইসির সার্বিক পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন আলাদা আলাদা উপজেলা ভিত্তিক।
এসময় শতকরা কাজের মান নির্নয় করতে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারী আরও একটি সভা ডাকা হয়। সভায় আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারীর মধ্যে সকল বাঁধের মাটি কাটার কাজ সম্পন্ন করার করাকারি নির্দেশ দেন ডিসি। সেইসাথে পূর্বের কাজের বকেয়া টাকা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে পরিশোধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
এদিকে সভায় মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাজ আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারী সমাপ্ত হওয়ার কথা জানালেও খালিয়াজুরী উপজেলার কাজের অগ্রগতি নিয়ে বিশদ আলোচনা হয়। খালিয়াজুরী কীর্ত্তণখলা বাঁধে ৩৫ ভাগ কাজ হয়েছে।
ভেতরের কয়েকটিতে পানি না সরায় কাজের অগ্রগতি তেমন হচ্ছে না বলেও শঙ্কা প্রকাশ করেন। তবে ধনু নদীর পর থেকে সদরের মেন্দিপুর ইউনিয়নের দীর্ঘ বাঁধটিতে মাটি কাটা ৬২ ভাগ কাজের অগ্রগতি হয়েছে। এছাড়া আটপাড়া উপজেলার দুটি পিআইসির মধ্যে একটির কমিটির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে বন্ধ থাকা কাজ করার জন্য নতুন কমিটি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সভায় জেলা প্রশাসক সংশ্লিষ্ট সকল ইউএনও এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাাদের বাঁধ নির্মাণ এবং মেরামতে শতভাগ পরিছন্ন থেকে আন্তরিকতার সাথে কাজ সম্পন্ন করার তাগিদ দেন। টেকসই বাঁধ মেরামতে তিনি কঠোর হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, সরকার প্রতি বছর কৃষকদের ধান কেটে ঘরে তুলতে বাঁধের জন্য কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়।
এটির সঠিক ব্যবহার করে এই কার্য বাস্তবায়নে যেন কোনরূপ ব্যত্যয় না ঘটে সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার তাগিদ দেন তিনি। পাশাপাশি কাজের বরাদ্দের টাকা সুষ্ঠুভাবে পরিশোধ করতেও তিনি সকলের প্রতি আহ্বান রাখেন। এছাড়াও বাকী দিনগুলোতে প্রতিনিয়ত বাঁধে গিয়ে মনিটরিং কারার জন্যও তাগিদ দেন।