সরিষা ক্ষেতের ভেতরে বসে হলুদের গন্ধ মাখা কফি পানে যেন ভিন্ন স্বাদ। এ এক অন্য রকম সৌন্দর্য্য দেখে দর্শার্থীথের ভিড়। সৃজনশীল এমন এক আয়োজনের উদ্যোক্তা নেত্রকোনার এক কন্টেন্ট ক্রিয়েটার মিন্টু মিয়া। জেলার সদর উপজেলার দক্ষিণ বিশিউড়া ইউনিয়নের পাবিয়া জুর গ্রামের বাসিন্ধা। তিনি করোনা কালে ফেরত এসে দোকান দিয়ে কোন রকমে চলার পর মাথায় আসে অভিনব এই বৃদ্ধি।
এ বছরই প্রথম তার ভাইয়ের কাছ থেকে জায়গা নিয়ে সরকারী ভাবে পাওয়া বীজ কাজে লাগিয়ে সাফল্য পান। পরবর্তীতে মাথায় আসে হলুদ সর্ষের ভেতরে কফি পানে কেমন লাগে। প্রথমদিকে মিন্টুর এই উদ্যোগ নিয়ে তার পরিবার এবং প্রতিবেশীরা সন্দিহান ছিলেন। এক পর্যায়ে ফেইসবুকে ছবিগুলো ছড়িয়ে গেলে মানুষ দেখতে এবং ছবি তুলতে সবাই কন্টেন্ট কিয়েটার মিন্টুর হলুদের মাঝে কফি পানে মেতে উঠেন। তার এমন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ যেন সারা ফেলেছে সর্বস্থরে। আর এটিই এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। মিন্টু মিয়ার চিন্তা এবং পরিশ্রমকে পূঁজি করে এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহনে দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয় এই কফি হাউজ যদিও বেশি দিনের নয়। মওসুমের এই সৌন্দর্য্য যারা মিস করতে চায় না তারাই ঘুরতে যান। অনেকের কাছে আচানক মনে হয়। এটিকে হাস্যকর মনে করেলেও বর্তমানে তার সাফল্যে গর্বিত স্থানীয়রা।
মিন্টু মিয়া জানান, তিনি দীর্ঘ ১২ বছর দুবাই এবং ব্যাঙ্গালোরে সুপার শপে কাজ করেছেন। তিনি বিদেশের জীবনযাত্রা এবং কর্মক্ষেত্রের অভিজ্ঞতা তাকে কঠোর পরিশ্রম ও সৃজনশীল ভাবনার মূল্য শিখিয়েছে। যদিও করোনা মহামারির ধাক্কায় দেশে ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। ফিরে এসে শুরুতে মুদি দোকান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ হচ্ছিল তার। কিন্তু নতুন কিছু করার তাগিদ থামতে দেয়নি তাকে। ব্যতিক্রমী কিছু করার চিন্তা থেকে বাড়ির পাশে ৬০ শতক জমিতে সরিষা চাষ করেন মিন্টু মিয়া। সেই জমির মাঝখানে ছাতা টানিয়ে চেয়ার-টেবিল বসিয়ে একটি কফি হাউজ তৈরি করেন। প্রথমে ধারণাটি অনেকের কাছে অদ্ভুত এবং হাস্যকর মনে হয়েছিল।
বর্তমানে বিভিন্ন প্রকার চা কফি মিললেও ভবিষ্যতে আরো আইটেম বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন মিন্টু মিয়া।
তিনি জানান, দর্শনার্থীদের চাহিদা মেটাতে আরও সৃজনশীল কিছু করতে নতুন উদ্যোগ নেবেন। সরিষা ক্ষেত ছাড়াও অন্যান্য মৌসুমি ফসল বা ফুলের বাগানে এ ধরনের কফি শপ তৈরি করার চিন্তাভাবনা করছেন।