নেত্রকোনা-ময়মনসিংহ সড়কে সিএনজি অটোরিকশা এবং প্রাইভেটকারের মুখোমুখি সংঘর্ষে পুলিশ কনস্টেবলসহ সিএনজি চালক নিহত হয়েছেন।
এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও প্রাইভেট কার চালক, সিএনজি যাত্রীসহ ছয়জন।
আহতদের মধ্যে তিনজনকে আশংকাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারী) দুপুরে নেত্রকোনা জেলার সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের ঝাউসী নামক স্থানের ঝাউসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এই সংঘর্ষে ঘটনায় ঘটনাস্থলেই সিএনজি চালক ফারুক মিয়া (২২) নিহত হয়েছেন।
নিহত ফারুকে বাড়ি ময়মনসিংহ সদর উপজেলার শাহবাজপুর এলাকায়।
এদিকে আহতদেরকে স্থানীয়দের সহায়তায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা উদ্ধার করে নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে আব্দুল হেকিম (৪০) নামের একজনকে মৃত ঘোষনা করেন চিকিৎসক। তিনি জেলার বারহাট্টা উপজেলার ফকিরের বাজার পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন বলে নিশ্চিত করেছেন নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ।
ওসি আরও জানান ওই কনস্টেবল ময়মনসিংহের ফুলপুর নিজ গ্রামে ছুটির দিনে বাড়ি যাচ্ছিলেন।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী ঝাউসি এলাকার স্থানীয় যুবক মনিরুল ইসলাম সনি জানান, দুইদিক থেকে আসা দুটি যাত্রীবাহী যানের মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা দেখেই স্থানীয়রা এগিয়ে এসে উদ্ধার কাজ করেন। কিন্তু তাৎক্ষণিক একজন মারা যান। প্রাইভেটকারটি নেত্রাকানার দিকে আসছিল এবং ৫ জন যাত্রী নিয়ে সিএনজি অটো রিকশাটি ময়মনসিংহের দিকে যাওয়ার পথে মুখোমুখি এই সংঘর্ষ হয়।
খবর পেয়ে দ্রুত নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত এবং আহতদের উদ্ধার করে নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসে।
নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার খানে আলম খান জানান আমরা খবর পেয়ে গিয়ে একজনকে ঘটনাস্থলেই নিহত পাই। বাকীদের উদ্ধার করি।
নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মো. হাফিজুর রহমান জানান, খবর পাওয়ার পর দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে নিহত একজনের লাশ উদ্ধার করে নেত্রকোনা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বাকী ৫ জনকে নিয়ে আসলে হাসপাতালে আহতদের একজনকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।
অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ পাঠানো হয়েছে।
তাদের মধ্যেও একজনের অবস্থা খুবই আশংকাজনক বলেও জানান তিনি।
এদিকে পুলিশের অন্য একটি সূত্র জানায় প্রাইভেটকারে থাকা চারজন আহত হলে ঘটনাস্থল থেকেই তাদেরকে ময়মনসিংহে নিয়ে গেছে। তাদের মধ্যে দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে পাওয়া আহতদের পরিচয়ে জানা গেছে, আহত সিএনজি যাত্রী কলমাকান্দা উপজেলার নজরুল ইসলামের স্ত্রী শারমিন আক্তার (২৫), বারহাট্টার রশিদ মিয়ার ছেলে পাভেল (২২), কলমাকন্দার জাহেদ আলীর ছেলে নজরুল মিয়া (৩০), কলমাকন্দার রইছ মিয়ার ছেলে রাহাতুল (৩৫)।
এছাড়া প্রাইভেটকার চালক মাদারিপুর জেলার রাজ্জাক হাওলাদারের ছেলেন মো. পান্নু মিয়া ও যাত্রী নরসিংদীর মাহবুব (৫০)।
অন্যদিকে কাছাকাছি সময়ে নেত্রকোনা দুর্গাপুর সড়কের ডেটুকুন ঘাটের কাছে একটি ড্রাম ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে ওই এলাকার ৬ বছরের এক শিশু নিহত হয়েছে বলে মডেল থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ নিশ্চিত করেছেন।
অন্যদিকে একটি বিশ্বস্ত সূত্র জানায় চলতি মাসেই ১১ টি প্রাণ হানির ঘটনা ঘটেছে জেলায় শুধুমাত্র সড়ক দুর্ঘটনায়। তারমধ্যে ৬ জনের প্রান গেছে শুধুমাত্র সিএনজি অটোরিকশা দুর্ঘটনায়।