সোহান আহমেদ:
নেত্রকোনায় স্কুলছাত্রী মুক্তি বর্মনের হত্যাকারীর দৃষ্টান্তমুলক শাস্থির দাবিতে নেত্রকোনায় মানব্বন্ধন করেছে মহিলা পরিষদসহ বিভিন্ন সামজিক সংগঠন। বৃহস্পতিবার জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় দিনব্যাপী এসকল মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়।
দুপুরে নেত্রকোনা শহরের ছোট বাজার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ জেলা সংসদের উদ্যোগে ঘন্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা। এতে বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা একাত্মতা পোষণ করে। মানববন্ধনে সাংবাদিক, শিক্ষক, রাজনৈতিক, নারী সংগঠন, উদ্যোক্তা, সুশীল সমাজের নেতৃবন্দ, শিক্ষার্থীসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষের দাবী এমন বর্বরোচিত হত্যাকান্ডের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্থি।
মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম এনির সভাপতিত্বে মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন, উদীচী জেলা সংসদের সভপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান, জেলা নারী নির্যাতন প্রতিরোধ কমিটির সম্পাদক সাংবাদিক আলপনা বেগম, আবু আব্বাস ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার, যুব মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রী সৈয়দা শামছুন্নাহার বিউটি, নারী নেত্রী নেলি বড়ুয়া, মহিলা পরিষদের ফাহমিনা সুলতানা তোতাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। এসময় বক্তারা চলমান কিশোর বা শিশু আইন সংশোধনের দাবী জানান। তারা বলেন দেশের পাড়ায় মহল্লায় কিশোর গ্যাং তৈরী হয়েছে। যা বর্তমানে আইনশৃঙ্খলা অবনতি থেকে খুন খারাপি এমনকি সকল ধরনের অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। শিশু দেখিয়ে বিচারের আওতায় নেয়া হয় না বলে এদেরকে একটা শ্রেণি ব্যবহার করে ধংসের দিকে ধাবিত করছে।
উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) নেত্রকোনা জেলার বারহাট্টা উপজেলার বাউসি ইউনিয়নের প্রেমনগর গ্রামের জেলে পাড়ার কীর্তন বর্মনের মেয়ে মুক্তি রানী বর্মনকে স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে কুপিয়ে হত্যা করে একই এলাকার শামছুর রহমানের ছেলে কাওসার। দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের প্রস্তাবে প্রত্যাখ্যান হয়ে বখাটে কাওসার প্রেমনগর ছালিপুরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ওই শিক্ষার্থীকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে। এ ঘটনায় পুলিশ ২৪ ঘন্টার মধ্যেই বুধবার (৩ এপ্রিল) দুপুর আড়াই দিকে আটক করে। আসামি আটকের পর বিকালে তারা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে প্রেসব্রিফিং করে হত্যার বিষয়টি পরিস্কার করেন।
পরে রাতের মধ্যেই এ ঘটনায় মুক্তির বাবা কীর্তন বর্মন বাদী হয়ে কাওসারকে একমাত্র আসামি করে বারহাট্টা থানায় মামলা দায়ের করেছে বলে নিশ্চিত করেছেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বিশেষ শাখা) মো. লুৎফর রহমান।
জানা গেছে, গত কয়েক বছর ধরে বখাটে মুক্তি রানীকে উত্যক্ত করতো। সম্প্রতি এক ঘটনায় মুক্তির বাবা বিষয়টি কাওয়সারের বাবার কাছে বিচার দেন। পরে আর এনিয়ে কোন সমস্যা হয় নি। ওই কাওসার হত্যাকান্ড ঘটানোর বর্ণণা দেয় পুলিশের কাছে। সে জানায় গত ৩০ এপ্রিল কাওসার বারহাট্টা থানা থেকে একটি দা কিনে। পুর্ব পরিকল্পনামতো ওইদিন দুই এপ্রিল স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় পথরোধ করে দা দিয়ে কুপায়।
প্রাথমিকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে প্রেমে প্রত্যাক্ষান হয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে নিশ্চিত করেন অতিরিক্ত পুশিল সুপার মোঃ হারুন অর রশীদ। তিনি আরও বলেন ঘটনার দিনই কাওসারের বয়স জন্ম সনদ অনুযায়ী ১৮ বছর পূর্ন হয়েছে।