রোপা আমনের ফসল যখর ঘরে তুলবে কৃষক ঠিক সেই সময়ে হঠাৎ শিলাবৃষ্টি। কার্তিকের শেষের দিকে অসময়ে নেত্রকোনায় আকস্মিক শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির আশঙ্কায় কৃষকরা। মঙ্গলবার রাতের বেলায় কয়েক মিনিটের এই শিলাবৃষ্টির সাথে ছিলো ঝড়ো হাওয়া। তবে কৃষি বিভাগ বলছে মাঠ পর্যায়ে কর্মীরা খোঁজ নিচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত আটটার পর পূর্ব দিক আকাশে বিদ্যুৎ চমকানো শুরু হয়। প্রায় ঘন্টা খানেক এমন অবস্থা। এসময় কোথাও কোথাও ঝড়ো বাতাস বইতে শুরু করে। ক্ষণিকের মধ্যে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সাথে বিভিন্ন স্থানে শিলাবৃষ্টিও হয়।
বিশেষ করে জেলার হাওর বিস্তৃত উপজেলা খালিয়াজুরী, মদন, মোহনগঞ্জ ও সীমান্তবর্তী উপজেলা দুর্গাপুর, কলমাকান্দায় ফসলী মাঠে শিলাবৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সবজিসহ ইরি-বোরো আবাদের বিজতলা নিয়েও শঙ্কায় কৃষকরা।
কৃষক বাচ্চু মিয়া জানান, গেল কয়েকবার বন্যার কারনে ফসলসহ শীতকালীন সবজি রোপন করেছেন দফায় দফায়। এরপরও এখন আবার শেষ সময়ে এই শিলাবৃষ্টি। রাতের বেলার এই শিলাবৃষ্টিতে ক্ষতিয়ে দেখছেন বলে জানান। যদিও জমিতে বেশি ধরনের ক্ষতি এখনো পাননি। তবে ধান তুললে বোঝা যাবে চোছা হবে কিনা অথবা ঝরে পড়বে কিনা।
কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, অক্টোবরে পাহাড়ি ঢলে ময়মনসিংহের পরে নেত্রকোনায় সৃষ্ট বন্যায় কৃষি জমি তলিয়েছে ২৪ হাজার ৬৬৭ হেক্টর। যা টাকার অংকে তিন’শ কোটি টাকার উপরে। জেলার ধানেল ক্ষতিগ্রস্থ মোট কৃষক পরিবার ৬৯ টি। এছাড়াও আগাম ও শীতকালীন সবজি ১ হাজার ৪৬৫ হেক্টর আবাদ হলেও ১৭৭ হেক্টর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। যার আনুমানিক বাজার মুল্য ১২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার হিসাবে আগাম এই রবি শস্য ক্ষতি হয়েছে। এতে মোট ৫ হাজার ৩ শ জনের মতো কৃষক ক্ষতিগ্রস্থ হন। সর্বমোট ৩১৩ কোটি টাকার কৃষিতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এই গেল বন্যায়।
তবে শিলাবৃষ্টির বিষয়ে কৃষি বিভাগের উপ পরিচালক কৃষিবিদ মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, রাতের শিলা বৃষ্টির জন্য সকাল থেকেই সবাই মাঠে খোঁজ নিচ্ছে। বিকেল পর্যন্ত সম্পূর্ন তথ্য পাওযা যাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কি হয়নি। তবে এখন পর্যন্ত কোন কৃষক ক্ষতির কথা জানান নি।