নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় দোকানঘর দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের অর্ধশত আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৩ জনকে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে ৫ জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে থানার সামনে ও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষ হলেও পুলিশের নিস্ক্রিয় ভূমিকা থ্কাায় এক পর্যায়ে সেনাবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বুধবার রাতে কেন্দুয়া উপজেলার থানা ও বিএনপি কার্যালয়ের সামনে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষ্যদর্শী, স্থানীয় ও বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে কথা জানা গেছে, কেন্দুয়া উপজেলা মধ্য বাজারে থাকা সোহেল আমিন নামের এক ব্যক্তির ‘কিশোরগঞ্জের দোকান’ নামে বড় একটি দোকানঘর রয়েছে। রাতে দোকানটিকে মালিকের ছেলের কাছ থেকে কেনা দাবী করে দিগদাইর গ্রামের বাসিন্ধা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক নাসির খন্দকারের ভাই যুবলীগ নেতা আল আমিন খন্দকার দখল করতে যান।
এসময় দোকান মালিক সোহেলের পক্ষে দখল থেকে রক্ষা করতে যান চকবাট্টা গ্রামের বিএনপি নেতা জসিম উদ্দিন ভুইয়া। এক পর্যায়ে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। পরে দুই গ্রামের বাসিন্ধাদের মাঝে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। নাসির খন্দকার এবং জসিম উদ্দিন ভূইয়া দুজনই কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নেত্রকোনা জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী গ্রুপের নেতা।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সচিব ড. রফিকুল ইসলাম হিলালী জানান, গত ৪০ বছর ধরে ক্রয়সূত্রে দোকানের মালিক সোহেল আমিনরা। কিশোরগঞ্জের দোকান নামে বড় দোকানটির ঐতিহ্য রয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতাকালে যুবলীগ নেতা আল আমিন খন্দকার দোকানটি বিক্রেতার ছেলের কাছ থেকে ক্রয়ের দাবী করেন। কিন্তু একই দোকান বাবা বিক্রি করেছে পরে ছেলে বিক্রি করেছে এমন কথা অবান্তর। আল আমিন খন্দকার যুবদলের নাসির খন্দকারের ভাই হলেও তিনি প্রথমে ছাত্রদল থাকলেও পরবর্তীতে আওয়ামীলীগের সময় যুবলীগ নেতা হয়ে বিগত সময়ে নানা ধরনের ক্ষমতা দেখিয়েছে। কয়েক দফায় এ নিয়ে দরবারও হয়েছে। নাসিরও তার ভাইয়ের এমন কাজের বিপক্ষে।
বুধবার আবারও ওই দোকানের তালা খুলতে যায় আল আমিন খন্দকার। পরে নাসির বাধা দিলে চাচাতো ভাই পৌর যুবদলের আহবায়ক উজ্জ্বল খন্দকাররকে নিয়ে যায়। যে কারণে এলাকার মানুষ অন্যায় কাজে বাধা দিলে উজ্জ্বল খন্দকারকে নিয়ে দুলাল চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফরহাদ ভুইয়ার সহযোগিতা পায় আল আমিন খন্দকার। শোনা কথা গুলিও নাকি করেছে।
এদিকে বাজার কমিটির সম্পাদক লাইমুন হোসেন ভুইয়া জানান, রফিকুল ইসলাম হিলালি যা বলেছেন সব অসত্য। দুলাল চেয়ারম্যানের ভাতিজা ফরহাদ ভুইয়া এলাকাতেই নেই।
এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার ওসি মোঃ মিজানুর রহমান আকন্দ স্থানীয় সাংবাদিকদের জানান, কেন্দুয়া পৌর শহরের মধ্যবাজারে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে পুলিশ এবং সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ করে। এ বিষয়ে অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।