নেত্রকোনা জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার কির্ত্তনখোলা বাঁধটি হুমকির মুখে থাকায় কৃষকরা একদিকে প্রতিদিন বাঁধ মেরামত করছেন অন্যদিকে কাটছেন কাঁচাপাকা ধান। কষ্টের সীমা নেই হাওরাঞ্চলের কৃষকদের।
বছরের একমাত্র ফসল হওয়ায় গত সাতদিন ধরে টানা বাঁধ রক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন ওই অঞ্চলের কৃষকেরা। তারা জানান, রমজানের শুরু থেকে পাহাড়ি ঢলের কারনে ধনু নদের পানি বেড়ে যাওয়ায় নদী তীরবর্তী ফসল ডুবে গেছে। সেইসাথে হাওরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় কির্ত্তণখোলা ফসলরক্ষা বেরিবাঁধ ফাটলের কারনে শঙ্কায় দিনরাত বাঁেধর উপরেই থাকছেন তারা।
কৃষকদের ফসল বাঁচাতে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ স্থানীয় প্রশাসন বাঁশ চাটি দিয়ে বাঁধ মেরামতে সহযোগিতা করলেও শঙ্কা কাটছে না কৃষকের। প্রিিতদিন স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধ মেরামত করে শত শত কৃষক। পরদিন সকালেই বাঁধে দেখা যায় ফাটলের। এক একদিন এক এক জায়গায় এমন চিত্র দেখে হতভম্ব কৃষকরা।
তবে গত দিনগুলোর চেয়ে শনিবার (৯ মার্চ) পানির চাপ কম থাকায় কাঁচা ধান কাটা কিছুটা কমিয়েছেন কৃষকরা। এদিকে কৃষকদের কথা ভেবে দুর দূরান্ত থেকে শ্রমিকরাও এসে কাঁচাপাকা ধানই তারা কেটে দিচ্ছেন।
জানা গেছে, খালিয়াজুরী সদর ও চাকুয়া ইউনিয়ন বেষ্টিত সবচেয়ে বড় ৫৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের মধ্যে কির্ত্তণখোলা সাত কিলোমিটার র্দীঘ বাঁধটি প্রতিবছরই ভাঙ্গে আর কম বেশি ফসলের ক্ষতি হয়।
এবারো পাহাড়ি ঢলে নদ নদীগুলোর পানি বৃদ্ধি পেয়ে ভাঙ্গনের কবলে পড়েছে ওই একই জায়গার বাঁধ। বাধের বিভিন্ন স্থানে প্রশস্তের পরিমাণও ভিন্ন। তারমধ্যে প্রায় ১২ ফুট প্রশস্তের মধ্যে সাত কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কিছু কিছু জায়গায় ৮ থেকে ৯ ফুট ধসে গেছে। বাকী ২ থেকে ৩ ফুট প্রশস্ত আটকে রেখেছে পানি।
যে কারণে প্রতিদিন বিভিন্ন পয়েন্টে ফাটল অব্যাহত থাকায় বাঁধ মেরামত কাজ করতেই হচ্ছে তাদের। এদিকে এবছর বাঁধের কৃষকদের পাশাপাশি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারাও প্রায়দিন করছেন রাত্রি যাপন।
বাঁধ এলাকায় থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাব এসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার মো. মিজানুর রহমান জানান, তারা স্থানীয় প্রশাসনসহ কৃষকদের সহযোগিতায় এখনো বাঁধটি টিকিয়ে রাখতে পারছেন। যে কারনে ফসল হানি থেকে বেঁচে গেছেন। তবে পানির চাপ কমতে থাকলে বাঁধটি টিকে থাকবে বলেও জানান তিনি।