পারিবারিক কলহের জের ধরে বউ শ্বাশুড়ির দ্বন্দ্বের কারণে সৃষ্ট ঝগড়া থামাতে গিয়ে খুন হলেন নিরপরাধ প্রতিবেশী এক ইমাম শফিকুল ইসলাম (৬০) নামের বৃদ্ধ। এ ঘটনায় এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। নিহতের পরিবার বলছে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এলাকাবাসী বলছেন ঝগড়া থামাতে গিয়ে খুন হয়েছেন। তবে এমন ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করছেন সকলেই। রোববার রাতে জেলার হাওরাঞ্চলের মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামে ঘটে এই ঘটনা।
জানা গেছে, হাওরাঞ্চল নেত্রকোনা জেলার মদন উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের রুদ্রশ্রী গ্রামের এলাল উদ্দিনের ছেলে মোবারকের সাথে ফতেপুর গ্রামের আব্দুল মান্নাফের মেয়ে মুন্না আক্তারের বিয়ে হয় গত প্রায় তিন বছর আগে।
কিন্তু বছর খানেক ধরে তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের সৃষ্টি হয়। গত বছর খানেক আগে বাবার বাড়ি চলে যায়। এরপর স্থানীয়রা মীমাংসা করে দেন। কিন্তু থামেনি তাদের কলহ বিবাদ। এরই জেরে গতকাল রোববার সকাল থেকে দফায় দফায় ঝগড়ার ঘটনা ঘটে। ঝগড়ার এক পর্যায়ে স্বামীর মারধরের পরে প্রতিবেশী ইমাম শফিকুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে আশ্রয় নেন মুন্না আক্তার।
পরে মীমাংসা করে ইমাম ঝগড়া মিটিয়ে বাড়ি পৌঁছে দেন ওই গৃহবধূকে। কিন্তু সন্ধ্যার পর মুন্না আক্তার বাবার বাড়ি চলে গেলে বাবার বাড়ি গিয়ে নালিশ করেন। এরপর বাবার বাড়ির লোকজন রাতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এসে হামলা করে মোবারকের বাড়িতে। এসময় আট জন আহত হয়।
পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে মদন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রতিবেশী ইমাম শফিকুল ইসলামকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদেরকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে দেখেন সবাই পালিয়ে গেছে। এমনকি ঝগড়ায় লিপ্ত হওয়া মুন্না আক্তারও।
পরে অন্যদের কাউকে না পেয়ে মোবারকের শ্বাশুড়ি শরিফা আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। এদিকে নিহত শফিকুল ইসলামমের মেয়ে সালমা আক্তার জানায়, তার বাবা কয়েকবার ঝগড়া মিটিয়ে দিয়ে আসেন। রোববার রাতে এশার নামাজ পড়ে ঘরে আসলে ডেকে নিয়ে হত্যা করে। তিনি এ ঘটনার বিচার দাবী করেন।
এদিকে এলাকাবাসী ও স্থানীয়রা জানান, মোবারকের স্ত্রীর সাথে প্রায় সময় ঝগড়া বিবাদ হতো। এরই জেরে ফেরাতে গিয়ে একজন আলেম মানুষ মারা গেলেন। তারাও এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবী করছেন।
মদন থানার ওসি মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন এ ঘটনায় একজনকে জিজ্ঞাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। আহতদেরকে ময়মনসিংহে পাঠিয়েছে।