সোহান আহমেদ:
মেঘাালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টির কারণে খালিয়াজুরীর চলতি ধনু নদীর পানি হঠাৎ করেই আশংকাজনক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমতাবস্থায় সন্ধ্যায় প্রায় বিপদৎসীমার কাছাকাছি চলে আসতে শুরু করেছে।
এমতাবস্থায় ফসল রক্ষা বেরী বাঁধের প্রতি বিশেষ নজর রাখাতে সকল পিআইসি সদস্যবৃন্দ ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়েছেন খালিয়জুরী উপজেলা প্রশাসন।
শনিবার বিকেলে এক ফেইসবুক স্ট্যাটাসে এমন আশঙ্কার কথা উল্লেখ করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফুল ইসলাম। এ ছাড়াও সময় মতো পানি ও বৃষ্টির অভাবে আগাম লাগানো জমিতে ধান চিটা হওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে।
সবকিছু মিলে একমাত্র ফসলের ওপর নির্ভরশীল মদন-মোহনগঞ্জ-খালিয়াজুরী হাওরাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ। আগাম বন্যার এমন আশঙ্কায় অনেকটাই দিশেহারা হয়ে পরছেন কৃষকরা। সবে মাত্র ধানের শীষ এসেছে জমিতে, কাটাই উপযুগী হতে সময় লাগবে আরো অন্তুত ১৫/২০ দিন। জেলার হাওরাঞ্চলের মাঝে সবচেয়ে গভিরতা হচ্ছে খালিয়াজুরী।
এখানে ২৯৭.৬৪ বর্গকিলোমিটারের অংশের মাঝে আবাদী জমির পরিমান ৪৮ হাজার ৩২০ একর, এর মধ্যে একফসলী জমি ৪৭,৪৯০ একর । এছাড়াও অনাবাদি জমি রয়েছে ৭,৭৩০ একর , পতিত জমি ৮,৪১৪ একর। টানা ৭ মাস শুকনো থাকা জমিতে ধানের আগে অন্য কোন ফসল আবাদ করতে পারলেই হয়তো খালিয়জুরীর কৃষকদের শুধুমাত্র এক ফসলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হতোনা। এমন অভিযোগ অসংখ্য হাওরবাসীর। যদিও উপজেলা প্রশাসন গত বছর অনাবাদি কিছু জমিতে সবজি চাষের উদ্যোগ নিলেও শেষ পর্যন্ত শুধুমাত্র বিপণন ব্যবস্থার অভাবে উৎসাহ হারিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এদিকে ঢলের পানি বৃদ্ধি বিষয়ে জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী এল এম সৈকত জানান, মেঘালয় পাহাড় ও স্থানীয় ভাবে বৃষ্টি হওয়ায় গেল কয়েকদিন ধরেই কংশ, ধনুসহ বিভিন্ন নদনদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে।
এমতাবস্থায় প্রতিটি বেরীবাঁধ এলাকায় পিআইসিদের সাথে পানি উন্নয়ন বোর্ডের লোকজন সার্বক্ষনিক তদারকি করছেন। তবে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে।
এ ব্যাপারে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান জানান, পানি বৃদ্ধিন খবর পেয়ে দ্রæত হাওরাঞ্চলে ছুটে গিয়ে কৃষক ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ প্রশাসনের সাথে মতবিনমিয় করেছেন।
সেইসাথে বাধ ক্ষতিগ্রস্থের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে মাঠি ভর্তি ৮হাজার বস্তা জিয়ো ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলেও নিশ্চিত করেছেন তিনি। জেলা প্রশাসক রাত ৮টা পর্যন্ত খালিয়াজুরীরর গুরুত্বপূর্ণ বাঁধ কৃর্তনখোলা নাউটানাসহ বিভিন্ন বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করছেন বলে জানা গেছে।