ভোক্তাদের কথা মাথায় রেখেই নেত্রকোনায় জেলা প্রশাসন থেকে পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রির সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে। এতে স্বস্থি ফিরেছে ক্রেতাদের মাঝে। তাদের অভিযোগ বিক্রেতারা বাধ্য করেন কেজিতে নিতে। তবে ব্যবসায়ীরা এ সিদ্ধান্তে দেখাচ্ছে নানা অযুহাত। তাদের দাবী কেজি দরে বিক্রি করা সহজ এবং ক্রেতাদের লাভ বেশি।
সোমবার (১১ মার্চ) থেকে জেলা শহরসহ প্রতিটি বাজারে ওজনের পরিবর্তে পিস হিসেবে তরমুজ বিক্রি করা হবে। গত রবিবার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বাজার মনিটরিং কমিটিসহ ব্যবাসয়ী নেতৃবৃন্দ ও খুচরা বিক্রেতাসহ সকলের অংশগ্রহনে এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
জেলা সমাজ সেবা অধিদপ্তর, জেলার ১০ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তাগণ, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, চেম্বার অব কমার্স, বিজিবি, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, প্রেসক্লাব সম্পাদকসহ জেলার শীর্ষ স্থানীয় তরমুজ ব্যবাসয়ীরা এ সভায় উপস্থিত ছিলেন।
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সঞ্চালনায় সাধারণ পাবলিকের মতামতের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান এ সিদ্ধান্ত আনয়ন করেন। তিনি বলেন ক্রেতাদের যেভাবে সন্তুষ্টি হয় সেটিই বিবেচনা করতে হবে।
এসময় অন্যদের মাঝে বক্তব্য রাখেন, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তার, মদন উপজেলা নির্বাহী কর্মকতা বুলবুল আহমেদ, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপ পরিচালক শফিকুর রহমান সরকার, জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. শাহ আলম, চেম্বার অব কমার্স সভাপতি মো. আব্দুল ওয়াহেদ, সাংবাদিক আলপনা বেগম ও তরমুজ বিক্রেতা কামাল আহমেদ প্রমুখ।
এদিকে সোমবার শহরের মাছ বাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা কেজি বাদ দিয়ে প্রতি তরমুজ বিক্রিতে খুশি হয়েছেন। তারা বলছেন ব্যবসায়ীরা পিস হিসেবে কিনে পাবলিককে দেয় কেজি দরে। এতে করে কয়েকগুন টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
ভোক্তা মৃণাল কান্তি চত্রবর্তী ও শ্যামলেন্দু পাল বলেন, আমার প্রয়োজন দুই কেজি। কিন্তু তারা তখন মাপে যা হয় তাই দেয়। সেটাই নিতে হয় বাধ্য হয়ে। কেটে দেয়া যায় না ফলে ইচ্ছা এবং টাকা না থাকলেও বাধ্য হয়ে অতিরিক্তটা নেয়া লাগে।
অন্যদিকে বিক্রেতা হাবিবুর রহমান ও কামাল আহমেদ বলছেন, ক্রেতারাই নাকি কেজি দরে নিতে চান। পিস তরমুজ অনেকে নিতে চান না। ঝগড়া করেন। তবে তাদের এই ব্যাখ্যার সাথে বাস্তবে কোন প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
কারণ জানতে চাইলে ব্যবসায়ীরা জানান, পিস হিসেবে দরাদরি করতে হয়। আমরা কিনে আনি যা দিয়ে তাতে করে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিটি তরমুজে সাড়ে তিনশ টাকা দাম আসে। কিন্তু ৪০ টাকা কেজি করে নিলেও মানুষেরই লাভ হতো। এক একটা তরমুজ নিচে ৫ কেজি থেকে শুরু করে ১৬/১৮ কেজি পর্যন্ত হয়।
এদিকে ক্রেতারা বলছেন ব্যবাসীদের দামে হলেও কেজি হিসেবে ৫ থেকে ৬ শ টাকাও হয় ওজন অনুযায়ী। যেটি ভোক্তাদের সাথে প্রতারণা। তারা পিস হিসেবে আনছে সেভাবেই বিক্রি করুক। এতে তাদের বেশি লাভ হলেও ক্রেতাদের কোন আপত্তি নেই।