Wednesday, April 17, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদনেত্রকোনা সদর উপজেলানেত্রকোনায় শোকের অনুষ্ঠানে মাংস নিয়ে দ্বন্দের জেরে সংঘর্ষে আহত ৮

নেত্রকোনায় শোকের অনুষ্ঠানে মাংস নিয়ে দ্বন্দের জেরে সংঘর্ষে আহত ৮

নেত্রকোনায় শোকের অনুষ্ঠানে গণভোজকে কেন্দ্র করে চল্লিশা ইউনিয়নের যুবলীগ ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের মর্ধ্যে সংঘর্ষে দুই পক্ষেরই অন্তত ৮ জন আহত হয়েছে। গুরুতর আহত চারজনকে নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতালে ভর্তি আহতরা হলেন, জেলা ছাত্রলীগের সদস্য সুলতান মাহমুদ মিলন, চল্লিশা ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি আব্দুল জলিল, সম্পাদক সাইফুর রহমান লালু ও যুগ্ম সম্পাদক যুবায়ের জনি।

১৫ আগস্ট সোমবার দুপুরে জেলার সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বাগরা গ্রামে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের মহিষের মাংস দেয়াকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ, হাসপাতাল, আহত ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান চল্লিশা ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহমান শোক উপলক্ষে ওয়ার্ড পর্যায়ে গণভোজের জন্য একটি মহিষ জবাই করে ৯টি ওয়ার্ডে সমান ভাগ করে দেন। আর এই মাংস প্রতি ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগের সভাপতি সম্পাদকরা নিয়ে যান। সকালে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর পর শুরু হয় রান্না।

এসময় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জিম খান পাঠান বিমলের সাথে ইউনিয়ন যুবলীগ ছাত্রলীগের ২০ থেকে ২৫ জন নেতাকর্মী নিয়ে বাগরা যায়। সেখানে বর্তমান সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতাউর রহমান খান মানিকের ভাতিজা জেলা ছাত্রলীগের সদস্য মিলনের সাথে তর্কাতর্কি হয়। এক পর্যায়ে মিলন আহত হলে গ্রমের মানুষ এসে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয় পক্ষেরই অন্তত আটজন আহত হন। আহতদের মধ্যে গুরুতর চারজনকে নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। তার মধ্যে তিনিজনই জিএম খান পাঠান বিমলের পক্ষের।

এ দিকে উভয় পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করে। তবে গণ ভোজের জন্য প্রস্তুত রাখা চেয়ার এবং থালা বাসন ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান।

চল্লিশা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, সকালে যুবলীগের সভাপতি জলিল, লালুসহ আরোও একজন গিয়েছিলো বাগরা বজারে। দুটি দোয়া মাহফিল হচ্ছে। সেখানে ঘুরতে গেছে। যুবলীগের সভাপতি যেতেই পারে। সেখানে মিলন বলে কোন ঝামেলা হবে না। তারা চলে আসছে। সাবেক সম্পাদক বিমল মামা গেলে সেখানে তিনিও বলেন দোয়া দুটো হতে পারে। এরপর আমরা ঘুরে আসতে গেলাম। সেখানে গেলে বিপ্লব খা বলছে তাদের মাংস মিলন নাকি চুরি করে নিয়ে গেছে। এটিই তাদেরকে জিগেস করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু মিলন গ্রুপ জনিকে মারধর করে। পরে আমি নিয়ে আসি। এরপর আবার জলিলকে মারে।

এদিকে আহত জেলা ছাত্রলীগের সদস্য সুলতান মাহমুদ মিলন জানায়, সকাল থেকে ভালো ভাবেই প্রোগ্রাম চলছে। ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন মাংস এনেছেন। তারা রান্না করছে আমি বসে আছি। এর মধ্যে আমাকে পিছন থেকে এসে থুতনিতে ধরে হুমকি ধমকি দিয়ে চশমা ভেঙ্গে মারধর শুরু করে। তারা কে গাতি ইউনিয়ন থেকে এখানে ২০ থেকে ২৫ টি হোন্ডা নিয়ে এসে মহড়া দেয়া শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুর স্মরনে একটা দোয়া মাহফিলে এমন হামলা আশা করিনি।

তাদের অধিপত্য দেখাতেই স্থানীয় কয়েকজনকে নিয়ে অন্য ইউনিয়ন থেকে এখানে মাসল পাওয়ার দেখাতে এসেছে। চেয়ারম্যান সব ওয়ার্ডে মাংস দিয়েছে আওয়ামীলীগ নেতাদের কাছে। আমার কাছেও না। কিন্তু তাদের এটি পূর্ব পরিকল্পনা ছিলো। পরে আমার উপর হামলা দেখে রান্না রেখে এলাকাবাসী এসে তাদেরকে ধাওয়া করেছে। আমি আহত অবস্থাতেও তাদেরকে যেন কিছু না করে গ্রামবাসীকে অনুরোধ করি।

এ ব্যাপারে সদর উপজেলার চল্লিশা ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ড আলীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রতন জানান, চেয়ারম্যান মাংস দিয়েছে আমাকে। আমার নামে তালিকা রয়েছে। সুলতান মাহমুদ মিলন আমার সাথে ছিলো। সে বসে রান্না দেখছে। এমন অবস্থায় তারা এসে আমাকে জিগেস করে মিলন কোথায়। আমি ভাবছি কথা বললে। কিন্তু না তারা মিলনের উপর হামলা শুরু করে দিয়েছে। এটা উদ্যেশ্য প্রণোদিত। তা নাহলে আমি ওয়ার্ডের সেক্রেটারি। আমার কাছে মাংস দিয়েছে তারা কেন এসে মিলনকে মারবে। তারা কেন মাংস নিতে চাইবে।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান মাহবুবুর রহামনের সাথে কথা বলতে চাইলে একাধিকবার মুঠোফোনে চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। এদিকে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। আহত হয়েছে উভয় পক্ষের চারজন। অভিযোগ দিলেই আমরা ব্যবস্থা নিবো।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments