নেত্রকোনার হাওর অঞ্চলে কাঁচা ধান কেটে ফেললেও পাহাড়ের ধান পেকে ঝরে পড়ছে। শ্রমিক সংকটে পাহাড়ের পাকা ধান কাটতে পারছে না কৃষকরা। একদিকে জমিতে পানি চলে আসছে, অন্যদিকে ধান নুয়ে ঝরে পড়ছে। তার ওপর দুদিন ধরে অশনির প্রভাবে পড়ছে বৃষ্টি।
এছাড়াও ধানের দামের সাথে শ্রমিক মজুরির মিল নেই। যে কারণে ধান কাটতে না পেরে কৃষক নিজেরাই বাধ্য হয়ে বৃষ্টিতে ভিজেই ধান কাটছেন। দেখা নেই সরকারের দেওয়া ফসল কাটা হারভেস্টার মেশিনেরও। ফলে ঈদে বাড়ি আসা ছেলেদের নিয়েই মাঠে নেমেছেন দুর্গাপুর অঞ্চলের অনেক কৃষক।
উপজেলার চন্ডিগড়, সাতাশি ও কুল্লাগড়াসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে কোনো শ্রমিক পাওয়া যায়নি। মো. শুক্কুর আলী, শাহজাহান ও লাক মিয়াসহ কৃষকরা জানান, যে জমি কাঠাপ্রতি চার থেকে পাঁচশত টাকায় আগে কাটা যেতো, এখন তা আট থেকে হাজারে উন্নীত হয়েছে। এদিকে ধানের দাম ছয় থেকে সাতশ টাকা। ফলে এক মণ ধানের দামের চেয়েও একজন শ্রমিকের মজুরি চাচ্ছে এবার বেশি।
যে কারণে গত ১০/১২ দিন আগে ধান কাটার কথা থাকলেও আমরা এখনো কাটতে পারছি না। ঈদের ছুটিতে বাড়ি আসছিল কলেজপড়ুয়া ছেলেরা। এখন এমন অবস্থা দেখে তারাও ধান কাটছে বলে জানান শুক্কুর আলী। এদিকে ভারী বৃষ্টি হলে সব ধান নষ্ট হয়ে ঝড়ে পড়ে যাবে। তাছাড়া জমিতে পানি উঠে যাওয়ায় ধান কাটতেও প্রচণ্ড কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে, মেশিনের ব্যাপারে তারা বলেন, মেশিন যে কোথায় কাটছে, আমরা দেখতে পাচ্ছি না। মেশিন পেলে হয়তো অনেক বেশি ধান নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচাতে পারতাম। এবার ধানের ফলন ভালো হলেও কাটার সঙ্কটে এবং দাম কমে আমাদের লস হচ্ছে।
দুর্গাপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলছেন, উপজেলায় ৮টি হারভেস্টার মেশিন থাকলেও আবহাওয়ার কারণে দুদিন ধরে কাজ করতে পারছে না। উপজেলার ১৮০০ শ্রমিক থাকলেও হাওর অঞ্চলে ধান কাটতে চলে যাওয়ায় এমন সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অর্ধেকের বেশি ধান কাটা হয়ে গেছে দাবি করে তিনি বলেন, আকাশের অবস্থা ভালো হলে কয়েক দিনে কেটে ফেলা সম্ভব হবে।
তিনি আরও জানান, এবছর চলতি মৌসুমে ১৭ হাজার ৬১০ হেক্টর জমি সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরে আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে এখন পর্যন্ত ১০ হাজার ২১৩ হেক্টর অর্থাৎ ৫৮ ভাগ জমির ধান কর্তন করা হয়েছে।