আগামীকাল শুক্রবারের প্রাথমিকে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ লিখিত পরীক্ষাকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু করতে স্থানীয় প্রশাসন এক গণ-বিজ্ঞপ্তি জারী করেছে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরদিন অর্থাৎ পরীক্ষা শেষে বেলা ১২টা পর্যন্ত জেলার সকল ফটোকপির দোকান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে বলে গণ-বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। জেলা প্রশাসক শাহেদ পারভেজ স্বাক্ষরিত গণ-বিজ্ঞপ্তিটি বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে প্রচার করা হয়। এতে করে দুএকজনের বিষয়টি পছন্দ না হলেও বেশির ভাগ দোকানী এবং পরীক্ষার্থী ও কোচিং সেন্টারের মালিক কর্তৃপক্ষ সাধুবাদ জানিয়েছে।
এদিকে হঠাৎ ফটোকপির দোকান বন্ধ থাকায় ভোগান্তির কথা উল্লেখ করে অনেকের গুজব ছড়ানোর বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক জানান, হঠাৎ বন্ধের নির্দেশ না দিলে এরা আগেই সব সেরে ফেলে। প্রতিবার কোন ভাবেই নিয়োগ পরীক্ষায় অস্বাধু অবলম্বন ফেরানো যায় না। তাই হঠাৎ বন্ধ দেয়াতে অল্প সময়ে মানুষ মারা যাবে না বলেও তিনি জানান।
নেত্রকোনা জেলা শহরের মোক্তারপাড়া প্রেসক্লাব ভবনের নীচের রাসেল ফটোকপির দোকানের মালিক মো. রাসেল জানান, আমি এমনিতেই শীতের রাতে সন্ধ্যার দিকেই দোকান বন্ধ করে দেই। এছাড়া শুক্রবার ছুটির দিন। রাতে তেমন কোন কাজ নেই। শুক্রবারেও তেমন কাজ হয় না। দুপুর থেকে তো চালু রাখতেই পারবে। এসকল নিয়োগ পরীক্ষার জন্য এমন একটি উদ্যোগ নেয়ায় প্রশাসনকে তিনি সাধুবাদ জানান।
এদিকে পরীক্ষায় অংশগ্রহনকারী এক শিক্ষার্থী মির্জা হৃদয় সাগর জানান, খুবই যোগপযোগি একটি সিদ্ধান্ত হয়েছে এবার। তা না হলে এদিনে ফটোকপি এবং কিছু অস্বাধু কোচিং শিক্ষক রমরমা বাণিজ্য করে। পড়াশোনা করা ছেলে মেয়েদের থেকে অনেক সময় এসবের কারণে অযোগ্যরা এগিয়ে যায়। আমি এ জন্য একজন পরীক্ষার্থী হয়ে প্রশাসেনর এমন কাজে খুশি হয়েছি। আশা করবো বাকী টুকুও যেনো ফেয়ার হয়।
এদিকে প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নিয়োগ ২০২৩-এর ২য় গ্রুপের (রাজশাহী, খুলনা ও ময়মনসিংহ বিভাগ) লিখিত পরীক্ষা আগামী ২ ফেব্রুয়ারী সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। “পরীক্ষা সুষ্ঠু ও স্বচ্ছতার সঙ্গে অনুষ্ঠানের জন্য ১ ফেব্রæয়ারি সন্ধ্যা ৬টা থেকে ২ ফেব্রæয়ারি বেলা ১২টা পর্যন্ত সকল ফটোকপির দোকান ও কোচিং সেন্টার বন্ধ থাকবে।”
গণবিজ্ঞপ্তি জারির পরপরই জেলার সব ফটোকপির দোকান বন্ধ হতে থাকে। এদিকে কোচিং সেন্টারগুলো থেকে শিক্ষার্থীদেরকেও জানিয়ে দেন শিক্ষকরা।
মোক্তারপাড়া এলাকার কনিকা কোচিং একাডেমির পরিচালক জোনয়েদ হাসান টিটু জানান এটি একটি ভালো উদ্যোগ। এতে করে যোগ্যরা পরীক্ষা দিতে স্বাচ্ছন্যবোধ করবে। এক বেলা কোচিং বন্ধ থাকলে এমন কোন ক্ষতি হবে না বলেও তিনি মনে করেন। সেইসাথে তিনিও প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
এ ব্যাপারে পদোন্নতি প্রাপ্ত উপ-সচিব নেত্রকোনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (আইসিটি) বিপিন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, যোগ্য মেধাবী শিক্ষিত শিক্ষক নিতে পারলে মেধাসম্পন্ন জাতি তৈরী হবে। এই লক্ষ্যেই এমন গণ-বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। এর আগে আমরা কয়েকদিন আগে সতর্কবার্তা দিয়েও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি বিভিন্ন সামজিক মাধ্যমে।