Tuesday, April 16, 2024
মূলপাতাকৃষি সংবাদপাহাড়ি বাঘাইর ধরা পড়লো ডোবায়

পাহাড়ি বাঘাইর ধরা পড়লো ডোবায়

বর্ষা মৌসুম তাই বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে নদীতে বেড়েছে পানি। আর এই পানিতে ভরে উঠেছে নদী তীরবর্তী পুকুরসহ খাল বিল ডোবা নালা। আর এমনি এক ডোবায় শখের বসে মাছ ধরতে গিয়ে এক কৃষক ধরে ফেললেন ২৯ কেজি ওজনের বাঘাইর। বড় আকৃতির পাহাড়ি নদী এবং ঝর্ণার মাছ এটি।

নেত্রকোনার পাহাড়ি সীমান্ত উপজেলা দুর্গাপুরের স্থানীয় এক কৃষকের জালে ধরা পড়েছে মাছটি । শুক্রবার সকালে কাকৈরগড়া ইউনিয়নের গন্ডাবের গ্রামের স্থানীয় কৃষক হারুন বিশ্বাস মাছটিকে শিকার করে ফেলেন তার জাল দিয়ে। মাছটি প্রায় ২৯ কেজি ওজনের৷ নামটিও বাঘাইর।

স্থানীয়রা জানান, ডোবার পাশ দিয়ে বয়ে চলা কংস নদীতে পানি বাড়ায় নদীর সাথে সংযোগ থাকায় এসকল ডোবা নালাগুলোতে পানি জমেছে। সহজেই নদীর পানিও যাতায়াত করে এসকল ডোবায় । ফলে এসব ডোবাতে পেশাদার জেলে ছাড়াও সৌখিন মৎস্য শিকারীরা শিকারে নামেন মৌসুমটিতে। শখের বসেই সকালে অন্যদের দেখাদেখি কৃষক হারুন বিশ্বাস তার বাড়ির পাশেই ডোবাতে সাধারণ একটি নেট জাল নিয়ে নামেন মাছ শিকারে।

জাল দিয়ে ছোট বড় বেশ কিছু মাছ শিকারের পর হঠাৎ বড় একটি কিছুতে আটকে পড়েছে তার জাল।
প্রথমে গাছের গুড়ালি ভেবে পাত্তা না দিলেও জাল ধরে উপরে তোলার চেষ্টা করলে নড়াচাড়া করায় সন্দেহ শুরু হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় দীর্ঘক্ষনের চেষ্টায় উপরে তোলতে সক্ষম হন মাছটিকে। শিকারী সহ মাছটি যারা ধরে তুলেছেন সবাই এমন বিরল আর বিরাট আকৃতির মাছ পেয়ে দারুণ খুশি।

আর এই মাছধরার খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়তে থাকলে অনেকেই দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন মাছটি দেখতে। তখন ছুটে যান মাছ ব্যবসায়ীরও। পরে ২৯ কেজি ওজনের বাঘাইর মাছটির দাম ওঠে ৪৬ হাজার টাকা পর্যন্ত। তবে বাজারে মাছটি বিক্রি না করলেও এলাকাবাসী ৩৬ হাজার টাকা মূল্য ধার্য্য করে ভাগ ভাটোরা করে নেন বিশালাকৃতির বাঘাইরটি।

এ সকল বাঘাইর সাধারণত পাহাড়ি ঝরনা ও খরস্রোতা পাহাড়ি নদীর বড় বড় পাথরের গর্তেই জন্ম নেয় এবং বেড়ে ওঠে। অনেক সময় পানির স্রোতে মাছগুলো উজান থেকে ভাটিতে নেমে আসলে জেলেদের জালে ধরা পড়ে। এই থেকেই স্থানীয়রা ধারণা করছেন ভারতের মেঘালয়ের গারো পাহাড়ের পাড় ঘেঁষে বয়ে চলা পাহাড়ি নদী সোমেশ্বরীর নদী থেকেই হয়তো মাছটি এসে গেছে। কিছুদিন আগে পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি কিছুটা বৃদ্ধি পেলে তখন হয়তো ভাসতে ভাসতে কোনো এক সময় কংস নদী হয়ে এই ডোবার পানিতে আশ্রয় নেয়।

কৃষক হারুন বিশ্বাস জানান, শখের বশে ডোবায় মাছ ধরতে গিয়ে ছিলাম। কয়েকটি মাছ ধরার পর পানিতে কনুই জাল ফেলতেই হঠাৎ জালটি আটকে যায় । পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ধৈর্যের সাথে টেনে উপরে তুলতেই দেখি বিশাল আকৃতির মাছটি। মাছটি ২৯ কেজির কিছুটা কম হয়েছে। মাছ ব্যবসায়ীদের একজন ৪৫ হাজার দর-দাম করলেও এলাকাবাসীর কাছে ৩৬ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেই।

এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সুমন কুন্ডু জানান, সোমেশ্বরী নদী পাহাড়ি নদীতে আগে প্রায় সময়ই এমন বড় আকৃতির বাঘাইর মাছ সহ অন্যান্য মাছ পাওয়া যেতো। এই নদী উপজেলার ঝানজাইলে কংস নদীর সাথে মিলিত হয়েছে। দুই নদীর মোহনায় এখনো ছোট-বড় অনেক মাছ পাওয়া যায়। তবে কালের বিবর্তনে এখন আগের মত নদীতে বড় আকৃতির এমন মাছ তেমন একটা দেখা মেলে না। তবে দুই একটা হঠাৎ জেলেদের জালে ধরা পড়ে।

আমরা নদীর মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধিতে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছি যেন আগের মতো নদীতে মৎস্য সম্পদের ভাণ্ডার সৃষ্টি হয় এ ব্যাপারে আমাদের কাজ চলমান রয়েছে। আজকের এই বড় মাছ ধরার খবরটি আমাদের কাছেও ভালো লেগেছে।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments