সোহান আহমেদ:
মুজিব শতবর্ষে গৃহহীন থাকবে না কেউ, প্রধানমন্ত্রীর দেয়া এমন প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে দেশব্যাপী কাজ করছে জেলা প্রশাসন। এরই অংশ হিসেবে নেত্রকোনার ১০ টি উপজেলায় দুই হাজারেরও বেশি ছিন্নমূল পরিবারকে দেয়া হচ্ছে পাকা ঘর। গৃহ নির্মাণে দেশব্যাপী বিভিন্ন জেলায় নিম্নমানের কাজসহ অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও নেত্রকোনায় এখনো তেমন কোনো অনিয়ম গাফিলতি পরিলক্ষিত হয়নি বলে নিশ্চিত করেছে জেলা প্রশাসন। গৃহ নির্মাণ ও হস্তান্তরের ধারাবাহিকতায় নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল মদন উপজেলায় প্রথম পর্যায়ে ৫৬ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১০৫ জন গৃহহীন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাকা ঘর নির্মাণ কর দেয়া হয়েছে। এরমাঝে মদন দক্ষিণ পাড়া গ্রামে প্রায় অর্ধশত পরিবারের মাঝে এ সকল ঘর হস্তান্তর করার সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। ঘরগুলো হস্তান্তর করার আগেই নির্মাণ কাজের স্বচ্ছতা ও মানসম্মত মালামাল ব্যাবহার সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়েছেন জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান। শনিবার দুপুরে মদন উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় নির্মাণাধীন ঘরগুলো পরিদর্শন করেছেন তিনি। এ সময় উপকারভোগী পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেন জেলা প্রশাসক।
করোনা সংকটের মাঝেও প্রধানমন্ত্রীর দেয়া উপহার ঘর পেয়ে খুশি ছিন্নমূল পরিবারগুলো সদস্যরা। এ সময় জেলা প্রশাসককে সামনে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জন্য নামাজ পড়ে দোয়া করেন বলে জানান তারা। সেই সাথে জেলা ও স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান উপকার ভোগীরা। দীর্ঘদিন ধরে অন্যের বাড়িতে বসবাস করে ভিক্ষাবৃত্তি ও দিনমজুরি কাজ করে দিন কাটতো এসকল পরিবারের সদস্যদের। জীবনে কখনো কল্পনাও করেননি পাকা ঘরে থাকবেন তারা। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এমন উদ্যোগে জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পাকা ঝকঝকে ঘর পেয়ে খুশিতে আত্মহারা উপকার ভোগীরা। এ সময় আশ্রয়ন প্রকল্প পরিদর্শনকালে অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, মদন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার বুলবুল আহমেদ, পৌর মেয়র সাইফুল ইসলাম সাইফসহ উপজেলা প্রশাসনের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দ।
এ সময় জেলা প্রশাসক কাজি মোঃ আবদুর রহমান জানান, মুজিব বর্ষে গৃহহীন হতদরিদ্র পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া পাকা ঘরগুলো মানসম্পন্ন ভাবে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করতে নিরলসভাবে কাজ করছে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন। এরইমধ্যে প্রায় সবগুলো ঘরের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বসবাসও শুরু করেছেন উপকার ভোগীরা। ভবিষ্যতে নেত্রকোনার আশ্রায়ন প্রকল্পের গ্রামগুলো আদর্শ গ্রামে রুপান্তরিত হবে। প্রায় প্রতিটি প্রকল্পেই রাখা হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও মসজিদ মন্দির নির্মাণের জন্য পর্যাপ্ত স্থান। রয়েছে শিশুদের খেলাধুলার জন্য খোলা মাঠ। এখনো কিছু ঘরের কাজ বাকি থাকলেও মানসম্মত ভাবে নির্মাণ কাজ শেষ করতে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন তিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেয়া যুগান্তকারী পদক্ষেপ মাইলফলক হয়ে থাকবে বলেও জানান জেলা প্রশাসক। এ পর্যন্ত জেলায় প্রথম ধাপে ঘর পেয়েছেন ৯ শত ৬০ ও দ্বিতীয় পর্যায়ে আরো ৯শ ২৫ টি গৃহহীন পরিবারের মাঝে ঘর গুলো বিতরণ করা হচ্ছে।