পারিবারিক কলহের জেরে নেত্রকোনার পূর্বধলায় বাবার চোখের সামনেই মেয়ে আরিফা আক্তার (১৮) নিজের পেটে ছুরি বসিয়ে দেয়। এতে গুরুতর যখম হলে দ্রæত উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে মেয়ের মৃত্যু হয়। ঘটনাটি মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের নাটেরকোনা চরপাড়া আরিফার শশুরবাড়ী মড়ল বাড়িতে ঘটে।
এদিন একই উপজেলার আগিয়া ইউনিয়নের মহিষবেড় গ্রামের মোহাম্মদ আলী তার মেয়েকে দেখতে মেয়ের শ^শুর বাড়ি যান। পরে বাবার সামনেই এই ঘটনা ঘটালে তাকে দ্রæত হাসপাতালে নেয়া হয়। পরবর্তীতে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়।
পূর্বধলা থানার ওসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন যেহেতু বিকাল হয়ে গেছে তাই লাশ বুধবার ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের নিকট হস্তান্তর করা হবে। বাবার সাথে মান অভিমান ছিলো। বাবার সামনেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা বারবার বলেছি আপনি যেভাবে মামলা করবেন আমরা সেভাবেই ব্যবস্থা নেবো। পরে মেয়ের বাবা নিজেই বাদী হয়ে একটি অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেছেন।
পুলিশ পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ৭ মাস পূর্বে চরপাড়া গ্রামের মড়লবাড়ীর আব্দুল খালেকের প্রবাসী ছেলে সাগরের সাথে আরিফার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের মাঝে বনিবনা না হওয়ায় ঝামেলার সুত্রপাত ঘটে। এ নিয়ে প্রায় সময়ই ঝগড়া হতো। যা পারিবারিক কলহে রূপ নেয়। মঙ্গলবার দুপুরে মেয়েকে দেখতে বাবা মোহাম্মদ আলী মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গেলে বাবার সামনেই শ^শুরবাড়ির লোকজনের সাথে মেয়ের ঝগড়া হয়। পরে মেয়ে তার বাবার সাথে বাড়ি ফিরে আসতে চাইলে বাবা এতে আপত্তি জানায়। এ সময় ঘরে থাকা ফল কাটার ছোট ছুরি হাতে নিয়েই নিজের পেটে আঘাত করে। তাৎক্ষণিক শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায়, নিহত আরিফার পিতা মোহাম্মদ্দ আলী হাসপাতালের সামনে বসে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন আর বলছেন মেয়ে আমার বলছিলো আমাকে মেরে ফেলবে সাথে নিয়ে যাও। এসময় আমার মেয়ের চাচী শ^াশুরি ও জামইয়ের বোন আমাকেও মারধর করে আমার মেয়ের সামনেই। এরপরে আর আমি কিছু জানি না।