সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫
23.6 C
Netrakona
সোমবার, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৫
মূলপাতাঅন্যান্যবিশ্ব জলাভূমি দিবসে “বিল গোবিন্দ চাতল” বাঁচাতে কৃষকবন্ধন

বিশ্ব জলাভূমি দিবসে “বিল গোবিন্দ চাতল” বাঁচাতে কৃষকবন্ধন

বাস্তুতন্ত্র, স্থানীয় ও আঞ্চলিক তাপমাত্রা,বৃষ্টিপাত,মিঠাপানির আধার,ভ‚গর্ভস্থ পানির পুনর্ভরাট,কার্বন আধার,জলবায়ু অভিঘাত প্রশমন,অভিযোজন, জীবিকার উৎস, অর্থনৈথিক অবদান,পরিবেশ সুরক্ষাসহ মানুষের জীবনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় জলাভূমি প্রহরীর মতো কাজ করে।


প্রতিবছরের ন্যায় এবছরও বিশ্ব জলাভূমি দিবস পালিত হয়েছে ২ ফেব্রæয়ারি। এ বছরের প্রতিপাদ্য: ভবিষ্যত জীবনের জন্য জলাভূমি রক্ষা করি’। নেত্রকোনা শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি,সবুজ সংহতি, সেভ দ্যা এনিমেলস অব সুসং এর আয়োজনে ও বেসরকারী গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিকের সহযোগিতায় নেত্রকোনার অন্যতম বড় জলাভূমি “বিল গোবিন্দ চাতলের” মাঝে কৃষক কৃষানি,ভবিষ্যত প্রজন্ম, শিক্ষার্থীদের সাথে বিশ^ জলাভূমি দিবস পালন করা হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন গ্রামের প্রবীণ কৃষক মো. আব্দুল হামিদ। আলোচনা করেন নেত্রকোনা শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি ও আবু আব্বাস ডিগ্রী কলেজের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল কবীর সরকার,সবুজ সংহতির সাংগঠনিক সম্পাদক সাংবাদিক মির্জা হৃদয় সাগর, সেভ দ্যা এনিমেলস অব সুসং এর সভাপতি আরেফিন আহমেদ রাসেল, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার তানভীর হায়াৎ খান, বৃক্ষপ্রেমিক আব্দুল হামিদ কবিরাজ , বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো.অহিদুর রহমান ও বিল গোবিন্দ চাতল পাড়ের কৃষক কৃষানি ও যুবরা।
নেত্রকোনা চল্লিশা ইউনিয়নের ছোট কাইলাটি, সনুরা,কাইলাটি,বড়কাইলাটি, দড়িজাগি,বিশিউড়া,শ্রীধরপুর, বামনমুহা, রাজেন্দ্রপুর, হোসেনপুরসহ ১৩ টি গ্রাম বিলের পাশে উপস্থিত। কৃষক কৃষানিরা বলেন যে, বিলের মাছ,জলজ খাবার,জলজ প্রাণি,কৃষি সেচের জন্য আমরা বিলের উপর নির্ভরশীল ছিলাম। সেচের পানির চাহিদা মিঠাতো এই বিল। অনেক মানুষ এই বিলের উপর নির্ভরশীল। সারা বছরই পানি থাকে বিলের মাঝে। সারা বছরই মাছ ধরে খায় ও বিক্রি করতে অনেক পরিবার। তারা জানান যে এই বিলে প্রায় ৩০ প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। বর্তমানে বিলটি ভরাট হয়ে উচু হয়ে গেছে। সেচ দিয়ে মাছ ধরে, বিষ কীট নাশকের ব্যবহারের ফলে মাছের প্রজনন কমে গেছে। বিলের কিছু অংশ লীজ নিয়ে বাণিজ্যিকভাবে মাছ চাষ করছে। তাই পরিবেশ আগের মতো নেই। এই বিলে পাখি ছিলো, উদ, মেছো বিড়াল, গুইশাপ, ব্যাঙ, পানকুড়িসহ অনেক প্রাণি আজ আর দেখা যায় না। আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য বিল গোবিন্দ চাতলকে খনন করা ও দখল মুক্ত করা প্রয়োজন।
আলোচনায় নেত্রকোনা শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটির সভাপতি জনাব নাজমুল কবীর বলেন,“ জলাভূমি আমাদের প্রকৃতির কিডনির মতো কাজ করে। জলাভূমি ধ্বংস করে আমারা উন্নয়ন করতে চাইনা। আমাদের উচিত নদী, হাওর, খাল, বিল, পুকুর, ডোবা গুলো রক্ষায় কাজ করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমাদের কোন জবাব থাকবেনা।”
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী-নালা-বিল-হাওর-পুকুরের মতো বহু জলাভূমি এ নেত্রকোনা অঞ্চলকে ঘিরে রেখেছে। বাংলাদেশের প্রাণ এই জলাভূমি। জলাভূমি রক্ষা করে আমরা বাঁচি। বাংলাদেশকে বাঁচাই। প্রাকৃতিক জৈববৈচিত্র্য সংরক্ষণে জলাভূমির গুরুত্ব চর্চিত হওয়া উচিত।পরিবেশের স্থানীয় জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং খাদ্যশৃঙ্খল রক্ষার তাগিদে জলাভূমি সংরক্ষণে জোর দেওয়া মানবিক কর্তব্য।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments