দীর্ঘদিন করোনাকালীন বন্ধের পর নেত্রকোনা সরকারী মহিলা কলেজে সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক বার্ষিক প্রতিযোগিতা আনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী অভিভাবক সহ সকলের মাঝে প্রাণ সঞ্চার করেছে। এতে দীর্ঘদিন পরে হলেও শিক্ষার্থীরা যেমন উৎফুল্ল হয়েছে তেমনি অবিভাবকরাও মনে করছেন শিক্ষার্থীদের মানসিকতাকে স্ট্রং করবে।
এদিকে নতুন প্রজন্মকে আধুনিক মনস্ক করে গড়ে তুলতে সাংস্কৃতিক চর্চার বিকল্প নেই বলে জানান আয়োজক কমিটির আহŸায়ক অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল হাসান।
বুধবার (২৩ র্মাচ) দিনব্যাপী শহরের মোক্তারপাড়া কলেজ প্রাঙ্গণে আহŸায়ক কমিটির উদ্যোগে এ বছরের সাহিত্য ও সংস্কৃতি প্রতিযোগীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা সভায় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা এন আই খান পুত্র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খান খসরু এমপি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।
এসময় তিনি জেলার একমাত্র নারীদের উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেত্রকোনা সরকারী মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীদেরকে শিক্ষিত হয়ে আগামীতে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে এগিয়ে আসবার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, একজন শিক্ষিত মা এবং বোনই পারে জাতিকে শিক্ষিত করে তুলতে। শিক্ষিত একজন মায়ের সাথে কোন সন্তান খারাপ আচরণ করতে ভয় পায়। কারণ তিনি সেটির প্রতিবাদ করতে পারেন। কাজেই শিক্ষিত একজন মা অথবা বোনের পাশে ভাই ছেলে অবশ্যই মানবিক মানুষ হয়ে গড়ে উঠবে।
প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ১৯৬৯ সালে আমার বাবা পৌর সভার চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে এই কলেজ প্রতিষ্ঠা করার সময় মানুষ দ্বিধা দ্বন্দে ছিলেন। সকলেই বলাবলি করছিলেন মহিলারা আসলে পড়বে কিনা এখানে। তখন আমার বাবা বলেছিলেন আমার ছোট বোনের কথা। সে থেকে ছোট বোনই হয়েছিলো এই কলেজের প্রথম শিক্ষার্থী। আর আজ কলেজে হাজার হাজার মেয়েরা পড়ছে। এতেই বুঝা যায় প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। নারীদের জন্য নানা সুযোগ তৈরী করে দেয়া হয়েছে। উপবৃত্তিতে নারীরা এগিয়ে।
কিন্তু নেত্রকোনা জেলা হাওরাঞ্চল হওয়ায় খাদ্যে সয়ং সম্পূর্নতার কারনে শিক্ষায় পিছিয়ে রয়েছে বলেও জানান তিনি। আর তাই শিক্ষা প্রসারে প্রধানমন্ত্রী দেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছেন এই জেলায়। যা এ অঞ্চলের শিক্ষাকে এগিয়ে নিতে ভূমিকা রাখবে। এখানে প্রধানমন্ত্রী মেডিকেল কলেজ টেকনিকেল কলেজ দিয়েছেন। যাতে দক্ষ নাগরিক হতে পারে আগামী প্রজন্ম। মাদক থেকে দূরে সরে আসতে পারে। মন্ত্রী এসময় বলেন অনুষ্ঠানের শুরুতেই একজন বোন আমার হাতে তার লিখা একটি বই উপহার দিয়েছে। এটি আমি মনে করি আজকের সেরা উপহার। এভাবেই শিক্ষায় সংস্কৃতিতে আমাদের মেয়েরা এগিয়ে যাবে।
কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে ছিলেন, জেলা প্রশাসক কাজি মো. আবদুর রহমান, পুলিশ সুপার মো আকবর আলী মুনসী ও পৌর মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নজরুল ইসলাম খান।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই কলেজের শিক্ষকদের অনুপ্রেরণায় কলেজের দ্বাদশ শ্রেনীর শিক্ষার্থী মাইমুনা খানমের এবারের বই মেলায় প্রকাশিত হয়া প্রথম কাব্যগ্রন্থ “তুমি হইয়ো নক্ষত্র” তুলে দেওয়া হয় অতিথিদের হাতে। পরে আলোচনা শেষে প্রতিযোগী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিরা। এরপর কলেজ শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।