নেত্রকোনার কলমাকান্দা সীমান্তে মাত্র পাঁচ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজে জনভোগান্তি চরমে। পাঁচ মাস মেয়াদে কাজ সম্পন্ন করার কথা থাকলেও পেেিরয়ে গেছে দুবছর। অর্ধেক খোঁড়াখুড়ি করে ফেলে রাখায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সীমান্ত এলাকার মানুষসহ পর্যটকরা। ফলে পর্যটক কমেছে ওই এলাকায়। স্থানীয়দের চলাচল করতে হয় দূর দূরান্ত দিয়ে অথবা ঝুঁকি নিয়ে। অবশেষে ঠিকাদারকে জরিমানাসহ লাইসেন্স বাতিল করেছে বাস্তাবায়নকারী প্রতিতষ্ঠান এলজিইডি। কতৃপক্ষের আশ^াস নতুন করে দরপত্র আহবান করা হয়েছে দ্রতই বাস্তবায়ন হবে।
নেত্রকোনার সীমান্ত উপজেলা কলমাকান্দার বেশ’কটি ইউনিয়নের বেশিরভাগ সীমান্ত গ্রামগুলো নৈসর্গিক সৌন্দর্য্যমন্ডিত। যে কারনে মহাদেও নদী তীরের পাতলাবন-বড়–য়াকোনা সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে ছুটে যান ভ্রমণপিপাসুরা। কিন্তু সীমান্তের চিনাহালা মোড় থেকে বরুয়াকোনা পর্যন্ত সড়কটির বেহাল দশায় সীমাহীন দুর্ভোগ দীর্ঘদিন ধরে। পর্যটক ছাড়াও সীমান্তের এই একটি মাত্র সড়ক দিয়ে প্রতিদিন গড়ে রংছাতি ইউনিয়ন ও কলমাকান্দা সদর ইউনিয়নের প্রায় অর্ধলক্ষাধিক মানুষের যাতায়াত। সড়কটি দিয়ে বর্ষায় একেবারে চলাচল অযোগ্য। খানাখন্দ ছাড়াও কোথাও পিচঢালাই আবার কোথাও নেই। দুর্ভোগ লাঘবে চলাচল নির্বিঘœ করতে স্থানীয় সরকার (এলজিইডি) উদ্যোগ নেয়।
মাত্র ৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজ পান কেন্দুয়ার মেসার্স নৌশী এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রোপাইটার মো. আব্দুল হাইয়ুম ভুইয়া। এক (১) কোটি ৮৬ লাখ ৭ হাজার ৫৪৪ টাকা ব্যয়ে কার্যাদেশ নিয়ে কাজ শুরু করার কথা থাকে ২০২৩ সনের ২ ফেব্রয়ারী। ওই বছরের ৩০ জুলাই কাজ শেষ করার কথা থাকলেও চলতি বছরের জুলাইয়েও কাজ শেষ হয়নি।
পরবর্তীতে ১৫ ভাগ কাজ করে ফেলে রাখে প্রতিষ্টানটি। এতে দুর্ভোগ আরও বাড়ে চলাচলকারীদের। গ্রামবাসীর নিজেদের করা বাঁশের সাকোঁতে চলাচল করলে দু দফা বন্যায় ভেঙ্গে যায় সব। ফলে অর্বননীয় দুর্ভোগে পড়েন এই পথে চলা গ্রামবাসী শিক্ষার্থী নারী পুরুষসহ র্পটকরা। অন্য পথ দিয়ে তাদের চলাচল করতে হয় ভোগান্তি পুহিয়ে।
পথচারী মো. চান মিয়া, অটো চালক সাইদুল ইসলাম ও স্থানীয় রিয়াজ উদ্দিনসহ এলাকাবসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, সড়ক সংস্কারের নামে বিভিন্ন অংশে খোঁড়াখুঁড়ি করে ফেলে রাখায় গত বন্যার পানির ¯্রােতে সড়কের খাসপাড়া এলাকায় প্রায় ৫০ মিটার সড়ক ভেঙ্গে বড় একটি ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। কর্তৃপক্ষের উদাসীনতা ও ঠিকাদারের সীমাহীন গাফিলতির কারণে এমনটি হচ্ছে বলে অভিযোগ।
এলডিইডি সূত্রে জানা গেছে, কাজ ফেলে রেখে চলে যাওয়ায় এ বছরের ৭ মার্চ কাজটি বাতিল সহ লাইসেন্স কালো তালিকা ভুক্ত করার জন্য প্রধান কার্যালয় অনুমোদন দিলে কাজের বিপরীতে জামানাতের রাখা ১৮ লাখ ৬৭ হাজার ৫৫৪ টাকা বাজেয়াপ্ত করে জরিমানা হিসেবে সরকারী কোষাগারে জমা করা হয়। বাতিল হওয়া ৫ কিলোমিটার সড়কের সংস্কার কাজের পরিবর্তে আড়াই কিলোমিটার বাড়িয়ে সাড়ে ৭ কিলোমিটার করে গত ২২ অক্টোবর নতুন দরপত্র আহŸান করা হয়। সর্বশেষ দরপত্র জমাদানের তারিখ ১২ নভেম্বর।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রবিউল ইসলাম জানান, ওই ঠিকাদারের গাফিলতির জন্য তার ঠিকাদারি বাতিল করা হয়েছে। প্রায় ১৯ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। দীর্ঘদিন কাজ ফেলে রাখা এবং যে সকল মেটেরিয়েল এনে রেখেছিলো তাও নিন্মমানের। নতুন করে প্রায় ৪ কোটির অধিক টাকায় পুনরায় টেন্ডার হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই প্রক্রিয়া শুরু হবে।