নেত্রকোনার হাওরাঞ্চলে গত দু’বছর ধরে তিন কৃষক চাষ করছেন সুর্যমুখী। পরীক্ষামূলক এই চাষে যেমন লাভবান হচ্ছেন তেমনি মানুষ সৌন্দর্য উপভোগ করতে ছুটে যাচ্ছে দিগন্ত বিস্তৃত হাওরে। ছবি তোলা ভিডিও ধারণ করায় নষ্ট হওয়া থেকে রক্ষা করতে জমির সামনে দিয়েছেন জরিমানা সংক্রান্ত বিধি নিষেধ।
জানা গেছে, জেলার হাওরাঞ্চল মদন মোহনগঞ্জ খালিয়াজুরীর মাঝে মদন উপজেলার অন্যতম গোবিন্দ্রশ্রী হাওর। দিগন্ত বিস্তৃত হাওরে পতিত পড়ে থাকতো কৃষকের অনেক জমি। এসকল জমিতে ধানের বিকল্প হিসেবে মিষ্টি কুমড়া চাষ করা শুরু হয়েছে বেশ কয়েক বছর ধরে। ভূট্টা চাষও হয় বিভিন্ন রবি শস্যের পাশাপাশি। কিন্তু সূর্যমুখী চাষের প্রচলন এখনো হয়নি। তবে গেল বছর থেকে তিনজন কৃষক একসাথে তিন কাঠা জমিতে শুরু করেছেন সুর্যমূখী চাষ। মদন থেকে খালিয়াজুরী বা মোহনগঞ্জ যাওয়ার জন্য ডুবন্ত সড়ক গোবিন্দশ্রী হাওরের বুক চিরে বয়ে গেছে। এদিক দিয়েই যেতে হয় দ্বীপ উপজেলা খালিয়াজুরী। যে কারনে সূর্যমূখীর সৌন্দর্য্য দেখে দাড়িঁয়ে পড়েন পথচারীরা।
মদন উপজেলার উদ্যোক্তা কৃষক বুলবুল আহমেদ। তারা তিন বন্ধু মিলে গত বছর তিনকাঠা জমিতে ফলিয়েছিলেন সূর্যমুখী। কাঠা প্রতি আহরণ করেন ৮ লিটার তৈল। যে কারণে এবছর তারা ৮ কাঠা জমিতে করেছেন এই চাষ। আশা করছেন ফলনও ভালো হবে।
এদিকে দেখতে আসা পথচারী এবং সৌন্দর্য্য পিপাপুরাও স্বীকার করেছেন ভেতরে গিয়ে অনেকেই নষ্ট করে। তাই তারা এখন জরিমানার ভয়ে অনুমতি নিয়েই ভেতরে প্রবেশ করেন। সাইনবোর্ডে লিখা থাকায় এবং জরিমানার পরিমাণ বেশি থাকায় এবছর মেনে চলছেন সকলেই।
কৃষক বুলবুল আহমেদ জানান, মানুষ দেখে খুশি হয় আমাদেরও ভালো লাগে। কিন্তু জমিতে ঢুকে পড়লে জমির ফসল নষ্ট হয়। সব সময় দাঁড়িয়ে থেকে দেখা সম্বভ হয় না। তাই গাছ ভাঙ্গলে বা ফুল ছিড়লে দুই হাজার টাকা জরিমানা ও বিনা অনুমতিতে প্রবেশে এক হাজার টাকা। এখন কেউ আর না জিজ্ঞেস করে ঢুকে না।
তিনি আরও বলেন, কৃষি বিভাগ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে বীজ দিয়েছিলো আমরা সেগুলো ফেলে যতœ নিয়েছিলাম। এতে প্রতি কাঠায় আমরা আট লিটার তেল নিয়েছি। এটি একটি লাভজনক ফসল বলেও দাবী করেন তিনি। তাই এবছর পাঁচকাঠা জমি বাড়িয়ে চাষ করেছেন। আগামীতে আরও বাড়তে পারে জমির পরিমাণ। কারন মাত্র আড়াই মাসে ফলন ধরে।