নেত্রকোনার হাওরাঞ্চল খালিয়াজুরীতে দলবেধে মাছ শিকারকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে নিখোঁজ হওয়া তিন জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ ও ফায়ারসার্ভিস কর্মীরা। নিখোঁজের দুদিন পর সোমবার দুপুরে জেলার খালিয়াজুরী উপজেলার ধনু নদীর পৃথক স্থান নাওটানা ও রসুলপুর ঘাট এলাকা থেকে লাশগুলো উদ্ধার করা হয়েছে।
নিহতরা হলেন, আটপাড়া উপজেলার স্বরমুশিয়া ইউনিয়নের রূপচন্দ্রপুর গ্রামের রুস্তম আলীর ছেলে শহীদ মিয়া (৫৫), কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ি ইউনিয়নের রোয়াইলবাড়ী গ্রামের বজলুর রহমানের ছেলে হৃদয় মিয়া (৩০) ও মদন উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাগজান গ্রামের রোকন মিয়া (৫০)। এর আগে গত ৮ মার্চ হাওরের বিভিণœ জলমহালে শতশত মাছ শিকারি মাছ ধরতে গিয়ে নদী পার হওয়া নিয়ে মাঝিদের সাথে বিরোধে জড়িয়ে সংঘর্ষের সময় তারা নিখোঁজ হন।
জানা গেছে, হাওরাঞ্চলে বিভিন্ন প্রভাবশালীরা স্থানীয় মৎস্যজীবীদের কয়েকজনকে সম্পৃক্ত করে জলমহাল ইাজারা নিয়ে কোটি কোটি টাকার মাছের ব্যবসা করেন। এদিকে জেলে সহ সাধারণ মানুষ উন্মুক্ত জলাশয়ে ইজারার কারনে মাছ ধরতে পারেন না। যে কারনে বছরে উৎসব করে পোলো দিয়ে (মাছ ধরার খাঁচা) একদিন মাছ ধরেন। এতেও বাধা দেয়ায় এবছর দফায় দফায় দলবেধে শতশত জেলের সাথে বিভিন্ন সৌখিন মাছ শিকারিরাও মাছ ধরতে যায় হাওরে।
গত ৮ মার্চ জেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় হাজার খানেক মাছ শিকারী খালিয়াজুরী যাওযার পথে ধনু নদী পার হতে চায়। এসময় নৌকার মাঝিরা পার না করায় তাদের উপর হামলা চালালে এক পর্যায়ে জলমহালের লোকজন গ্রামবাসীকে নিয়ে মাছ শিকারিদের সাথে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশত জন আহত হন অন্য তিনজন নিখোঁজ ছিলেন। ওইদিন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রেণে নিতে ৫১ জনকে খালিয়াজুরী থানার পুলিশ আটক করে আবার পরের দিন ৯ মার্চ স্থানীয় নেতাকর্মীদের জিম্মায় আটকদের ছেড়ে দেয়। এরপর সোমবার (১০ মার্চ) পুনরায় মদন থেকে সংঘর্ষে জড়াতে গেলে প্রশাসন ও যৌথবাহিনী নিয়ন্ত্রণ করে।
খালিয়াজুরী উপজেলার লেপসিয়া ফাঁড়ির নৌ পুলিশের আইসি জাহাঙ্গীর হোসেন খান মদন উপজেলার ত্রিয়শী ইউনিয়নের বাগজান গ্রামের রোকনের লাশটি রসুলপুর ঘাট থেকে উদ্ধার করেন। মদন থানার ওসি নাঈম মোহাম্মদ নাহিদ হাসান বলেন, মদনের একজনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। সাথে আরও দুই উপজেলার দুজনের খবর পেয়েছি। কয়জন নিখোঁজ ছিলো এটা বলা যাচ্ছে না। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দলের টিম লিডার নুরুল ইসলাম নাওটানা ঘাট থেকে তারা দুজনের লাশ উদ্ধার করেন।
পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ জানান, মাইকে ঘোষণা দিয়ে সকালে সংঘর্ষের মতো ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করেিেছল। সেটি আমরা নিভৃত করতে সক্ষম হই। কিন্তু সংঘর্ষের দিন তিনজন নিখোঁজ হয়েছিলেন তাদের মরদেহ দুদিন পর ধনু নদীর বিভিন্ন ঘাটে ভেসে উঠলে উদ্ধার করা হয়।