১৩ কিশোরের অবিভাবক এনে মুচলেকা দিয়ে ছাড়লো নেত্রকোনা মডেল থানার পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে জেলা শহরের জয়নগরস্থ নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ের পিছনে সংঘবদ্ধ হওয়া ১৩ জন কিশোরকে ধরে আনে নেত্রকোনা মডেল তানার পুলিশ। এসময় তাদের কাছ থেকে একটি চাইনিজ হাতল কুড়াল উদ্ধার করা হয়। পরে এক এক করে ১৩ কিশোরের বাবা মা অথবা বৈধ অভিভাবক এনে মুচলেকা নেয়ার মাধ্যমে তাদেরকে ছাড়া হয়।
জানা গেছে, নেত্রকোনায় কিশোর গ্যাং প্রতিরোধে শহরের বিভিন্ন এলাকায় স্কুল কলেজ টাইমে অভিযান চালিয়েছে জেলা পুলিশের নবাগত পুলিশ সুপার। এরই অংশ হিসেবে প্রতিদিন থানার পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশ স্কুলের সময়ে বিভিন্ন অলি গলি পরিত্যাক্ত ভবনসহ চিপায় চাপায় অভিযান পরিচালনা করে।
পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদের নির্দশনায় মডেল থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদের তত্বাবধনে একটি টহল টিম প্রতিদিন স্কুল টাইমে এই টহল কার্য শুরু করেছে। এরই ধারবাহিকতায় স্কুলের সময়ে বিভিন্ন অলি গলি পরিত্যাক্ত ভবনসহ চিপায় চাপায় সংঘবদ্ধ হওয়া শিশু কিশোরদের নজরে রাখছে পুলিশ।
খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে শহরের জয়নগরস্থ নির্বাচন কমিশনের পেছনে পরিত্যাক্ত জায়গায় স্কুল ফেলে সংঘবদ্ধ হওয়া বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৩ জন কিশোরকে ধরে আনে পুলিশ। পরে এদের অভিভাবক ডেকে ডেকে মুচলেকা নিয়ে ছাড়া হয়। এসময় এদের কাছ থেকে কামার দিয়ে বানানো একটি চাইনিজ হাতের কুড়াল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
পুলিশের ধারণা যে কোন সময় যে কোন ধরনের অপরাধে এরা জড়ানোর আশংকা ছিলো। তা না হলে স্কুলের টাইমে তারা পরিত্যাক্ত জায়গায় সংঘবদ্ধ হবে কেন। কেনইবা তাদের কাছে এমন অস্ত্র পাওয়া যাবে।
এ ব্যাপারে মডেল থানার ওসি খন্দকার শাকের আহমেদ জানান, শহরের স্বনামধ্যন্য আঞ্জুমান সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, দত্ত উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের নবম দশম শ্রেনির শিক্ষার্থী এরা। প্রথম দিনে তাদের বাবা মায়ের কাছ থেকে মুচলেকা নেয়ার মাধ্যমে তাদেরকে ছাড়া হয়েছে। তাদের কাছে এনড্রয়েট ফোন দিতেও নিষেধ করা হয়েছে। তাদের এমন সংঘবদ্ধতা কোন ভয়ানক কাজের দিকে ধাবিত করতে পারে বলে ধারনা করা হচ্ছে। সেজন্যই তাদেরকে প্রাথমিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
তিনি জানান, শহরের মাদক এবং অন্যান্য অপরাধ দমনে পুলিশ এখন জিরো টলারেন্স। এছাড়াও এলাকায় এলাকায় কিশোর গ্র্যাং গড়ে উঠেছে। ছোটখাট বিষয় নিয়ে বিবাদে জড়াচ্ছে। পাশাপাশি মাদকের কাজে কিশোরদেরকে ব্যবহার করা হচ্ছে। এই জন্য কিশোররাও যাতে নিরাপদ থাকে এবং মাদকের ট্রানজিট না হয় সেজন্য স্কুলের সময়ে উঠতি বয়সের কিশোরদের আনাগোনা বন্ধ করা হচ্ছে। সেইসাথে অভিভবাকরা যাতে সচেতন হয়ে তাদের সন্তানরা কোথায় কি করছে খবর রাখেন তাহলে সুন্দর একটি প্রজন্ম গড়ে উঠবে বলেও জানান তিনি।