নেত্রকোনাবাসীর নিত্যদিনের সঙ্গী এখন জ্যাম। গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে ইজিবাইক চলাচল। হেঁটেও চলাচল করার উপায় নেই। শহরের বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ঘন্টার পর ঘন্টা মানুষের কেটে যায় বসে থেকে।
প্রতিটি গন্তব্যের দূরত্ব কম থাকলেও রোগী নিয়ে আটকে থেকে প্রার্থনা করা ছাড়া কিছুই করার থাকে না স্বজনদের। এক রাস্তার সড়কে অতিরিক্ত লাইসেন্সসহ অবৈধ বানিজ্যকে দায়ী করেছেন সাধারণসহ প্রশাসন।
প্রশাসনের বারবার আশ্বাস থাকলেও কার্যকরি কোন পদক্ষেপ নেই। অবৈধ ইজিবাইকের অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চলাচলকে দোষছেন লাইসেন্সধারী চালকরা। তবে কার্যকরি ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস পৌর প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, এক রাস্তার শহর নেত্রকোনা। মগড়ার পাড়ে ছিমছাম পরিবেশে শহরটি গড়ে উঠলেও এখন যেন বিরক্তি আর ভোগান্তির শহরে পরিণত হয়েছে।
প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা যখন তখন যত্রতত্র জ্যাম লেগে যায়। মানুষের হেঁটে চলাও মুশকিল হয়ে পড়ে। অফিস আদালতসহ দৈনন্দিন চলাফেরায় এই ছোট্ট শহরেও আলাদা সময় গুণতে হয় পথচারীদের। ঘন্টার পর ঘন্টা বসে থাকতে হয় সড়কের ওপরেই।
একস্থান থেকে অন্যস্থানে সর্বোচ্চ ১০ থেকে ১৫ মিনিট সময় লাগলেও ঘন্টা দেড়েক যেন প্রতিদিনের রুটিন।
বিশেষ করে শহরের থানার মোড়, চকপাড়া সিনেমাহল মোড়, তেরীবাজার, ছোটবাজার শহীদ মিনার মোড়, বড় বাজার আখড়ার মোড়, মালনি রোডের চক বাজার মোড়, মোক্তারপাড়া পৌরসভার মোড় যেন এখন ভয়ঙ্কর জ্যাম আতঙ্ক। কলেজ রোড, তেরিবাজার থেকে দত্ত স্কুল পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার সড়ক যেন আতঙ্কের নাম। বৈধ অবৈধ অটোরিক্সা ইজিবাইকে সয়লাব। নেই কোন জবাবদিহীতা। যত্রতত্র থামছে।
যত্রতত্র চলছে। নিয়ম কানুন না মেনেই সড়কের মাঝপথ ধরেই চলাচল তাদের। যেন ইজবাইেকের স্বর্গরাজ্য নেত্রকোনা শহর।
গেল সরকারের এ বছরের প্রথম দিকে অবৈধ লাইসেন্স আটকে বদলি হয়েছেন ট্রাফিক ইন্সপেক্টর। এখন যেন তাদের আর বাধাই নেই। তবে লাইসেন্সধারীরা বলছেন অবৈধ গাড়ি কয়েকগুন।
এদিকে সাধারণ মানুষ বলছে অনুমতির চারগুন পাঁচগুন ইজিবাইক চলে শহরে। লাইসেন্সধারী আর অবৈধদের মধ্যে চালাচলে কোন পাথ্যক্য নেই বললেন রোগীর স্বজন হুমায়ন কবীর। তিনি বলেন একই ভবে এরা চালায়। ঠিক সড়কের মাঝখান দিয়ে যায়। এক ঘন্টা পার হয়ে গেছে রোগী নিয়ে রাজুরবাজার থেকে থানার মোড় বসে থেকে।
এদিকে বিগত কয়েকমাস ধরে জ্যাম প্রকট আকার ধারণ করেছে স্বীকার করে পৌর প্রশাসক স্থানীয় সরকারের উপ পরিচালক (ডিএিলজি) মামুন খন্দকার জানান, রেজিস্ট্রেশনবিহীন অটোর দৌড়াত্ম বেশি। এরাই জটলা সৃষ্টি করে। এছাড়াও লাইসেন্সধারীদের সতর্ক করা হবে। আইন না মানলে লাইসেন্স বাতিলের ব্যবস্থা করা হবে। অন্যদিকে অবৈধগুলোর ব্যাপারে পুলিশ সাথে নিয়ে অভিযান চালানো হবে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে পুলিশ সুপার মির্জা সায়েম মাহমুদ পিপিএম জানান, পট পরির্তনের পরে এখন পুলিশের কার্যক্রম স্বাভাবিক হয়ে গেছে। এই শহরের তুলনায় অটোর সংখ্যা অতিরিক্ত। তারপরও রোস্টার করে দেয়া হয়েছিলো। কিন্তু মানছে না কেউই। টোকেন গাড়ির ব্যাপারেও নিয়ম মাফিক অভিযান চলছে। গত এক সপ্তাহ ধরে অবৈধ চলাচল বন্ধে অভিযান অব্যাহত। আটক মামলা ও জরিমানার সংখ্যাও বেড়েছে।
পৌরসভা লাইসেন্স কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে ইজিবাইক ২৪৩০ টি, মিশুক ১৩১১টি ও ব্যাটারি চালিত রিক্সা ১৯০৩টি। চলতি অর্থ বছরে অন্যান্যগুলোর ৪ টিসহ ২০ টি ইজিবাইকের লাইসেন্স বাড়ানো হয়েছে।