Saturday, April 20, 2024
মূলপাতাঅন্যান্যতরুণদের চোখে মিডিয়া ও ভাবনা

তরুণদের চোখে মিডিয়া ও ভাবনা

কাঁচা বাজারে গেলে দেখবেন দোকানি একটু পর পর পানি ছিটিয়ে দিচ্ছে সবজির উপর যেন দেখতে তরতাজা দেখায়।ক্রেতার দৃষ্টি আকর্ষণের জন্যে বিক্রেতা নানানভাবে আকর্ষন করানোর চেষ্টা করে, নিউমার্কেটের কাপড়ের দোকানগুলোতে হাঁটলে বুঝতে পারবেন কিভাবে ক্রেতাকে আকর্ষনের চেষ্টা করে দোকানিরা, আপনার গায়ের রং কুচকুচে কালো হলেও তারা বলবে ” আরেহ মামা আপনিতো অনেক ফর্সা,আপনাকে সেই লাগছে,আপনার শরীরে জিনিসটা সেই মানায়ছে,চেহারায় গ্লেজ মারছে…..”

এখন ডিজিটাল বাংলাদেশ, সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন। অনলাইনের বাজার এখন বেশ জমজমাট, অনলাইন শপে সবকিছু পাওয়া যায়,আপনি কোন প্রোডাক্ট সার্চ করবেন দেখবেন একটু পর আপনার নিউজফিডে ঐ প্রোডাক্টের বিজ্ঞাপন চলে এসেছে। এই সময়ে টাকা দিয়ে কজন খবরের কাগজ পড়ে? হাতেগুনা ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান ছাড়া কাগজে খবর পড়ার মতো লোক হরহামেশাই পাওয়া যায় এখন।

আদর্শ সাংবাদিক থাকলেও এখন আদর্শ সংবাদপত্র নেই কেননা সংবাদপত্র যারা চালায় তারা বেশিরভাগই ব্যবসায়ী, ব্যবসা করাই তাদের কাজ। অনলাইন, অফলাইনে খবরের কাগজ মুখরোচক সংবাদে সয়লাব।” হটহট নিউজ চাই, বেশি বেশি ভিউ চাই” এই নীতিতে বিশ্বাস করে মুখরোচক সংবাদ পাঠকের মুখের সামনে তুলে ধরা হয়, যারা এসব মুখরোচক সংবাদ খেয়ে অভ্যস্ত তারা গিলে খায়, যারা একটু উন্নত শ্রেণির পাঠক তাদেরকেও লোভ দেখায়, অনেকসময় উন্নত শ্রেণির পাঠকও মুখরোচক খাবারের গন্ধে মাতাল হয়ে রস আস্বাদন করার নিমিত্তে হট নিউজে ডুব দেন। তবে হ্যাঁ এক শ্রেণির পাঠক এখনো আছেন যারা এসব চাই পাশ দেখামাত্রই ডাস্টবিনে ছু্ড়ে ফেলেন কিন্তু তাদের সংখ্যাটা একেবারেই কম।

অবকাঠামোগত দিক দিয়ে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে যাচ্ছে, পদ্মা সেতু,ঢাকা মেট্রোরেল, পাতালপথসসহ অনেক বড় বড় প্রকল্পের কাজ শেষ প্রায়। কোভিড-১৯ এর এই মহামারীতে অন্যসকল সেক্টরের কাজ চালু থাকলেও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান একেবারই বন্ধ ছিল। প্রশাসনিক কাজ,অনলাইন ক্লাস চালু থাকায় শিক্ষক/ শিক্ষার্থীরা হয়তো একটু হলেও ব্যস্ত ছিলেন কিন্তু যে বাচ্চাটির স্কুলজীবন শুরু হওয়ার কথা ছিলো সে কিন্তু এখনো শুরুই করতে পারেনি, হাতেগুনা দু একজন অভিভাবক ছাড়া বেশিরভাগ পরিবারে স্কুল,কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাপক ধ্বস নেমেছে। জানিনা এই অপরিসীম ক্ষতি কিভাবে কাটিয়ে উঠবো আমরা, পাসের হার বাড়িয়ে, অটোপাশের মতে গুঁজামিল দিয়ে এই ক্ষত কোনভাবেই লাঘব করা যাবেনা। এদের অনেকে পাঠক হবে খাদক হবে এবং খাদকদেরকে একুশে বইমেলায় সালমান মুক্তাদির / তৌহিদ আফ্রিদিদের বই কিনতে, সেলফি নিতে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাবে।

সবার হাতে হাতে স্মার্টফোন থাকায় সংবাদমাধ্যমগুলো তাদের অনলাইনে শপ থেকে মুখরোচক খাবারগুলো পাঠকের সামনে তুলে আনে কারণ তাদের দরকার কাস্টমার,বিজনেসটাই আসল তাদের কাছে, বাজারে কোনটা খাবে তা তাদের ভালো করে জানা আছে কেননা পাঠকের চাইতে খাদকের সংখ্যা ই বেশি। ফলশ্রুতিতে ক্যাপ্টেন নওশাদ আতাউল বা ম্যাগসেস পুরষ্কার বিজয়ী ডক্টর ফেরদৌসী কাদরী বাংলাদেশিদের খবর প্রথম পাতায় ছাপানোর চাইতে ডানাকাটা পরী/অপূর্বদের বিয়ের/ ভারতীয় বিগ বস বিজয়ী নায়কদের প্রস্থানের সংবাদটাই প্রাধান্য পায়।

তানভীর হায়াত খান
বিএ(সম্মান),
এম,এ
ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ,
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments