Friday, March 29, 2024
মূলপাতাঅন্যান্যনেত্রকোনায় আয়শা স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

নেত্রকোনায় আয়শা স্মরণে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন

মহিলা পরিষদের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা, নারী আন্দোলনের অগ্রসেনানী, আয়শা খানমের স্মরণে তাঁর নিজ জেলা নেত্রকোনায় প্রদীপ প্রজ্জ্বলন হয়েছে। আজ রোববার সন্ধ্যায় শহরের ছোটবাজার এলাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে নেত্রকোনা সাহিত্য সমাজ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। এতে শহরের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ও নানা শ্রেণি-পেশার লোকজন অংশ নেন।

আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক কবি সাইফুল্লাহ এমরানের পরিচালনায় শুরুতে ‘তুমি কি কেবলি ছবি’ গান পরিবেশন করেন জেলা উদীচীর সহসভাপতি নারায়ণ কর্মকার ও ‘ওই মহামানব আসে’ গান পরিবেশন করেন সাধারণ সম্পাদক অসীত কুমার ঘোষ।

পরে আয়শা খানমের জীবন ও কর্মসহ স্মতিচারণ করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেলন হক, উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান, মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তাহেজা বেগম, সিপিবি নেত্রী কোহিনুর বেগম, ছড়াকার সঞ্জয় সরকার, রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মিলন পরিষদের সহসম্পাদক মো. আলমগীর, প্রথম আলোর প্রতিনিধি পল্লব চক্রবর্তী, আয়শা খানমের ছোট বোন স্কুল শিক্ষক বাঁধন খান, নারী প্রগতির ব্যবস্থাপক মৃণাল চক্রবর্তী, কলেজ শিক্ষক পূরবী সম্মানীত, কলেজ শিক্ষক হারাধন সাহা প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, ‘আশেয়া খানম এ দেশের প্রগতিশীল আন্দোলনের এক ‘বাতিঘর’। তিনি জীবনভর মানব মুক্তির গান গেয়ে গেছেন। প্রগতিশীল নেতাকর্মীদের কাছে তিনি পথপ্রদর্শক। ছাত্র আন্দোলন দিয়ে তাঁর জীবন শুরু হয়েছে। আর সমাপ্তি ঘটেছে সমাজের অধিকারহীন, বঞ্চিত নারীদের মানবাধিকার আদায়ের লড়াইয়ে। স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে নারী আন্দোলনকে একটি সামাজিক আন্দোলনে বিকশিত করার ক্ষেত্রে আয়শা খানমের ভূমিকা অবিস্মরণীয় হয়ে থাকবে।

আয়শা খানম (৭৪) গতকাল শনিবার ভোরে ঢাকার নিজ বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর একটি হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

পরে নেত্রকোনা শহরের কাটলি এলাকায় অন্বেষা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শ্রদ্ধা নিবেদন, রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ও জানাজা শেষে স্বামীর কবরের পাশে তাঁকে সমাহিত করা হয়।

আয়শা খানমের জন্ম নেত্রকোনা সদর উপজেলার কালীয়ারা গাবড়াগাতি এলাকায় ১৯৪৭ সালের ১৮ অক্টোবর। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সহসভাপতি আয়েশা খানম বাষট্টির ছাত্রআন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধসহ সব আন্দোলনের সক্রিয় সংগঠক ছিলেন। পাকিস্তান আমলে হামুদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বাতিলের দাবিতে ১৯৬২ সালের ছাত্র আন্দোলনে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে রাজনীতিতে পা রাখেন তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় তিনি রোকেয়া হল ছাত্র সংসদের সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে ছাত্র ইউনিয়নের সহসভাপতি হিসেবে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে ঢাকায় শিক্ষার্থীদের সংগঠিত করতে নামেন তিনি।

‘ডামি’ রাইফেল হাতে ঢাকায় নারী শিক্ষার্থীদের মিছিলের যে ছবি আলোচিত হয়, তাতে আয়েশা খানমও ছিলেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর নিজেকে অসাম্প্রদায়িক, গণতান্ত্রিক, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যুক্ত করেন আয়শা খানম।

স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাক বাহিনী ও তাদের দোসরদের নির্যাতনের শিকার নারীদের পুনর্বাসন এবং শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পরিবারের সদস্যদের সহায়তায় কাজও করেন তিনি৷

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments