Wednesday, April 24, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদনেত্রকোনা সদর উপজেলানেত্রকোনায় বন্যায় ভেসে গেছে ১৬ কোটি টাকার মাছ

নেত্রকোনায় বন্যায় ভেসে গেছে ১৬ কোটি টাকার মাছ

টানা বর্ষণ এবং দুই সপ্তাহের পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার ১০ উপজেলায় বন্যায় ভেসে যায়া বাড়িঘর সহ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৎস্যচাষীরাও। অনেকে লিজ নিয়ে পুকুরে মাছ চাষ করেছিলেন। জীবিকা নির্বাহে অনেক চাষী এই মাছ চাষকেই একমাত্র পেশা করেছেন। কিন্তু এ বন্যায় এবার ভেসে গেছে স্বপ্ন।

সর্বমোট ২৬ হাজার পুকুরের মাছ ভেসে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন ১৫ হাজার মৎস্য চাষী। অনেক চেষ্টা করেও কোনভাবেই আটকে রাখতে পারেননি মাছ। পানি উচপে ভেসে গেছে চোখের সামনে জীবিকা নির্বাহের শেষ সম্বল। তাদের মধ্যে প্রান্তিক চাষীর সংখ্যাই বেশি বলেও জানান মৎস্য অধিদপ্তর।

তাদের এ ক্ষতি পুষিয়ে উঠবার নেই কোন ব্যবস্থাও। তবে সরকার খামারি এবং মৎস্য চাষীদের ঘুরে দাঁড়াবার জন্য প্রনোদনা দিলে আবারো স্বপ্নজাল বুনতে পারবেন বলে মনে করছেন ক্ষত্রিগস্থরা। মৎস্য কর্মকর্তাও জানান ২ কোটি টাকা মূল্যের শুধু পোনামাছ ভেসে গেছে। মোট ভেসে গেছে ১৬ কোটি টাকার মাছ।

জেলার মৌগাতি ইউনিয়নের শালজান গ্রামের চাষী মাহবুবুল আলম জানান, জাল দিয়ে আটকেও মাছ রাখতে পারিনি এবছর। কম হলেও প্রায় ৬ লাখ টাকার পোনা মাছ ভেসে গেছে দুটি ফিশারী থেকে। একটি ১৩ কাঠা ও একটি ৮ কাঠার পুকুর। লাভের হিসাব তো সামনেই আসেনি। খুব কষ্টের টাকা এগুলো। তিনি বলেন, সরকার আমাদের দিকে তাকালে আমরা হয়তো বেঁচে যাবো। এমনও চাষী আছে লিজ নিয়ে একটি ফিশারী করে দাঁড়াতে চেয়েছিলো। তাদরেও সব ভেসে গেছে। লিজে এক বছরের জন্য নিলে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া লাগে। আবার ৬ লাখ টাকাও আছে।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, জেলায় ৫২ হাজার ৭৪ দশমিক ৯৩ মেট্রিকটন মাছের চাহিদা থাকলেও এ অঞ্চলে মাছ দ্বিগুন উৎপাদন হয়ে ১ লাখ ৭ হাজার ১০৪ দশমিক ৩৮ মেট্রিকটন মাছ পাওয়া যায়। যার আনুমানিক বাজার মূল্য আসে দুই হাজার কোটি টাকা। বদ্ধ জলাশয়ে মাছ উৎপাদন (চাষ) হয় ৪০ হাজার ৬৬৫দশমিক ৪০ মেট্রিক টন।

জেলায় পুকুর রয়েছে ৬০,৯৫২টি। পুকুরের মোট আয়তন ৮৩৪৩ দশমিক ৪৬ হেক্টর। চাষী রয়েছেন ৪৭,১৫৩ জন। তারমধ্যে বানিজ্যিকভাবে মৎস্য খামারের সংখ্যা ৭০৮টি। বিলের সংখ্যা ৫১০টি। নদীর সংখ্যা ১২ টি। খাল রয়েছে ১৫৯ টি। প্লাবনভূমির সংখ্রা ৬৭৮ টি। ছোট বড় হাওড়ের সংখ্যা ৯৪ টি। ২০ একরের উর্ধে জলমহাল রয়েছে ১১৮ টি। ২০ একরের নীচে জলমহাল রয়েছে ২৯৯ টি। জেলায় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সংখ্যা ৩২১ টি। মোট মৎস্যজীবি (জেলে) ৫৪ হাজার ৬৯৫ জন। তারমধ্যে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৬ হাজার ৮৮ জন। মাছ বিক্রেতার সংখ্যা ১৬৭২ জন। সরকারী মৎ্য বীজ খামারের সংখ্যা মাত্র ২ টি। নিবন্ধিত বেসরকারী মৎস্য হ্যাচারির সংখ্যা ৩৫ টি। বেসরকারী মৎস্য নার্সারির সংখ্যা ৩৭৫ টি। বরফ কলের সংখ্যা ৬৭ টি। মৎস্য আড়ৎ সংখ্যা ২৫২ টি। মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র ১ টি।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ শাহজাহান কবীর জানান, ক্ষত্রিগ্রস্থদের তালিকা তৈরী করে উধ্বর্তন বরাবরে পাঠানো হয়েছে। যদি কোন প্রণোদনা পায় তাহলে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে বলেও তিনি মনে করেন। এছাড়াও তিনি বলেন এবার জাতীয়ভাবে ২ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে আড়াই হাজার কোটি টাকার মাছ উৎপাদন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে চাষীরা পেেড়ছন ক্ষতির মধ্যে। যাদের এই মাছ উৎপাদনে অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। এদিকে অবৈধ জাল দিয়ে যাতে কেউ মৎস্য আহরণ করতে না পারে সেটি মনিটরিং করা হচ্ছে।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments