নেত্রকোনায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মাঝে ত্রানের পরিবর্তে আমন আবাদের জন্য বিনামূল্যে বীজ, সার ও সবজি বীজ দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অফিসার পরিষদ। ৩৭৪ জন কর্মকর্তার একদিনের বেতন কেটে এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
তারা বুধবার বিকালে জেলার মদন উপজেলা কৃষি কার্যালয় প্রাঙ্গণে ৩শ কৃষক কৃষাণীর মাঝে এসকল উন্নত মানের বীজ ও সার বিতরণ করেছেন। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ত্রান ও পুনর্বাসন কমিটি গঠনের মাধ্যমে মদন কৃষি অফিস বিতরণ কার্যক্রমের আয়োজন করে।
এতে ২০০ জন কৃষকের মাঝে ব্রি-৪৯ জাতের ধানের বীজ ১০ কেজি করে, ডিএফপি সার ২৫ কেজি করে, এমওপি সার সাড়ে ১২ কেজি করে বিতরণ করা হয়। বাড়ির আঙ্গিনায় সবজি চাষ করতে ১০০ জন নারীর মাঝে বিভিন্ন জাতের ১৪ রকমের সবজির বীজ বিতরণ করেন।
এ উপলক্ষে আয়োজিত বিতরণ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে বক্তব্য রাখেন বাকৃবি’র ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান।
বিতরণ অনুষ্ঠানে ত্রান ও পুনর্বাসন কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার জাহানের সভাপতিত্বে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, নেত্রকোনা কৃষি সসম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক শাহজাহান সিরাজ, মদন পৌরসভার মেয়র মো. সাইফুল ইসলাম সাইফ, বাকৃবির অফিসার পরিষদের সভাপতি খাইরুল আলম (নান্নু), সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবুল বাসার আমজাদ, ত্রান কমিটির সদস্য সচিব প্রকৌশলী আজিজ আহমেদ, উপজেলা কৃষি অফিসার মো. হাবিবুর রহমান, কৃষাণী জহুরা আক্তার, কৃষক গনি মিয়া।
অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি’র শারিরীক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ডা. আবুল কালাম আজাদ, অতিরিক্ত পরিচালক মো. সাইদুর রহমান রতন, মো. লুৎফর রহমান, ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. মেহেদী হাসান রাসেল সহ স্থানীয় কৃষি কর্মকর্তা কর্মচারীসহ আওয়ামী লীগের দলীয় নেতৃবৃন্দ।
এ সময় বাকৃবি’র অফিসার পরিষদের ত্রান কমিটির সভাপতি মো. সারওয়ার জাহান বলেন, বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে সরকারসহ বিভিন্ন সংগঠন, ব্যাক্তিসহ রাজনৈতিক সামাজিক সবাই ত্রান দিচ্ছে। কিন্তু আমরা যেহেতু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের তাই ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য এই কৃষি ত্রান দিয়েছি। উন্নত মানের বীজ এবং সার। যার উৎপাদন অনেক ভালো হবে। পাশাপাশি কৃষাণীরা যাতে পানি সরে যাওয়ার পর বাড়ির আঙ্গিনাকে কাজে লাগিয়ে সবজি চাষ করতে পারেন সেজন্য তাদেরকে বিভিন্ন শাক সবজির বীজ দেয়া হয়েছে। এতে করে বেড়ে ওঠা শিশুদের পুষ্টি চাহিদা মিটাবে। সেইসাথে কিছু বিক্রিও করতে পারবে। পুষ্টিহীন শিশুরা বড় হলেও মেধা হবে না। পাশাপাশি শারিরীক ভাবেও ফিট হবে না। এই জন্য তাদের পুষ্টি চাহিদা বেশি।
আবার বন্যার পানি চলে যাওয়ার পর এ সকল মাটিতে ফলন ভালো হবে। সরকারের এক ইঞ্চি মাটিও পতিত থাকবে না নীতি পুরোটাই বাস্তবায়ন হবে। এদিকে কৃষক কৃষাণীরাও এমন উপহার পেয়ে ভীষণ খুশি। তারাও বলছেন ত্রানের চেয়ে এটি তাদের কাছে এখন বেশি প্রয়োজনীয়।