নেত্রকোনা সরকারী মহিলা কলেজে বুধবার (১৩ জানুয়ারী) শিক্ষক পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নির্বাচন চলাকালীন সময়ে হঠাৎ পুলিশ ঢুকলে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। তবে এ ব্যাপারে কলেজ কতৃপক্ষ কিছুই জানেন না বলে দাবী করে তারা বলেন এই প্রথম এমন আশ্চর্য্য ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের পক্ষ থেকে রয়েছে ভিন্নজনের ভিন্ন বক্তব্য।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, দুইটি প্যানেলে শিক্ষক পরিষদের নির্বাচনে সম্পাদক, যুগ্ম সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ পদে মোট ৬ জন শিক্ষক প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। ভোটার সংখ্যা মাত্র ৩২ জন। প্রতিদ্বন্দীদের মধ্যে কোষাধ্যক্ষ পদে নেত্রকোনা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. আল আমিন হোসাইনের স্ত্রী সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষক সাদিয়া আক্তার রয়েছেন একটি প্যানেলে। তিনি সর্বমোট ১৭ টি ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন।
এদিকে পুলিশের ব্যাপারে শিক্ষকদের মাঝে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হওয়ায় তারা বলছেন এটি কলেজের ডেকোরাম নষ্ট হয়েছে। ভীতিকর পরিস্থিতর সৃষ্টি করে প্রহসনের নির্বাচন হয়েছে। চারবার গিয়েছে পুলিশ। শিক্ষকরা থাকবেন নিরপেক্ষ পরিছন্ন পরিবেশে। সেখানে পুলিশ এসে প্রিন্সিপালের পারমিশন নিয়ে প্রয়োজনে কথা বলবে। কিন্তু এসব কিছুই না করে সরাসরি ভোট কক্ষে গিয়ে কেমন যেনো প্রস্তুতির সময় ঘুরাফেরা করে দেরী কেন তাড়াতাড়ি করেন এসব বলতে থাকেন।
এতে শিক্ষকরা বেশ অসম্মান বোধ করেছেন। বিব্রত হয়েছেন বলে একাধিক শিক্ষক জানান এমন অনাকাঙ্খিত ব্যাপার সত্যিই দুঃখের।তারা এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন বলে জানান। তাৎক্ষণিক শিক্ষকদের নিয়ে সভাও করা হয়েছে।নির্বাচন কমিশনার প্রফেসর কাজী ফারুক আহমেদ জানান, পুলিশ প্রয়োজন হলে আমরা আবেদন করবো। তখন আসবে। কিন্তু আবেদন ছাড়া কোন অভিযোগ ছাড়া তারা কিভাবে আসে বুঝতে পারিনি।
বিব্রতকর পরিস্তিতির জন্য আমরা প্রশাসনের কাছে জবাব চাইবো।
তবে পুলিশের স্ত্রী নির্বাচন করায় পুলিশের আগমন কিনা জানতে চাইলে তিনি এসব বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। শিক্ষক সাদিয়া আক্তার বলেন, এ ব্যাপারে তিনি কিছুই জাননে না। তার ছোট বাচ্চা তাই একজন পুরুষ ও নারী কনস্টেবল সবসময় সাথে থাকেন। অন্যরা যারা থানা থেকে এসেছে কিভাবে সেটি উনার স্বামীর কাছে জেনে নিতে বলেন। কলেজে আবেদন ছাড়াই পুলিশ যাওয়ার বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি মো. তাজুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন কোন আবেদন করেনি কেউ তবে আলফা টু স্যার বলেছেন তাই পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে আলফা টু নেত্রকোনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো.ফখরুজ্জামান জুয়েল বলেন নির্বাচন থাকলে পুলিশ যেতেই পারে। তবে কিসের ভিত্তিতে জানতে চাইলে তিনি বলেন হয়তো ডিউটি ছিলো আশপাশে। তারা গিয়ে থাকতে পারে। পুলিশ সদস্যের স্ত্রী নির্বাচনে অংশ নেয়ার কারণে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এটি আল আমিনকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) মো. আল আমিন হোসাইন জানান, তিনিও এমন কিছু জানেন না।
তবে আইনশৃঙ্খলা যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে কারনে গোয়েন্দাদের নজরদারী থাকে। কিন্তু থানার পুলিশ যাওয়ার বিষয়ে তিনিও কিছু জানেন না বলেই জানিয়েছেন। কলেজের প্রিন্সিপাল মো. সিরাজুল ইসলাম বলেন, আমরা খুব ব্রিবত হয়েছি। লজ্জা পেয়েছি। পুলিশ সুপারকে জানাতে কয়েকবার ফোন করেছিলাম তিনি হয়তো বিজি আছেন ধরেন নি।