সোহান আহমেদ:
কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোনার দুর্গাপুর-কলমাকান্দা-বারহাট্টাসহ হাওর অঞ্চলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধিতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন শতাধিক গ্রামের লাখো মানুষ। গবাদি পশুসহ পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম দূর্ভোগে দিন কাটছে বানভাসি মানুষদের।
টানা বৃষ্টি উপেক্ষা করে বিভিন্ন প্লাবিত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, টানা বর্ষণ ও আসাম থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে নেত্রকোনার সীমান্তবর্তী উপজেলা দূর্গাপুর, কলমাকান্দা ও বারহাট্টার নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে।
ঢলের পানিতে অসংখ্য রাস্তাঘাট, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্লাবিত হয়েছে। অসংখ্য পুকুর পানিতে তলিয়ে ভেসে গেছে মাছ। সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় কলমাকান্দা উপজেলা সদরসহ বড়খাপন, পোগলা, খারনৈ, লেঙ্গুরা ও রংছাতি ইউনিয়ন, দূর্গাপুর উপজেলা সদরসহ কুল্লাগড়া, গাওকান্দিয়া ও চন্ডীগড় ইউনিয়ন।
ভারী বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ী ঢলে এসকল ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামের সাধারণ মানুষের বাড়িঘর, দোকানপাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তর বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে।
গ্রামীণ সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ও বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে যাওয়ায় দুই উপজেলার সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। পানি বন্ধি হয়ে পড়েছে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় প্রশাসন বন্যা দুর্গতদের জন্য দুই উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহারের জন্য খুলে দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, ঢল ও অতি বৃষ্টিতে নেত্রকোনার কংশ, মগড়া, সোমেশ্বরী, ধনু, উব্দাখালিসহ ছোট-বড় সব নদ-নদীর পানি অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। সোমেশ্বরী নদীতে বিপদসীমার ৩৬ সেন্টিমিটার ও উব্দাখালী নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে বিপদসীমার ৬৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এমতাবস্থায় নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিশ জানিয়েছেন, কয়েক দিনের টানা ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নানা ধরণের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে বন্যা কবলিত এলাকা গুলোতে শুকনো খাবারসহ নগদ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি