নেত্রকোনায় মেয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসে আর ফেরা হলো না মা হাজেরা খাতুনের (৬০)। মাকে এগিয়ে দিতে গিয়ে প্রাণ গেলো জো¯œা কাতুনেরও (৩৮)। জেলার সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা ইউনিয়নের সতরশ্রী গ্রামে ট্রেনের ধাক্কায় নিহত হয়েছেন তারা মা এবং মেয়ে। ব্হৃস্পতিবার বিকালে মোহনগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কমিউটার ট্রেনের ধাক্কায় এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে। রেলওয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল রিপোর্ট শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করে।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বারহাট্টা উপজেলার ছিচড়াকান্দা গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের স্ত্রী হাজেরা গত তিন চারদিন আগে সদর উপজেলার সিংহের বাংলা ইউনিয়নের মোবারক পুর গ্রামে ছোট মেয়ে জোস্নার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। জ্যোৎস্না ওই গ্রামের আমানতু মিয়ার স্ত্রী ও তিন সন্তানের জননী। সেখান থেকে ব্হৃস্পতিবার বিকালে বাড়ি যাওয়ার জন্য রেল লাইনের পাশ দিয়েই রওয়ানা দেন মা মেয়ে দুজন। এসময় নির্বাচনী প্রচারণা চলছিল বলে ট্রেনের হুইসেল শুনতে পায় নি তারা। মেয়ে জ্যোৎস্না মাকে এগিয়ে দিতেই সাথে সাথে যাচ্ছিলেন।
জোস্নার স্বামী আমানতু জানান, শ্বশুর বাড়ি যেহেতু তিন কিলোমিটার দূরে তাই সবাই হেঁটেই যাওয়া আসা করতেন। প্রত্যক্ষদর্শী ফরিদা আক্তার জানান, তারা ডাক্তার দেখিয়ে ঔষুধ কিনে মাকে বাড়ি পাঠাবে বলে তিনিও সাথে গিয়েছিলেন। কিন্তু ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনী প্রচারণায় মিছিল এবং মাইকের শব্দে তারা শুনতে পাননি ট্রেনের শব্দ। যে কারণে ইঞ্জিনের ধাক্কা খেয়ে নীচে পড়ে গিয়ে দুজনেই মারা গেছেন। এ ব্যাপারে ঠাকুরাকোনা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক তার এলাকায় ঘটনা ঘটার বিষয়ে সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সিংহের বাংলা ইউপি চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম ঘটনাস্থল মোবারক পুর এলাকায় নিহতের স্বজনদের সহযোগিতায় এসে বলেন রেল লাইন দিয়ে না গিয়ে তারা সড়ক দিয়ে গেলে এই দুর্ঘটনাটি হতো না। তাই রেল লাইন ধরে না হাঁটার জন্য তিনি সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।
নেত্রকোনা মোহনগঞ্জ রেলওয়ে সড়কের সহ উপ পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম বলেন, বিকেলের ঢাকাগামী কমিউটার ট্রেনের ধাক্কায় নীচে পড়ে সদর উপজেলার সত্রশ্রী এলাকায় মোবারক পুর গ্রামে মা ও মেয়ে দুজন নিহত। তবে তিনি অরক্ষিত লাইনের বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলেও জানান।