Friday, April 19, 2024
মূলপাতানেত্রকোনার সংবাদনেত্রকোনা সদর উপজেলারাতের হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে

রাতের হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনে যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে

রাতের আন্তনগরে ঢাকা থেকে নেত্রকোনাগামী যাত্রীদের ভোগান্তি চরমে। প্রতিদিন হাওড় এক্সপ্রেস ট্রেনে নেত্রকোনাসহ বিভিন্ন স্টেশনে নেমে যাওয়া যাত্রীরা পড়েন চরম দুর্ভোগে। দেখা গেছে রাত দশটা বেজে পনেরো মিনিটে ঢাকার কমলাপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে আসে নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের উদ্যেশ্যে। কিন্তু রাত যত গভীর হতে থাকে কোথা থেকে যেনো ট্রেনের ভেতরে শোভন চেয়ারসহ প্রথম শ্রেনির দরোজা যেখানে তিল ধারণের ঠাঁই থাকে না। শুধু শোভন হলে তো কথাই নেই। এছাড়াও শোভন চেয়ার কোচ, প্রথম শ্রেনির ট্রেনের প্রতিটি দরজার সামনে বস্তা সহ নারীরা বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে শুয়ে ঘুমিয়ে আসেন। পুরুষরা পাশেই ঘুরাঘুরি করেন। টিকিটের কোন যাত্রী দরজা খুলতে গেলেই টিকিটবিহীন গেইট আটকে বসে থাকা নারীরা খাবলে ধরেন। এরইমাঝে আশপাশে ঘুরঘুর করা পুরুষরা এসে হামলে পড়ে। ফলে ভদ্রলোকদের টিকিট কেটেও বাকবিতন্ডায় রিপ্ত হতে হয় শুধুমাত্র নিজ গন্তেব্যে নামতে গিয়ে। এমন ঘটনার চিত্র নিয়ে বর্ণণা করেন ভোগন্তির শিকার প্রতিটি যাত্রী।

বিভিন্ন স্টেশনে শোভন থেকে শুরু করে চেয়ার কোচের কোন যাত্রী ভালো ভাবে নামতে পাড়েন না এদের কারণে। উল্টো টিটির পাওয়ার দেখিয়ে গালিগালাজ করে। আর এসকল পাওয়ারফুল যাত্রীদের বেশিরভাগের গন্তব্য হচ্ছে মোহনগঞ্জ স্টেশন। যে কারণে জেলা সদর নেত্রকোনা, পূর্বধলার শ্যামগঞ্জ, ঠাকুরাকোনা, বারহাট্টার মানুষ ভোগান্তিতে পড়েন বেশি। মাত্র কয়েক মিনিটের বিরতিতে তাদেরকে নামার জন্য দুর্ভোগ পোহাতে হয় চরমের। এসব ব্যাপারে কোথাও কোন অবিযোগ দেযারও সুযোগ নেই বলে জানান ভুক্তভোগী যাত্রীরা। গত ১৭ জানুযারী রাতে ট্রেনের শোভন চেয়ার কোচের চ বগির ৪২ নং সিটের যাত্রী তানভীর হায়াত খান জানান, তিনি ইজতেমায় বেডিংপত্র নিয়ে ফেরার পথে নেত্রকোনা জেলা সদর স্টেশনে নামতে গিয়েই বিড়ম্বনায় পড়েন। ঘুরে অন্য দরজা দিয়ে নামতে হয়। দরজায় বসে থাকা নারীরা উল্টো তেরে আসে। পড়ে পিছন থেকে পুরুষরাও এগিয়ে আসেন। এমন অবস্থা। অপর যাত্রী সোহায়েব জানায় উঠা নামার সময় এক তো পকেট মারের উপদ্রব। অন্যদিকে টিটি এবং ট্রেনের এটেনডেন্টদের সাথে অর্থের বিনিময়ে আসা এসকল যাত্রীদের উপদ্রবে সুনাম নষ্ট হচ্ছে সরকারী এই সেবা খাতের।

এসময় আবার কোন এটেনডেন্ট বা টিটির দেখা মেলে না। যাত্রীদের সাথে চেযার কোচ বগিতে ঝগড়ার সময় দূরে থাকেন। তাদের কথা বলে এসমস্থ নারীরা তেড়ে আসেন। এ ব্যাপারে নেত্রকোনা বড় স্টেশনের মাস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুনকে দুদিন ঘুরে অবহিত করলে তিনি জানান, বিষয়টি ময়মনসিংহে টিআইসি এবং ঢাকার উর্ধ্বতন কর্মকতাদের জানাবেন। কারণ ট্রেনের ভেতরের এই ঘটনায় তাদের কিছু করার নেই। এগুলো এটেনডেন্টদের দায়িত্ব এবং তাদের কারনেই এমন অভিযোগ আরও আসে।

রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, আন্তনগর হাওর এক্সপ্রেসে মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ১০টি, শোভন চেয়ার ৪০টি, শোভন ১১২টি এবং বিমানবন্দর স্টেশনের জন্য শোভন চেয়ার ১৫টি, শোভন ৫০টি মোট ২২৭টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

বারহাট্টা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর তিনটি, শোভন চেয়ার পাঁচটি, শোভন ২০টি এবং বিমানবন্দর স্টেশনের জন্য পাঁচটি মোট ৩৩টি আসন দেওয়া হয়েছে।

নেত্রকোনা থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর ছয়টি, শোভন চেয়ার ১৫টি, শোভন ২৫টি এবং বিমানবন্দর স্টেশনের জন্য শোভন চেয়ার পাঁচটি, শোভন ১০টি মোট ৬১টি আসন দেওয়া হয়।

শ্যামগঞ্জ থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর তিনটি, শোভন চেয়ার ১০টি, শোভন ১০টি এবং বিমানবন্দর স্টেশনের পাঁচটি মোট ২৮টি আসন দেওয়া হয়। গৌরীপুর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর দুটি, শোভন চেয়ার পাঁচটি, শোভন ১৫টি মোট ২২টি আসন দেওয়া হয়। ময়মনসিংহ থেকে কমলাপুর পর্যন্ত প্রথম শ্রেণীর তিনটি, শোভন চেয়ার ১৫টি, শোভন ৪৯টি মোট ৬৭টি আসন বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments