ফয়েজ আহম্মদ হৃদয়, মদন: নেত্রকোনার মদনে ধর্ষণ মামলা তুলে নেওয়ায় জন্য এক কলেজ শিক্ষার্থী(১৮) কে মারধর করে সড়কের ব্রীজের নিচে ফেলে রেখেছে ধর্ষক ও তার পরিবারের লোকজন। বৃহস্পাতিবার সকালে তিয়শ্রী-সিংহের বাজার সড়কের মাখনা গ্রামের সামনে ব্রীজের নিচ থেকে অজ্ঞান অবস্থায় এলকাবাসী ওই শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে মদন হাসপাতালে ভর্তি করছেন। বুধবার রাতে উপজেলার নায়েকপুর ইউনিয়নে মাখনা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীটি উপজেলার তিয়শ্রী ইউনিয়নের বাড়ৈউড়া গ্রামের কলেজ পড়ুয়া মেয়ে। শিক্ষার্থী জানান, ২০২০ সালের ১৬ আগষ্ট মাঘনা গ্রামের করিম মিয়ার ছেলে অপু আমাকে প্রেমের প্রলোভনে একাধিকবার ধর্ষণ করে। পরে ২০২০ সালের ১৯ আগষ্ট তার বিরুদ্ধে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করি। এ থেকেই মামলাটি তোলে নেয়ার জন্য আমাকে বিভিন্ন সময় চাপ সৃষ্টি করে। এ বছর ১ এপ্রিল জামিন পেয়ে অপু বাড়িতে আসে। এর পর থেকে আমাকে বিয়ে করবে বলে প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘুরতে নিয়ে যায়।
গতকাল বুধবার বিয়ের কথা বলে আমোকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে অপু ও তার বাবা আব্দুল করিম, আরো কয়েক জন মামলাটি তুলে নেওয়ায় জন্য আমাকে মারধর করে। আমি অচেতন হয়ে পড়লে তাদের বাড়ির সামনে ব্রিজের নিচে ফেলে যায়। আমার একটি চোখ নষ্ট আরো একটি চোখ তারা নষ্ট করে ফেলেছে। আমি এর সুষ্টু বিচার চাই।
এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে অপু জানান, আমার নামে মমালা দিয়েছে। আমি জামিনে বের হয়ে আসছি। কয়েকদিন ধরে আমাকে হুমকী দিচ্ছিল। গত রাতে একটি সিএনজি নিয়ে গভীর রাতে ওই মেয়েটি আমার বাড়িতে এসেছিল। ঘরে ঢুকে পড়েছে। পরে আমার বাবা চোর মনে করে কয়েকটি থাপ্পর দিয়ে বিদায় করে দিয়েছে। পরে সিএনজির ড্রাইভার নিয়ে চলে গেছে।
নায়েকপুর ইউপি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান রোমান জানান, খবর পেয়ে আমি নিজে ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েটিকে মদন হাসপাতালে প্রেরণ করেছি।
মদন হাসপাতালের জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার কাজী বুশরা আমীনা জানান, মেয়েটির শরীরে একাধিক আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মদন থানার ওসি ফেরদৌস আলম জানান, শিক্ষার্থী অপুর বিরুদ্ধে ২০২০ সালে ১৯ আগষ্ট মদন থানায় যে মামলাটি করেছিলো সেই মামলাটি বিচারাধীন আছে। আমরা তদন্ত করে পেয়েছি গতকাল মামলার তারিখ ছিলো। ছেলেটি জামিনে আসে। মামলায় হেরে গিয়ে সেখান থেকে মেয়েটি ওই ছেলের বাড়িতে ওঠে রাতে। পরে তারা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিলে বাবার বাড়িও জায়গা পায় না। সেখানেও তাকে ফিরিয়ে দিলে ওই সিএনজি করে চলে গিয়েছিল। এরপর সকালে লোকজন দেখে অজ্ঞান পড়ে আছে। মারপিটের বিয়ষটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি।