নেত্রকোনা শহরে দিন দিন বেড়েই চলছে যানজট। দিন থেকে গড়িয়ে এখন বিকাল সন্ধ্যা রাত অব্দি শহরে অসহনীয় যানজট লেগেই থাকে। আগে শুধু শহরের মোক্তারপাড়া থেকে ছোটবাজার হয়ে তেরি বাজার দিয়ে আখড়ার মোড়ে গিয়ে শেষ হতো এই জট। এরপর ধীরে ধীরে সাতপাই কলেজ রোড দিয়ে থানার মোড় পর্যন্ত ঠেকেছে।
সবশেষ গত দুদিন ধরে শহরের একমাথা জয়নগর থেকে অপরপ্রান্ত রাজুর বাজার এবং অন্য আরেক প্রান্ত সাতপাই কালীবাড়ি সরকারি কলেজ রোড পার হয়ে রেলক্রসিং পর্যন্ত জ্যাম লেগে থাকছে। আর সেই জ্যাম সকাল দুপুর বিকাল সময়ে ঘন্টা সময় ধরে চলে।
এভাবে মানুষ প্রতিদিন চলাচলে মাত্র সাড়ে তিন কিলোমিটার শহরের সড়কে চার থেকে পাঁচঘন্টা সময় মানুষের জ্যামে অপব্যয় হয়। কিন্তু সেই অপব্যয়ের সময় দীর্ঘ হতে হতে এখন সন্ধ্যা এবং রাতেও যানজট লেগে বাড়ছে সময়। আর সেই যানজট শুধু মেইন সড়কেই নয়।
এখন অলিগলিতেও অটোরিকশার জ্যাম আটকে বসে থাকে। আজ বুধবার সন্ধ্যা সাতটায় কালিবাড়ি মোড় থেকে শুরু হয় এই যানজট। সেখান থেকে দীর্ঘ একঘন্টা পর মানুষ পরিত্রান পায়।যানজটে আটকে থাকা শাহজাহান ও অসীত বাবু নামে দুজন বলেন সকল যানজটের মূল কারণ অটোরিকশা। শহরে হাজার হাজার অটোরিকশা চলে।
যা ট্রাফিকরাও নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না। ওরা যেখানে খুশি সেখানে থামায় এমনকি একটা আরেকটাকে ওভারটেক করতে গিয়ে রাস্তার মাঝখান দিয়ে চালায়। যে কারনে অন্য একটির সাথে ধাক্কাও লাগে অহর্নিশ। এতে প্রতিনিয়ত দুর্ঘটনার শিকারও হচ্ছে সাধারণ মানুষ।
শহরে আনুমানিক ১০/১৫ হাজারের নীচে হবেনা চলাচলরত অটোরিকশার সংখ্যা। সবগুলো লাইসেন্সবিহীন। এদিকে রফিক নামের এক অটোরিকশা চালক জানায়, এগুলোর মূল কারণ সড়কে চাঁদা। প্রতিদিন ১০ টাকা করে চাঁদা দিলেই ঘুরতে পারে। আমরা যারা কষ্ট করে লাইসেন্স করেছি তারা হুদাই (এমনি এমনি) করেছি।
এসব কিছুই লাগে না ওদের। আমাদের টাকাগুলো শুধু শুধু খরচ। শহরে দুই হাজার অটোরিকশা চলারই অবস্থা নাই সেখানে বোধহয় ২০ হাজার চলে। আমরা ভালো করেই চালাই নিয়ম মেনে লাইসেন্স নাই যারা তারাই যেভাবে খুশি চালায়। এক্সিডেন্টও করে যখন তখন।
পথচারী নাজনীন সুলতানা জানান, অটোরিকশা তো হাজারে হাজার আছেই। এর উপর রয়েছে ট্রাক, ট্রাক্ট্রর চলাচল অবিরত। দিন রাত তারা চলেই যাচ্ছে। তার উপর মেইন সড়কের বিভিন্ন রড সিমেন্টের দোকান সহ নানা দোকানে মাল উঠানামা করে দিনের পর দিন মানুষের পথ চলায় বিঘ্ন ঘটায়। এগুলো দেখার কেউ নেই।
এদিকে পৌরসভার মেয়র নজরুল ইসলাম খান জানান, আমাদের দেয়া লাইসেন্স রয়েছে দুই শিফটে ১১০০ করে ২২০০ টি অটোর। সকালে ১১০০ চলবে বিকালে অন্য ১১০০ চলবে। বাড়তি একটা লাইসেন্সও দেয়া হয় নি। তবুও যানজট কেন বাড়ছে এ নিয়ে তিনিও শংকিত।