Friday, March 29, 2024
মূলপাতাঅন্যান্যমদনে খাল খননে অনিয়ম

মদনে খাল খননে অনিয়ম

খরা মৌসুমে খালে পানি সংরক্ষণ এবং কৃষি জমিতে পানি সেচের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) আওতায় নেত্রকোনার মদন উপজেলার আল হেলালী খালের খনন কাজ চলছে। নিয়ম অনুযায়ী কাজ না হওয়ায় খনন কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান দায়সারা গুছের কাজ করে নদীর পানি খালে ছেড়ে দেওয়ায় স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। খননের শুরুতেই খালের পাড়ে মাটি এলোমেলো ভাবে ফেলে রাখায় সামান্য বৃষ্টিতেই মাটি ধ্বসে খাল ভরাটের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। এ ব্যাপারে এলকাবাসী অভিযোগ তুললে ঠিকাদারের লোকজন পাড়ের মাটি সরিয়ে পুনঃরায় খাল খনন করার আশ^াস দিলেও তড়িগড়ি করে নামেমাত্র খনন কাজ সম্পন্ন করে নদীর পানি খালে ছেড়ে দেয়। এতে বারবুড়ি গ্রামের লোকজন বুধবার(৩১ মার্চ) বাধা দিলেও বৃহস্পতিবার সকালে তা খুলে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্টানের লোকজন। খনন কাজে এমন অনিয়মের ফলে সরকারের এই মহতি উদ্যেগের সুফলতা থেকে জনগণ বঞ্চিত হবে।

জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) সূত্রে জানা যায় , ৬৪ জেলার অভ্যন্তরস্থ্য ছোট নদী,খাল এবং জলাশয় পুনঃখনন প্রকল্পের (প্রথম পর্যায়) আওতায় নেত্রকোনার মদন উপজেলার আল হেলালী খালের খনন কাজ চলছে। খনন কাজ বাস্তাবায়ন করছেন ময়মনসিংহের তাজওয়ার ট্রেড সিস্টেম লিমিটেড- এম রহমান (জেভি) এন্টারপ্রাইজ। কাজের বরাদ্দ ৩ কোটি ২ লাখ ১৮ হাজার ৩১৯ টাকা। খনন করা হবে দৈর্ঘ্য ৫ হাজার ৫০০ মিটার, প্রস্থ ১০ মিটার, স্থানভেদে সাবেক গভীরতা ০ থেকে ১ মিটার বা তার কম এবং ওপরের দিকে গড় ১৮-২০ মিটার।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী খনন কাজ করছে না ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। পান্নি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) এর লোকজন সঠিক সময়ে তা পরিদর্শন করছেন না। খননের মাটি উত্তোলন করে দূরে না সরিয়ে পাড়েই রেখে দেয়ায় সামান্য বৃষ্টি হতে না হতেই মাটি ধ্বসে খাল পুনঃরায় ভরাট হচ্ছে। বারবুড়ি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে গ্রামের মধ্যেস্থল পর্যন্ত প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গা খনন না করে পাড়ে কিছু মাটি দিয়ে তরিগরি করে বাধ কেটে খালের ভিতরে নদীর পানি ছেড়ে দিয়েছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার সরজমিন বারবুড়ি গ্রামের পিছনে গেলে দেখা যায়, খননে উত্তোলনের মাটি দূরে না সরিয়ে তা পাড়েই রাখা হয়েছে। সামান্য বৃষ্টি হতে না হতেই মাটি ধ্বসে যাচ্ছে। এ সময় বারবুড়ি গ্রামের কৃষক বাবু চান, আঙ্গুর মিয়া, রেহান মিয়া সহ অনেকেই জানান, শুরু থেতেই খনন কাজে অনিয়ম হচ্ছে। যারা কাজ করছে তারা বলেছিল পাড়ের মাটি দূরে সরিয়ে আরো গভীর করা হবে। কিন্ত তা না করে তড়িগড়ি করে নদীর পানি খালে ছেড়ে দিয়েছে। বাড়বুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছন থেকে গ্রামের মধ্যেস্থল পর্যন্ত কোনো রকম খনন কাজ করেনি শুধু দু-পাড়ে মাটি সামান্য দিয়েছে। যেভাবে খনন কাজ করছে আমাদের উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশী হবে।

প্রকল্পে দায়িত্বে থাকা ময়মনসিংহের তাজওয়ার ট্রেড সিস্টেম লিমিটেড- এম রহমান (জেভি) এন্টারপ্রাইজের মনজু মিয়া জানান, যে স্থানের মাটি ধ্বসে গেছে এগুলো আমরা মেরামত করে দিব। বারবুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পিছনের অংশ ভেকু দিয়ে মাটি কাটতে সমস্যা হয় তাই শ্রমিক দিয়ে মাটি কাটা হবে।

নেত্রকোনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য-সহকারী এনামূল হক জানান, কে বা কাহার নদীর পানি খালে ছেড়ে দিয়েছে তা আমার জানা নেই। তবে সেচ যন্ত্র দিয়ে পানি শুকিয়ে খাল খনন করতে হবে।

নেত্রকোনার পানি উন্নয়ন নির্বাহী প্রকৌশলী এম এল সৈকত জানান, খনন কাজে এক ইঞ্চি মাটি কম কাটার সুযোগ নেই । শতভাগ মাটি কাটতে হবে। দু-পাড়ের মাটি অনেক দূরে সরিয়ে নিতে হবে।

এই বিভাগের আরও সংবাদ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.

সর্বশেষ সংবাদ

Recent Comments